নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নরওয়ের সাবেক উন্নয়ন ও পরিবেশমন্ত্রী এরিক সোলহেইমের নেতৃত্বে উন্নয়ন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের একটি প্রতিনিধি দল রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে সাক্ষাৎ করেন। বাংলাদেশ সামনের বছরগুলোতে জীবাশ্ম জ্বালানি সহজীকরণে আরও মনোনিবেশ করায় প্রতিনিধিদলটি নেপালে ক্ষুদ্র আকারের সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কার্বন মার্কেট, কৃষিবনায়ন এবং যৌথভাবে জলবিদ্যুৎ বিনিয়োগের সুযোগ অনুসন্ধানে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
ড. ইউনূস এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এখন দ্রুত বিকাশমান এসব খাতে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রস্তুত। এগুলো আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও কার্বন খাতে আমরা বড় ধরনের বিনিয়োগ চাই।
তিনি বলেন, নেপাল ও ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির জন্য ঢাকা ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু করেছে এবং তার সরকার ভারতের একটি সংকীর্ণ করিডোরের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আনতে দক্ষিণ এশিয়া গ্রিড স্থাপনের সুযোগগুলো অনুসন্ধান করতে আগ্রহী। এটি (নেপালের জলবিদ্যুৎ) একটি সম্পদ, যা অন্বেষণের অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু ডেলিভারি একটা সমস্যা বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।
জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এরিক সোলহেইম বলেন, বড় আকারের সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য বাংলাদেশে পর্যাপ্ত অব্যবহৃত জায়গার অভাব রয়েছে, যা চীন ও এশিয়ার অন্যান্য দেশের আছে। তবে তিনি বলেন, ছোট আকারের সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ একটি উপযুক্ত জায়গা হতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তার সরকার সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে এবং ইতোমধ্যে তিনি চীনের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে সৌর প্যানেল উৎপাদন কারখানা স্থানান্তরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
চীনের বেশ কয়েকটি সৌর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ধনী পশ্চিমা দেশগুলোতে তাদের পণ্য রফতানির জন্য এখানে কারখানা স্থাপনের সুযোগ খুঁজতে বাংলাদেশ সফর করেছে।
কার্বন বাণিজ্য ও জলবায়ু বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান প্রোক্লিমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাভিন কুমার কান্দাসামি বলেন, শ্রীলঙ্কার ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মতো কার্বন বাণিজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ সহজেই কোটি কোটি ডলার আয় করতে পারে।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ কার্বন বাজার অনুসন্ধানে গভীরভাবে আগ্রহী, কারণ এটি লাখ লাখ উপার্জনে সহায়তা করবে এবং একইসঙ্গে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন রক্ষার প্রচেষ্টায় সহায়তা করবে। ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ও সোলহেইমের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা সংকট এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়েও আলোচনা করেন।