শিরোনাম
◈ শিক্ষার্থীদের নতুন দল গঠনের ঘোষণা, রাজনীতিতে নানা আলোচনা ◈ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের সহযোদ্ধাদের হুমকি দিচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় খুনের ঘটনা ঘটাচ্ছে: আখতার হোসেন (ভিডিও) ◈ ভারতের সাম্ভালে মুসলিম সংসদ সদস্যকে বিদ্যুৎ চুরির জন্যে ২ কোটি টাকা জরিমানা ◈ কেউ যেন জাতির মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেতে না পারে: মির্জা ফখরুল (ভিডিও) ◈ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অসন্তোষ, ২০২৫ সালেই নির্বাচন চায় বিএনপি নেতারা ◈ পুলিশ ও জনগণ একে অপরের পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে কাজ করবে: সিটিটিসি প্রধান  ◈ বড়দিন উপলক্ষে নৌভ্রমণ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ৩৮ জনের প্রাণহানি ◈ বিএনপি অফিসে আ.লীগের হামলা, আহত ১০ ◈ ২৫ ক্যাডারের নতুন সংগঠন ◈ চলতি মাসের ২১ দিনে এক টাকাও রেমিট্যান্স আসেনি যে ১০ ব্যাংকে

প্রকাশিত : ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০১:৫৬ দুপুর
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গাবতলীতে টিকিট বিক্রি করতাম, চাকরি হারানোর পরে অনেক করুণ অবস্থা আমার : হরেন চন্দ্রনাথ(ভিডিও)

হরেন চন্দ্রনাথ

রায়ের পর আদালত প্রাঙ্গণে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন হরেন চন্দ্রনাথ। তিনি জানিয়েছেন, আমি চাকরি হারানোর পরে অনেক করুণ অবস্থা আমার। আমি চাকরি হারানোর পর গাবতলিতে গাবতলিতে শ্যামলী পরিবহনের টিকিট বিক্রি করেছি। করে আমি জীবিকা নির্বাহ করেছি। 

আমি দুই মেয়েকে লেখাপড়া শিখাইছি। দুই মেয়ে একাউন্টিং অনার্স ফার্স্ট ক্লাস, মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস। দুইজনকেই বিয়ে দিয়েছি। আমি এখন মোটামুটি আছি ভালো আমার কিচ্ছু নাই। এই কেস চালাতে গিয়ে আমার ফসলি সম্পত্তি চলে গেছে। ১২ থেকে ১৪ বিঘা। তারপরে গিয়েছে আপনার ভিটাবাড়ি ঘর। আমি ল্যান্ডলেস হোমলেস এখন। 

আমি এখন কিছুই আমার করার নাই। এখন ২০ লাখ টাকা আমাকে কেসের খরচ বাবদ দিয়েছে। আমি ব্যাংকে যখন চাকরি করি সোনালী ব্যাংক যাত্রাবাড়ি শাখায়। তখন কিছু টাকা দেওয়া হয় যাত্রাবাড়ি শাখা থেকে চলে যায় রেমিটেন্স লোকাল অফিস। লোকাল অফিস রিসিভ করে কাগজে কলমে একা রিসিভ করে দিয়ে দেয় আমার কোন দায়িত্ব থাকে না। সেই কেস জজ কোর্টে জজ কোর্টে জিতেছি। হাইকোর্টে জিততেছি। আজকে সুপ্রিম কোর্টেও জিতলাম। এরা আমার হয়রানি করেছে। আমার আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর ফারুককে ধন্যবাদ। আপনাদেরকেও সবাইকে মিডিয়াকে ধন্যবাদ। 

তাঁর আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, হরেন চন্দ্রনাথ সোনালী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা সাত বছর চাকরির মাথায় ১৯৮৫ সালে তার চাকরি যায়। মিস এপ্রোপ্রিয়েশন অফ মানি এই অপরাধে। হরেনচন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রথম সামরিক আদালতে মামলা হয়। সেই আদালতে সামারি ট্রায়াল। যেটাকে আমরা ট্রায়াল বলি না, ট্রায়ালে তার পাঁচ বছর সাজা হয়। এই সাজাকালীন সময়ে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। পুলিশ মামলা করে, ক্রিমিনাল অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের আন্ডারে। সেই মামলাটি তিনি জেলখানায় থেকে জবাব দিয়ে

সেই মামলাটি থেকে তিনি নিষ্কৃতি পান। সেই মামলা খারিজ হয়। এরপর সোনালী ব্যাংক উনার বিরুদ্ধে মানিসুট করে উনি জেলে থাকা অবস্থায়। সেই মানিসুট একতরফাভাবে রায় হয়ে উনাকে দোষী সাব্যস্ত করে। উনি জয়েন্ট ডিস্ট্রিক্ট জাজের আদালতে মিসকেস করে উনি প্রতিকার চান। জয়েন্ট ডিস্ট্রিক্ট জাজ আদালত উনিসহ আরো দুজনকে খালাস দেন। তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না পাওয়ার কারণে।

আইনজীবী বলেন, সোনালী ব্যাংক তার পিছু লেগেইছিল। হাইকোর্টে এসে রিভিশন ফাইল করে। অনেক বছর মামলা ওখানে পেন্ডিং থাকা থেকে পরবর্তীতে ওইটা দীর্ঘ শুনানির পর, দীর্ঘ রায়ের মাধ্যমে হাইকোর্ট ওনাকে খালাস দেন। এরপরও সোনালী ব্যাংক ওনাকে নিষ্কৃতি দেয়নি। মাত্র১৬ লাখ টাকা নয় জনকে একিউজ করে এই মামলা চলতেই থাকে।

মামলাটি হাইকোর্টের পরে আবার সোনালী ব্যাংক এপিলেট আদালতে আবার অ্যাপিল করে। শুধু অ্যাপিলই করেনি ,এপিল করে এই মামলার তদবির বিহীন রেখে দেয়। মামলা করতে গিয়ে ৪০ বছর সে আদালতের বারান্দায়। আপনারা অনেকে নিউজ করেছেন, ডকুমেন্ট করেছেন যেটি ওয়ার্ল্ড মিডিয়ায় এখন হরেন চন্দ্রনাথের কাহিনী।

আমরা আমাদের রুল অফ ল এর অনেক বাজে দিক নিয়ে আমরা অনেক আলোচনা করি। আমি মনে করি, আজকে আমরা ব্যাকে গেলাম রুল অফ ল আফোল্ড হয়েছে। কিভাবে হরেনচন্দ্রকে অহেতুক মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করে তার ৪০ বছর কেড়ে নেওয়ার কারণে মাননীয় অ্যাপিল বিভাগ ২০ লাখ টাকা সোনালী ব্যাংকে মামলার খরচ বাবত ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিন মাসের ভিতর।

ব্যারিস্টার ওমর ফারুক বলেন, আমি মনে করি, এটা যুগান্তকারী একটি পদক্ষেপ আমাদের দেশে ভুয়া মামলা বাজে মামলাএমনভাবে হচ্ছে- যেটি বন্ধ করার জন্য কষ্ট ইম্পোজ সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করবে বলে আমি মনে করি। এবং সোনালী ব্যাংকের উপর যে ২০ লাখ টাকা কষ্ট আজকে দেওয়া হয়েছে তিন মাসের মধ্যে হরেন চন্দ্র পাবে। এতে করে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো ভুয়া মামলা করার ক্ষেত্রে বিরত থাকবে বলে আমি আশা করি।

হরেন্দ্র চন্দ্রনাথের 40 বছরের যন্ত্রণার অবসান।  হরেন চন্দ্রনাথকে অহেতুক হয়রানি করার কারণে সোনালী ব্যাংকের উপর যে 20 লক্ষ টাকা কষ্ট। এটি যুগান্তকারী একটি রায় আমাদের রুল অফ ল আশা করি। বলছে, না কোন শাখাকে বলছে এটা সোনালী ব্যাংক দিবে যারা এখানে এপিলেন্ট ছিল তাদেরকেই তারাই দিবে সোনালী ব্যাংক একটা বডি। সোনালী ব্যাংক একটা একটা কোম্পানি। সোনালী ব্যাংক একটা বোর্ডের মাধ্যমে চলে, ওরাই দিবে। 

তিনি আরও বলেন, আমরা জুলাই বিপ্লবের পরে আমরা সবকিছু নতুন করে শুরু করতে চাই, আজকের রায়ের মাধ্যমে নতুন করে শুরু হবে আশা করি। কষ্ট ফলো দা ইভেন্ট ইংল্যান্ডে ডিসমিস করে দিয়েছে, ওদের আপিলটা খারিজ করে দিয়েছে আমি যেটি বলতে চাই উন্নত দেশে ইংল্যান্ডসহ কস্ট ফলো দ্য ইভেন্ট বলে। যে হারবে সে মামলার যাবতীয় খরচ বহন করবে। বাংলাদেশে এটার সূচনা হবে। আজকে রায়ের মাধ্যমে সূচনা হলো। আমি মনে করি, প্রত্যেকটা আদালতে প্রত্যেকটা কোর্ট কস্ট ফলো দ্য ইভেন্ট ফলো করলে মামলার ৫০ শতাংশ জট কমে যাবে।

আর আজকে হরেন চন্দ্র যে পক্ষে আপনারা যে ডকুমেন্টারি গুলো করেছেন তার জন্য তার পক্ষ হয়ে আমি আপনাদেরকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আর পাশাপাশি আপনারা যে ভালনারেবল লোকের পক্ষে- এখানে প্রিমাইজে যারা সাংবাদিকতা করেন তাদের যে দৌড়াদৌড়ি ছুটাছুটি সেটিও কিন্তু এটা উল্লেখযোগ্য। সেটাও উল্লেখ করতে হবে ,আশা করি আপনারা, ভবিষ্যতে আরো এই ধরনের মামলা আরো ভালনারেবল নিয়ে ডকুমেন্টারি করবেন- এগিয়ে আসবেন এই প্রত্যাশা আমি করছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়