শিরোনাম
◈ বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন শেখ হাসিনা: আনন্দবাজারের প্রতিবেদন ◈ ‘বঙ্গবন্ধু রেল সেতু’র নাম পরিবর্তন ◈ হাসান আরিফের মৃত্যুতে উপদেষ্টা পরিষদের শোক ◈ গত ১৫ বছর বাংলাদেশের গণমাধ্যম অনেক ক্ষেত্রে তাঁবেদারি করেছে : প্রেস সচিব  ◈ উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ ভাতা বৃদ্ধির দাবীতে শাহবাগে সড়ক অবরোধ করেছেন চিকিৎসকরা ◈ রাজধানীর যেসব সড়ক কাল বন্ধ থাকবে, বিকল্প পথে চলার পরামর্শ ◈ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রোহিঙ্গাদের ফেরাতে যে কৌশলের কথা জানালেন ◈ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি নিয়ে যা বললেন চিফ প্রসিকিউটর (ভিডিও) ◈ রাখাইন রাজ্যের মিলিটারি সদরদপ্তর আরাকান আর্মির দখলে, সতর্ক উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত

প্রকাশিত : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:৫৭ বিকাল
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে

বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে

মহসিন কবির: আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে দায়ের করা রাজনৈতিক তথা গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে নির্বাচনের আগে-পরে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করা হচ্ছে।

এসব মামলার তালিকা চেয়ে জেলা ও মহানগরের পাবলিক প্রসিকিউটর বরাবর চিঠি দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। মামলার পূর্ণাঙ্গ তথ্য ও বর্তমান অবস্থা জানতে চাওয়া হয়েছে। চিঠিতে বাদীর বিষয়ে তথ্য দিতে বলা হয়েছে।

গত ২ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ করে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও অন্যদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা করা হয়; যা গায়েবি মামলা নামে পরিচিত। এসব মামলার সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তথ্য না থাকায় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ছক আকারে মামলার তালিকা পাঠাতে হবে। তাতে মামলার বাদীর নাম-পরিচিতির পাশাপাশি বর্তমান অবস্থা এবং মামলা তদন্তাধীন না বিচারাধীন, সে বিষয়ে তথ্য থাকতে হবে।

মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগের (জিপি-পিপি শাখা) উপ-সলিসিটর সানা মো. মাহরুফ হোসাইন গতকাল গণমাধ্যমকে বলেছেন, সব জায়গা থেকে মেইলের মাধ্যমে মামলার তালিকা পাঠাচ্ছে। মেইলগুলো চেক করে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা হবে।

এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিগত আওয়ামী স্বৈরাচারের সময় প্রায় ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। গায়েবি এসব মামলা পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করা হবে। 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবিলম্বে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মিথ্যা, গায়েবি ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। একই সাথে তিনি স্বৈরাচার বিরোধী সংগ্রামে নিহত ও আহত হয়েছেন তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন। 

গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন দমনে দায়েরকৃত প্রায় সব ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। উপদেষ্টা আরও জানান, সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ বাতিলের জন্য পরবর্তী উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। ফলে উক্ত আইনের অধীনে দায়েরকৃত সব স্পিচ-অফেন্সের মামলা প্রত্যাহার করা হবে। অংশীজনের সঙ্গে পরামর্শ করে এই আইন প্রত্যাহারে আমরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে সহায়তা করেছি। তবে হ্যাকিং ও সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মামলাগুলো চলমান থাকবে

জানা গেছে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নিয়ে রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। এ লক্ষ্যে গত সেপ্টেম্বর মাসে দুটি কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। এর মধ্যে একটি জেলা পর্যায়ের কমিটি, অন্যটি মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি। 

রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা পর্যায়ের কমিটির সভাপতি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করতে বলা হয়। জেলা কমিটির কাছ থেকে সুপারিশপ্রাপ্তির পর সেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং প্রত্যাহারযোগ্য মামলা চিহ্নিত করে তালিকা প্রস্তুত করা ও মামলা প্রত্যাহারের কার্যক্রম গ্রহণ করবে মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি।

রাজনৈতিক মামলার বিষয়ে আইনজ্ঞরা বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়েরে আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার করা হয়েছে। সুতরাং, সরকারের এ উদ্যোগ সম্ভাব্য অন্যায় সংশোধনের একটি উপায়। এটি স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং রাজনীতি ও আইনের শাসনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করবে।

তবে প্রক্রিয়াগুলোর স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা নিশ্চিত না হলে রাজনৈতিক হয়রানির আড়ালে প্রকৃত মামলাগুলো খারিজ হয়ে যেতে পারে, যার ফলে সত্যিকারের অপরাধীরা রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে পারে। তাই সরকারকে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে পাবলিক প্রসিকিউটরদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মামলাগুলো শক্তিশালী বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রত্যাহার করলে ক্ষমতার সম্ভাব্য অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়