নানান আনন্দ উল্লাসের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো এবারের ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে 'নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান' প্রতিপাদ্যে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হয়। এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীসহ হাজার হাজার মানুষ।
আজ সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নেতৃত্বে এ আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় অংশ নেন নানান বয়সি মানুষ। তবে শুধু দেশের মানুষ নয়, নেচে-গেয়ে উৎসবে মেতে উঠেন বিদেশি শিক্ষার্থী ও পর্যটকরাও। জাপান, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানিসহ নানা দেশের পর্যটক ও শিক্ষার্থীরাও। কেউ গলায় বাঁশি ঝুলিয়ে বাজান, কেউ আবার লাল-সাদা শাড়ি-পাঞ্জাবিতে বাঙালির সাজে ঢুকে পড়েন শোভাযাত্রায়।
এতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সংস্কৃতিকর্মী ও সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী পোশাকে অংশ নেন কৃষক ও রিকশাচালক প্রতিনিধিরা। তারা ‘নববর্ষ হোক সবার’সহ নানা বার্তা সংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন।
শোভাযাত্রায় মুখোশ, পাপেট, বাঁশের তৈরি বাঘ, পাখি, মাছসহ নানা বিশালাকৃতির শিল্পকর্মের মাধ্যমে তুলে ধরা হয় গ্রামীণ জীবন ও প্রকৃতিনির্ভর মানুষের সংগ্রামের রূপ। তবে একটি বিশেষ মুখাবয়ব সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সেটি হচ্ছে ফ্যাসিস্টের মুখাবয়ব।
এবারের শোভাযাত্রার প্রধান আকর্ষণ ছিল 'ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি' মোটিফ, যা বাংলাদেশের দীর্ঘস্থায়ী ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রতীকী চিত্রণ।
এ আগে শনিবার ভোরে অজ্ঞাতদুর্বৃত্তরা বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি এই মুখোশটি জ্বালিয়ে দিলে দ্রুত সময়ে ককশিটের ওপর পুনরায় এটি তৈরি করা হয়।
শোভাযাত্রায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাঈদের স্মরণে তার প্রতীকী পানির বোতল স্থান পায়, যদিও প্রাথমিকভাবে তার প্রতীকী মোটিফ রাখার পরিকল্পনা পরিবারের অনুরোধে বাতিল করা হয়।