পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সৃষ্ট কুখ্যাত নির্যাযতনকেন্দ্র ‘আয়নাঘর’ আজ বুধবার পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।‘আয়নাঘর’-মিলেছে নির্যাতনের নানা উপকরণ। এ ছাড়া ‘আয়নাঘর’-এর দেয়ালে লেখা রয়েছে নির্যাতিতদের নানা কথাও।
‘আয়নাঘর’-এর একটি সেলের দেয়ালে লেখা রয়েছে, ‘লা ইলাহ ইল্লাহ আন্তা সোবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনহাশ জোয়ালেমিন’। অপর এক সেলের দেয়ালে ওপর-নিচ করে রোমান হরফে তিনটি নম্বর লেখা রয়েছে। এগুলো হলো ‘১৬৩, ১৫০, ১১৩’।
কুখ্যাত টর্চারসেল ‘আয়নাঘর’-এর অপর সেলের দেয়ালে রোমান হরফে রয়েছে ‘জেড ১৭৪’। আরেক টর্চার চেয়ালের কালো রঙের দেয়ালে লেখা রয়েছে অনেক কথাই। যার অধিকাংশই অস্পষ্ট। এ দেয়ালে রোমান হরফে লেখা রয়েছে, ‘আই লাভ মাই ফ্যামিলি’। এ ছাড়া রোমান হরফে ‘১২৩০ দিন’ লেখা রয়েছে। এর নিচে বাংলায় ওপর-নিচ করে দুটি নাম লেখা রয়েছে। একটি নাম মাসুদ, আরেকটি ইব্রাহিম।
প্রধান উপদেষ্টা আজ প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেল এবং র্যাব-২-এর সিপিসি-৩-এর ভেতরের সেলগুলো পরিদর্শন করেন।এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।এ ছাড়া দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধি এবং আয়নাঘরে গুম হওয়া ভুক্তভোগীদের কয়েকজন তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করে প্রধান উপদেষ্টা উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা সবাই সঙ্গে ছিলেন, কাজেই আমার আর নতুন করে কিছু বলতে হবে না। আপনারা সবই দেখেছেন। এক কথায় যদি এর বর্ণনা দিতে হয় তবে বলতে হয় এক বীভৎস দৃশ্য। মানুষের মনুষ্যত্ব বোধ বলে যেটা আছে সেটাকে বহু গভীরে নিয়ে গেছে নিশ্চিহ্ন করার জন্য। নৃশংস প্রতিটি জিনিসি।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের বিনা কারণে, বিনা দোষে উঠিয়ে আনা হতো। সন্ত্রাসী, জঙ্গি বলে এখানে ঢুকিয়ে রাখা হতো।’
তিনি বলেন, ‘এই রকম টর্চারসেল (নির্যাতনকেন্দ্র) সারাদেশেজুড়ে আছে। ধারণা ছিল এখানে কয়েকটা আছে। এখন শুনছি বিভিন্ন ভার্সনে (সংস্করণে) সারাদেশজুড়ে আছে। সংখ্যাও নিরূপণ করা যায়নি।’
আপনার মতামত লিখুন :