বাসস: ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ.ফ.ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ইসলামের অনেক বড়-বড় জ্ঞানীরা ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ মদিনার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন। তাদের দেখানো পথে আলেম সমাজ এগিয়ে আসলে তারা পরনির্ভরশীলতা থেকে মুক্তি পাবেন। তাই ইমামদেরকে ইমামতির পাশাপাশি আত্মনির্ভরশীল হতে হবে।
চট্টগ্রামের পাহাড়তলীস্থ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে শুক্রবার ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে নিয়মিত ইমাম প্রশিক্ষণ কোর্সের ১১৬১-তম দলে প্রশিক্ষণার্থী ইমামদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ব্যবসা করা কোন দোষের না, কিন্তু মজুদদারি করে কৃত্রিম সংকট তৈরির মাধ্যমে পণ্যর দাম বাড়ানো, ওজনে কম দেয়া এগুলো হারাম। আলেম সমাজ ব্যবসায়ে জড়িত থাকলে জাতি হারাম থেকে বাঁচবে। কিছু-কিছু আলেম রয়েছে যারা সারাজীবন অথবা রমজান আসলে মানুষের কাছে গিয়ে হাত পাতে, যেটা অত্যন্ত অসম্মানের কাজ। হাদিয়া দেয়া হচ্ছে সুন্নত, কিন্তু নিজ থেকে চাওয়াটা অন্যায়। অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকায় কোন সম্মান নেই। নিজ উদ্যোগে হাঁস-মুরগী ও ছাগল পালন করে সেগুলো নিয়ে ব্যবসা করার মাধ্যমেই সস্মান অর্জন করা সম্ভব।
চট্টগ্রাম ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির উপ-পরিচালক মো. আশরাফুজ্জামানের সভাপতিত্বে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক বোরহান উদ্দীন মো. আবু আহসান বিশেষ অতিথি ছিলেন। এছাড়াও সেখানে বিভিন্ন আলেম, ওলামা ও প্রশিক্ষণার্থী ইমামগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি ড. খালিদ হোসেন বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ইমামদের বিশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াত, কোরআন তাফসীর, হাদিস, আকায়েদ, ফতোয়া, ইসলামে উত্তরাধিকার আইন ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে আসছে। ইমামগণ আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য ব্যবসায়ের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন তার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প রয়েছে।
তিনি বলেন, ব্যবসার জন্য আর্থিক সহায়তা লাগলে ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ক্ষুদ্র ঋণ সহায়তা প্রদান করা হবে। এখানে কোন সুদ নেই, শুধুমাত্র কিস্তি আকারে ধাপে-ধাপে পরিশোধ করবেন। তবে এ ঋণের শর্ত প্রশিক্ষিত ইমাম হতে হবে। প্রশিক্ষিত না হলে তাকে ঋণ দেয়া হবে না।
ড. খালিদ হোসেন বলেন, সারাদেশে ৮টা সেন্টারের মাধ্যমে ইমামদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ইমামগণ সমাজের চালিকা শক্তি। সবার সঙ্গে ইমামদের ভালো সর্ম্পক রয়েছে। অবক্ষয়মুক্ত সমাজ, ধর্মীয় অনুশাসন ও মানুষকে জনসম্পদে রুপান্তর করতে ইমামদের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। তাই ইমামগণ সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত হলে সমাজের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে।
আপনার মতামত লিখুন :