ঢাকার মোহাম্মদপুরে ‘প্রকাশ্যে জবাই’ শিরোনামে যে ভিডিওটি সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে, সেটি ‘জবাই করার ভিডিও নয়’ বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
আদাবর থানার ওসি মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া বৃহস্পতিবার বলেছেন, বুধবার থেকে ‘ভুল তথ্যসহ’ ফেইসবুকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে’ এক সপ্তাহ আগের ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেছেন গত বৃহস্পতিবার সকালে আদাবরের শেখেরটেক এলাকায় ‘কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের’ জেরে একজনকে ছুরিকাঘাত করে ফেলে রাখা হয় টিনের চালার উপর।
“পরে আহত ওই যুবকের গ্রুপের সদস্যরা তাকে চালা থেকে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি তখনকার। ওই সময়কার ধারণ করা একটি ভিডিওকে ‘প্রকাশ্যে জবাই’ বলে প্রচার করা হচ্ছে।
“সেখানে কাউকে জবাই করা হয়নি, কেউ মারাও যায়নি। বিভিন্ন ফেইসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।”
ওই ঘটনায় পুলিশের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি জানিয়ে ওসি ইমতিয়াজ বলেছেন আহত ছেলেটিও একটি ‘কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য।
“তার নামেও একাধিক মামলা রয়েছে, তাই কেউই থানায় অভিযোগ করেননি। বিষয়টি জানাজানি হলে আমরা আহত যুবকের খোঁজ করেছি। কিন্তু তাকে এখনও পাওয়া যায়নি।”
তবে হামলাকারীদের মধ্যে আল-আমিন ও রিয়া নামের দুইজন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে মোহাম্মদপুরের জেনিভা ক্যাম্প ভিত্তিক মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কয়েকটি পক্ষের মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। গত দুই মাসে সেখানে চারজন নিহতও হয়েছেন।
ওই ক্যাম্পসহ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে যৌথ বাহিনী ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গত কয়েক দিনে। যাদের মধ্যে ছাদের চালার ওপরে যুবককে ছুরিকাঘাত করা আট সদস্য রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন ওসি ইমতিয়াজ।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেছেন গ্রেপ্তারদের মধ্যে সাতজনের পরিচয় জানিয়েছে সেনাবাহিনীর বসিলা ক্যাম্প। তারা হলেন- আল-আমিন হোসেন (২৪), রিয়া আক্তার (২০), ইব্রাহীম হোসেন (২৩), সাগর মিয়া (২১), জয় আহমেদ (১৬), হুমায়ূন আহমেদ (৩৫), শফিক হোসেন (২২)। এদের মধ্যে আল-আমিন ও রিয়া আক্তার স্বামী-স্ত্রী।
“এই সাতজন আবার দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়া দুই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। এছাড়া ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতেও আল-আমিন ও রিয়াকে দেখা গেছে, যারা ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তারা দুজনেই শীর্ষ সন্ত্রাসী কব্জি কাটা আনোয়ার ওরফে শ্যুটার আনোয়ারের সহযোগী।“
পুলিশ বলছে, রিয়া সন্ত্রাসী শ্যুটার আনোয়ারের ‘মাদক বাণিজ্য দেখভাল করতেন’ এবং আল-আমিনের দায়িত্ব ছিল আনোয়ারের ‘অস্ত্র নিয়ে’।
রিয়া ও আমিন বর্তমানে জেল হাজতে আছে জানিয়ে ওসি ইমতিয়াজ বলেছেন পুলিশ এবং র্যাব তাদের বিষয়গুলো তদন্ত করছে। উৎস: বিডি২৪
আপনার মতামত লিখুন :