মনিরুল ইসলাম : জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, নির্বাচন ও সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। নির্বাচনের যে টাইম-টেবিল তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত টাইম-টেবিল দেখিনি। ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন করার ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বার বার বলা হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে আশা করি খুব শিগগিরই এ ব্যাপারে (নির্বাচন) আরও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ আসবে।
আজ সোমবার সকালে সংসদ ভবনের এলডি হল থেকে ঐকমত্য কমিশনের সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।সংবাদ সম্মেলনে ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, সফররাজ হোসেন, এমদাদুল হক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, যেকোনো অবস্থাতেই আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী। আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে এই আলোচনা অগ্রসর হবে। সুপারিশের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের পাশাপাশি নাগরিকদের মতামত জানার জন্য খুব শিগগিরই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবস্থা করবো।
আলী রিয়াজ বলেন, আমরা মনে করি কেবলমাত্র রাজনৈতিক দল নয়, এ দেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের এই অধিকার আছে যে, এই সমস্ত সংস্কারের বিষয়ে তারা যেন সুস্পষ্ট মতামত দিতে পারেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশে যে সমস্ত প্রক্রিয়ায় সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে, সেটা আমরা বিবেচনায় রেখেছি। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে এবং নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে যে সমস্ত প্রস্তাব আমাদের দেয়া হয়েছে সেটা সংবিধান সংস্কার কমিশনের ক্ষেত্রে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসেছে, এর বাইরেও এসেছে, সেগুলো আমরা সন্নিবেশিত করার চেষ্টা করেছি। অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার করা যায়, এটা বাংলাদেশে হয়েছে। ফলে এটা সঠিক-বেঠিক, আমি একমত, আমি দ্বিমত হতে পারি। তবে বাংলাদেশে এটা অতীতে ঘটেছে যে-একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধনী হয়েছে। যা পরবর্তী সময়ে জাতীয় সংসদে সংশোধনী হিসেবে গৃহীত হয়েছে।
গণপরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘গণপরিষদের আলোচনা আছে, আপনার জানেন জাতীয় নাগরিক পার্টি খুব সুস্পষ্টভাবে বলেছে-তারা গণপরিষদ চায়। এই বাইরেও অনেক রাজনৈতিক শক্তি আছে, রাজনৈতিক দল যারা অতীতেও গণপরিষদের কথা বলেছে। কেবলমাত্র ৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতিতে নয়। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন যাবত যারা সংবিধান নিয়ে আলোচনা করে, রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলে, তারা কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কথা বলেছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্রুত আলোচনা শুরু করে স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি ‘জাতীয় সনদ’ তৈরি করতে চান উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর প্রতি দ্রুত মতামত জানাতে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই। এই প্রক্রিয়ার পরের ধাপ রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করছে। আমরা চাই-দ্রুত আলোচনা করতে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যেই ঐকমত্যে পৌঁছে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে।