শিরোনাম
◈ বন্ধ করা হলো ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি, এনবিআরের প্রজ্ঞাপন জারি ◈ আজ থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৪ টাকা ও পাম তেলের দাম ১২ টাকা বাড়লো ◈ ইসরায়েলের নতুন প্রস্তাব গাজায় যুদ্ধবিরতির, যা বলছে হামাস ◈ কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবি, তালা ভেঙে হলে শিক্ষার্থীরা (ভিডিও) ◈ গুলশানের ফ্ল্যাট দখল : মামলার আসামি টিউলিপসহ ৩ ◈ ভারতের ‌ক্রিকেট দল আস‌ছে বাংলা‌দে‌শে, খেল‌বে ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ◈ আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণ নীতিমালা ঘোষণা করলো সরকার ◈ সাগর-রুনি হত্যা: ১১৭ বারের মতো পেছাল প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ◈ ডাকসু নির্বাচনের টাইমলাইন ঘোষণা ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক বুধবার

প্রকাশিত : ১৪ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:৫৭ রাত
আপডেট : ১৫ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

১৮ হাজার পুলিশ থাকবে আনন্দ শোভাযাত্রার নিরাপত্তায়, সার্বক্ষণিক মনিটরিং চলবে ড্রোন দিয়ে

বাঙালির প্রাণের নববর্ষের উৎসবের টানে নগরবাসী সমবেত হবেন রাজধানীর রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, জাতীয় সংসদ ভবন রবীন্দ্র সরোবর ও হাতিরঝিল এলাকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানস্থলে। এছাড়া সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। ফলে দিনটি নির্বিঘ্নে উদযাপনে সারা দেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রক্ষাকারী সংস্থাগুলো।

পুলিশ সদরদফতর সূত্র জানা গেছে, পহেলা বৈশাখ উদযাপনে সারা দেশে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের প্রতিটি ইউনিটকে ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেকোনও ধরনের অপ্রীতিকর ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতিটি থানা পর্যায়ে ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়নে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের প্রধান আকর্ষণ ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’কে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ ডিএমপি জানিয়েছে, বাংলা বর্ষবরণ উৎসবকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরকে ২১টি সেক্টরে ভাগ করে পর্যাপ্ত সংখ্যক ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়ন করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাস্থল ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং করা হবে। রমনা পার্ক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ মোট ২১টি স্থানে ব্যারিকেট থাকবে।

প্রতিটি অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের মুখে আর্চওয়ে ও হ্যান্ড মেটাল দিয়ে তল্লাশি করা হবে। অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়া ও শোভাযাত্রার রোডগুলোতে সিসি ক্যামেরাসহ স্থির ও ভিডিও ক্যামেরা দ্বারা ও ড্রোনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে। 

অনুষ্ঠানের চারপাশে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফুট পেট্রোল থাকবে উল্লেখ করে ডিএমপি আরও জানিয়েছে, সিটিটিসি, সোয়াট ছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণে পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। ইভটিজিং ও ছিনতাই প্রতিরোধ সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ দল মোতায়েন থাকবে। রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টার’ স্থাপন থাকবে। সেখানে মাইকিং ব্যবস্থা থাকবে। 

গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও সাইবার পেট্রোলিং নববর্ষ কেন্দ্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার রোধে মনিটরিং করা হচ্ছে ডিএমপি থেকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি যানবাহন চলাচল ও ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ নানান পদেক্ষেপ গ্রহণ করছে।

এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া) ম এনামুল হক সাগর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সারা দেশে পহেলা বৈশাখ নির্বিঘ্নে উদযাপনে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সাজানো হয়েছে। পুলিশের প্রতিটি ইউনিটকে ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সারা দেশে বিশেষ করে বড় শহরগুলিতে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। ঢাকা এবং দেশের অন্যান্য স্থানে ইতোমধ্যেই ইউনিফর্ম এবং সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে নববর্ষের ওই উদযাপনকে ঘিরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, এলিট ফোর্স র‍্যাব সারা দেশে নিরাপত্তার পাশাপাশি বাড়িয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। সংস্থাটি জানিয়েছে, ঢাকাসহ সারা দেশে মোটরসাইকেল পেট্রোল, গাড়ি পেট্রোল, চেকপোস্ট, অবজারভেশন টাওয়ার এবং গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে। বাংলা নববর্ষে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাব দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। নববর্ষের অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে সারা দেশে র‌্যাবের সব ব্যাটালিয়নগুলো নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় ২২৪টি পিকআপ টহল, ১২২টি মোটর সাইকেল টহলসহ সর্বমোট ৩৪৬টি টহল ও সাদা পোশাকে ৪১৩ জনসহ মোট ২ হাজার ৪৪৯ জন র‌্যাব সদস্য মোতায়েন রাখবে।

আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলোতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোনও উগ্রবাদী গোষ্ঠী, অন্যান্য নিষিদ্ধ সংগঠন এবং রাষ্ট্র ও সরকার-বিরোধী কুচক্রী মহল যাতে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে সে লক্ষ্যে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি যে কোনও নাশকতা বা হামলা মোকাবিলায় র‌্যাব স্পেশাল ফোর্স-এর কমান্ডো টিমকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, ‘পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান ঘিরে ঢাকাসহ সারা দেশে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। যে কোনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক অবস্থানে থাকবে র‌্যাব। আমরা সাইবার ওয়ার্ল্ডেও মনিটরিং করছি, যাতে সাইবার ওয়ার্ল্ডে এই অনুষ্ঠানের বিষয়ে কেউ অপপ্রচার চালাতে না পারে। পূর্ববর্তী যেকোনও বছরের তুলনায় এবারের সবগুলো অনুষ্ঠান নিরাপত্তার দিক দিয়ে বলেন, আনন্দ উৎসাহের দিক দিয়ে বলেন সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। একই ধারাবাহিকতায় আমরা নববর্ষের অনুষ্ঠানটিও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে পারবো বলে আশা করি।’

ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ‘নববর্ষ উদযাপনে নিরাপত্তার ব্যবস্থায় কোনও ঘাটতি নেই। ১৮ হাজার পুলিশ সদস্য এই পহেলা বৈশাখ-কেন্দ্রিক নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত থাকবে। সঙ্গে র‍্যাব আছে, বাংলাদেশ আর্মি ও এন্টি টেরোরিজম ইউনিটও থাকবে। অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা আমাদের সহযোগিতা করবে। ঢাকা মহানগরকে ২১টি সেক্টরে ভাগ করে পর্যাপ্ত সংখ্যক ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়ন করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাস্থল ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং করা হবে। রমনা পার্ক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ মোট ২১টি স্থানে ব্যারিকেট থাকবে।’

কমিশনার আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোথাও থেকে কোনও ঝুঁকি নেই। আশা করছি, আমরা সঠিকভাবে নিরাপত্তা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সহযোগিতা করবো এবং অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারবো।’

রমনার অনুষ্ঠানে আসতে ইচ্ছুক নগরবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘যারা নারী ও শিশু সঙ্গে নিয়ে আসবেন, তারা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ভিড় এড়িয়ে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করবেন এবং নির্ধারিত নারী ও শিশুদের জন্য যে প্রবেশ গেট করা হয়েছে, সেটি ব্যবহার করে বের হয়ে চলে যাবেন।’ উৎস: বাংলাট্রিবিউন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়