আওয়ামীপন্থী ৭২ আইনজীবীকে কারাগারে এবং মহিলা ও অসুস্থ বিবেচনায় ১১ জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ রোববার দুপুরে জামিন আবেদনের শুনানিতে এ আদেশ দেওয়া হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে হামলা, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে রোববার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালতে আওয়ামীপন্থী ৮৩ আইনজীবী জামিন আবেদন করেন।
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ সমর্থক ৮৩ জন আইনজীবী আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আসামিপক্ষ থেকে বলা হয়, তাঁরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। জামিন দিলে পলাতক হবেন না। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিন আবেদনের বিরোধিতা করা হয়। আসামিদের জামিন আবেদন নাকচ করে ৭২ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। অন্যদিকে জামিন পেয়েছেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আবু সাঈদ সাগর ও ১০ জন নারী আইনজীবী।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ৪ আগস্ট আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীদের ওপর হামলা, চেম্বার ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আওয়ামী লীগপন্থি ১৪৪ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী বাবু। এ ঘটনায় হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের জামিন নিয়েছিলেন ১১৫ জন। সোমবার অন্তর্বতীকালীন জামিনের মেয়াদ শেষ হবে।
কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন- ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান মানিক, গাজী শাহ আলম, মাহবুবুর রহমান, আবু সাইদ সাগর, আসাদুর রহমান রচি, সাইবার ট্রাইব্যুনালের পিপি নজরুল ইসলাম শামিম ও মোরশেদ হোসেন শাহীন, আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, ঢাকা মহানগর আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আব্দুল্লাহ আবু, আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বাদল, মো. সাইদুর রহমান মানিক, মো. মিজানুর রহমান মামুন, আব্দুর রহমান হাওলাদার, গাজী মো. শাহ আলম, আব্দুল বাতেন, মাহবুবুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার গোলাম কিবরিয়া জুবায়ের, মোহাম্মদ আনোয়ার শাহাদাৎ শাওন, মো. ফিরোজুর রহমান মন্টু ও মো. আসাদুজ্জামান খান রচি।
মামলার আসামি আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন বলেন, আমি আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মীর আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেছি। এ কারণে আমার বিরুদ্ধে এ মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি, এটা আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গত বছরের ৪ আগস্ট দুপুরে আসামিরা ঢাকা আইনজীবী সমিতির সামনে অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। তারা বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় ভুক্তভোগী আইনজীবী মামলা শুনানি শেষ করে ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে আসেন। তখন আসামি আনোয়ার শাহাদাত শাওন হেলমেট পরে পিস্তল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্র তাক করেন। উৎস: নিউজ২৪