শিরোনাম
◈ ধানমন্ডিতে বাসায় কাজের বুয়ার পরিচয়ে চাকরি নিয়ে দুর্ধর্ষ চুরি ◈ রোজায় নয়, গ্রীষ্মে লোডশেডিং হতে পারে : বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ◈ পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে : তারেক রহমান  ◈ আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম শুরুর প্রথম দিন জমা পড়ল ১২০ আবেদন ◈ প্রধান বিচারপতি নিয়োগে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সীমিত করতে সংবিধান সংশোধনের সুপারিশ ◈ বিপিএলে ফাইনালের টিকিট কে পাবে? খুলনা না চিটাগং, জানা যাবে আজ রাতে ◈ শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কী বলছে আওয়ামী লীগ? ◈ বাসিন্দাদের সরিয়ে গাজার মালিকানা নিতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প ◈ ঢাকায় বাড়ছে অপরাধ, জড়িতদের অধিকাংশ কিশোর ◈ যেকারনে বাংলাদেশের সঙ্গে ১৭৫ কি.মি. অংশে বেড়া নির্মাণ বাস্তবসম্মত নয়, জানাল ভারত

প্রকাশিত : ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০২:৫৯ দুপুর
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৭:৫১ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পরিবর্তন হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা, বাদ যাচ্ছে শেখ মুজিবের নাম

মুক্তিযুদ্ধ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধন করে এসব সংজ্ঞা বদলানো হবে। 

সংজ্ঞা বদলে গেলে মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বাদ পড়বে।

মুক্তিযুদ্ধের নতুন সংজ্ঞা বলা হয়েছে, '১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ২৬ মার্চ হইতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার আকাঙ্খায় হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী এবং তাহাদের সহযোগী রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস, মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম এবং দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ।'

মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী, যারা সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়নি তাদের মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী হিসেবে রাখা হবে। 

সংশোধিত অধ্যাদেশের খসড়ায় যারা বিদেশে থেকে যুদ্ধের পরে জনমত গঠন করেছেন, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী-দূত, মুজিবনগর সরকারে সম্পৃক্ত এমএনএ এবং যারা পরবর্তীতে গণপরিষেদের সদস্য হিসেবে গণ্য হয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলা বেতর কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলী এবং দেশ ও দেশের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশি সাংবাদিক এবং স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সব খেলোয়াড়দের মুক্তিযুদ্ধের 'সহযোগী' হিসেবে রাখা হয়েছে।

এক্ষেত্রে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়ে এর আগে যারা বীর মুক্তিযোদ্ধার সনদ পেয়েছেন, তাদের সনদ বাতিল হয়ে যাবে। তবে তাদের বিষয়ে নতুন করে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এখনো সেই সিদ্ধান্ত নেয়নি।

আগের আইন অনুযায়ী পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দখলদার কর্তৃক নির্যাতিতা সকল নারীকে বীরঙ্গনা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। এর সঙ্গে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত নির্যাতিতার ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত বয়সসীমা প্রযোজ্য ছিল না। তবে নতুন খসড়ায় বীরঙ্গনাদের জন্য বয়সসীমার শর্ত প্রযোজ্য রাখা হয়েছে।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সুপারিশ অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধার ন্যূনতম বয়স ১২ বছর ৬ মাস নির্ধারণ করে ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি সংশোধিত পরিপত্র জারি করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সেই হিসেবে ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর যেসব মুক্তিযোদ্ধার বয়স ন্যূনতম ১২ বছর ৬ মাস ছিল, তাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, জামুকা আইন সংশোধনের পর সর্বনিম্ন কত বছর বয়সে বীর মুক্তিযোদ্ধা হওয়া যাবে তা সংশোধান করা হবে। 

মুক্তিযুদ্ধের সংজ্ঞা থেকে শুধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে এই সংজ্ঞায় থাকা সংগঠন, দল ও গোষ্ঠীর নাম ঠিক রেখে সেখানে শুধু 'দালাল' শব্দটি যোগ করা হয়েছে।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই খসড়ার ওপর মতামত জানাতে পারবেন জনসাধারণ।

মুক্তিযুদ্ধে বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পরিবর্তন হলে কয়েক হাজার মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ পড়বেন।

বর্তমান ও সংশোধিত সংজ্ঞা :  বর্তমান আইনে বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় বলা আছে, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণায় সাড়া দিয়া যাঁহারা দেশের অভ্যন্তরে গ্রামে-গঞ্জে যুদ্ধের প্রস্তুতি ও অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করিয়াছেন এবং ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ মার্চ হইতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হইয়া দখলদার ও হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনী...।' মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হয়েছিল সেসব দল, সংগঠন ও গোষ্ঠীর নাম সংশোধিত খসড়াও ঠিক রাখা হয়েছে।

আগের সংজ্ঞায় সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেননি এমন ৮ ধরনের ব্যক্তি ও পেশাজীবীদের বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। এরমধ্যে ভারতে গিয়ে যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, যারা বিদেশে থেকে যুদ্ধের ওপর জনমত গঠন করেছেন, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী-দূত, মুজিবনগর সরকারে সম্পৃক্ত এমএনএ এবং যারা পরবর্তীতে গণপরিষেদের সদস্য হিসেবে গণ্য হয়েছিলেন, বীরঙ্গনা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলী এবং দেশ ও দেশের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশি সাংবাদিক, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সব খেলোয়াড়, আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া মেডিকেল দলের সব সদস্যদের বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য করা হয়েছিল।

আর এখন মুক্তিযুদ্ধের সহযোগীদের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, যারা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে দেশের অভ্যন্তরে বা প্রবাসে অবস্থান করে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দীপিত করা এবং মুক্তিযুদ্ধকে বেগবান ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনকে ত্বরান্বিত করার প্রয়াসে সংগঠকের ভূমিকা পালন, বিশ্বজনমত গঠন, কূটনৈতিক সমর্থন অর্জন এবং মনস্তাত্বিক শক্তি অর্জনের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের যেসব নাগরিক প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা করেছেন। উৎস: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড ও আজকের পত্রিকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়