শিরোনাম
◈ ব্যাংককে ইউনূস-মোদি বৈঠক নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি দিল্লি ◈ না খেয়ে থাকার শঙ্কা ও দুর্দশার মুখোমুখি রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ◈ সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক: তারেক রহমান (ভিডিও) ◈ ৩ বছরে ভারতে ১০০ বাঘ হত্যা ◈ ভারত সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করলো ইলন মাস্কের এক্স ◈ হামজা চৌধুরীর বার্সেলোনায় যোগদানের সম্ভাবনা ছিল, ব্রিটিশ গণমাধ্যম ◈ পাকিস্তান টানা দুই হারের পর নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়ের মুখ দেখলো ◈ কবে থেকে চালু হবে আগরতলা থেকে কলকাতা ভায়া বাংলাদেশ ট্রেন পরিষেবা? ◈ ড. ইউনূস ও মোদির মধ্যে ব্যাংককে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা কম, হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন  ◈ অভিনব কৌশলে প্রতারণার ফাঁদ, চার সদস্য গ্রেফতার

প্রকাশিত : ২১ মার্চ, ২০২৫, ১০:১৭ দুপুর
আপডেট : ২১ মার্চ, ২০২৫, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পাঁচ দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের পরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সচিব

পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার (বাঁয়ে) এবং পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ। ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর প্রায় দেড় দশক পর স্থবির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বিশেষ মনোযোগ দিয়ে আসছে পাকিস্তান। গত আগস্টের পর হুটহাট করেই সম্পর্ক জোরদারে বাংলাদেশ ততটা আগ্রহী ছিল না। সূত্র: প্রথম আলো 

কিন্তু ব্যবসা, বাণিজ্য আর বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংযুক্তিকে বিবেচনায় নিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগে সাড়া দিচ্ছে বাংলাদেশ। এরই অংশ হিসেবে আগামী মাসেই পাঁচ দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এবং পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বলেন, আগামী ১৭ এপ্রিল ঢাকায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক হবে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ বৈঠকে নিজ নিজ দেশের নেতৃত্ব দেবেন। এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ২২ এপ্রিল ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রসচিবের ঢাকা সফরের সব কর্মসূচি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দুজনেরই সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে।

জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন বলেন, আগামী ১৭ এপ্রিল ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচের সঙ্গে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক হতে যাচ্ছে। প্রায় ১৫ বছরের বিরতিতে অনুষ্ঠেয় এই বৈঠকে দুই দেশের সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। তিনি জানান, আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে সম্পর্কের নানা বিষয় আলোচনার সময় ঐতিহাসিক অনিষ্পন্ন বিষয়গুলোও আলোচনায় আসবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে নানা বিষয়ের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, আকাশপথে সংযুক্তি, প্রতিরক্ষা, কৃষি খাতে সহযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পেতে পারে। সাংস্কৃতিক বিনিময়ের লক্ষ্যে একটি বিশেষায়িত কর্মসূচির প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে পাকিস্তানকে। দুই দেশের সবশেষ সচিব পর্যায়ের বৈঠকটি ২০১০ সালের নভেম্বরে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ফলে ওই বৈঠকের ধারাবাহিকতায় প্রস্তাবিত কোনো সমঝোতা বা চুক্তি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এ বিষয়গুলো বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রসচিবের সভাপতিত্বে তার দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

দুই দেশের মধ্যে সরাসরি উড়োজাহাজ চলাচলের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এই বলেন, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। ভিসার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিরও ইঙ্গিত আছে। পাকিস্তানের একটি কম খরচের (লো কস্ট) বিমান সংস্থা ফ্লাই জিন্নাহ বাংলাদেশে যাত্রী পরিবহন শুরুর অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। বাংলাদেশ এরই মধ্যে ওই প্রতিষ্ঠানকে উড়োজাহাজ চলাচলের ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে। এখন পাকিস্তানের বিমান পরিচালনা সংস্থাটি জিএসএ চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

অনিষ্পন্ন সম্পর্কে জোর থাকবে ঢাকার

৫ আগস্টের পর থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার ওপর জোর দিচ্ছে পাকিস্তান। গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে এবং ডিসেম্বরে কায়রোতে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।

গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ মনে করে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া, যুদ্ধের জন্য ক্ষতিপূরণ, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, সম্পদের হিস্যা, ১৯৭০ সালে অবিভক্ত পাকিস্তানের ঘূর্ণিঝড়ের সময় দেওয়া বৈদেশিক সহায়তার পাওনা পরিশোধের মতো বিষয়গুলোর সুরাহা জরুরি।

সরকারের অবস্থানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জ্যেষ্ঠ একজন কূটনীতিক এই প্রতিবেদককে বলেন, গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়াসহ অমীমাংসিত বিষয়ের সুরাহা না করে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ আগ্রহী নয়।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস কায়রোতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে সাক্ষাতে এই অবস্থানই তুলে ধরেছেন। ১৯৭১ সালের অমীমাংসিত সমস্যাগুলো মীমাংসা করার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, ‘বিষয়গুলো বারবার আসছে। আসুন, আমরা সামনে এগিয়ে যেতে সেই বিষয়গুলোর ফয়সালা করি।’ তিনি বলেছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিষয়গুলো চিরতরে সুরাহা করে ফেলা ভালো হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়