শিরোনাম
◈ ‘বঙ্গবন্ধু রেল সেতু’র নাম পরিবর্তন ◈ হাসান আরিফের মৃত্যুতে উপদেষ্টা পরিষদের শোক ◈ গত ১৫ বছর বাংলাদেশের গণমাধ্যম অনেক ক্ষেত্রে তাঁবেদারি করেছে : প্রেস সচিব  ◈ উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ ভাতা বৃদ্ধির দাবীতে শাহবাগে সড়ক অবরোধ করেছেন চিকিৎসকরা ◈ রাজধানীর যেসব সড়ক কাল বন্ধ থাকবে, বিকল্প পথে চলার পরামর্শ ◈ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রোহিঙ্গাদের ফেরাতে যে কৌশলের কথা জানালেন ◈ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি নিয়ে যা বললেন চিফ প্রসিকিউটর (ভিডিও) ◈ রাখাইন রাজ্যের মিলিটারি সদরদপ্তর আরাকান আর্মির দখলে, সতর্ক উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত ◈ লন্ডন-যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ কোটি টাকা পাচার : হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

প্রকাশিত : ২২ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:৩৫ রাত
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বঙ্গভবনের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা : সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ আহত ২০

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর পদত্যাগ দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধে। পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভকারীদের একটা অংশ পুলিশ সদস্যদের ওপর চড়াও হন। এতে অন্তত ১৫ পুলিশ সদস্য আহত হন। এর আগে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে অ্যাকশনে যায় পুলিশ। সে সময় আহত হন সাংবাদিকসহ পাঁচজন। এদিকে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাত সোয়া ৮টায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। আহতরা হলেন—শ্যামপুর বহুমুখী স্কূল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ বিশাল (২৪), কুমিল্লা ভিক্টরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী আরিফ খান (২০), হকার শফিকুল ইসলাম (৪৫), বার্তা ২৪-এর মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার রাজু আহমেদ (২৫) ও ভিডিও জার্নালিস্ট রিপন রেজা (২৮)। 

এদিকে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের হামলায় অন্তত ১৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। 

আহত সাংবাদিক রাজু আহমেদ বলেন, বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ চলছিল। রাতে বিক্ষোভের সময় ছাত্র-জনতা ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। এ সময় কে বা কারা সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। 

আহত শফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি হকারি করেন। বিকেল থেকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে ছিলেন। রাতে কে বা কারা সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে, এতে তাঁর পায়ে আঘাত লাগে।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক বলেন, বঙ্গভবনের সামনে থেকে পাঁচজন আহত হয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। এদের মধ্যে তিনজনের পায়ে আঘাত রয়েছে। সাউন্ডের কারণে দুজনের কানে আঘাত রয়েছে। জরুরি বিভাগ থেকে তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। 

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা চলছে। তাঁদের অবস্থা গুরুতর নয়।

রাত আনুমানিক ১০টার দিকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে তিনটা গাড়ি নিয়ে রাষ্ট্রপতির ভবনের দিকে যাওয়ার সময় ওয়ালটন মোড়ে একটা গাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় বেশ কয়েকজন পুলিশ কনস্টেবলসহ বেশ কয়েকজন হামলায় আহত হন। পরে আহত পুলিশ সদস্যরা মতিঝিল থানায় আশ্রয় নেয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, মঙ্গলবার রাত ৮টা ২০ মিনিটে বঙ্গভবনের সামনের ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন দুই থেকে আড়াইশ বিক্ষোভকারী। এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের সদস্যরা তাঁদের বাধা দেন। বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের সামলাতে ৮টা ২৫ মিনিটে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। এতে উত্তেজনা আরও বাড়ে। পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা।

এ সময় পুলিশের সদস্যরা ব্যারিকেডের ওপাশে বঙ্গভবনের দিকে সরে যান। এরপর বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা বঙ্গভবন ও রাজউকের মাঝ থেকে পুলিশের জলকামান সরিয়ে দেন। পরে বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান উপস্থিত সেনাসদস্যরা। রাত পৌনে ৯টায় সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বঙ্গভবন ঘিরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা কয়েকটি ব্যানারে বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা স্লোগান দেন, ‘এক দফা এক দাবি, চুপ্পু তুই কবে যাবি’। তাঁদের ভাষ্য, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন শপথ ভঙ্গ করেছেন। এখন তিনি রাষ্ট্রপতির পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।

‘রক্তিম জুলাই ২৪’–এর ব্যানারে বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের একজন সাইফুদ্দীন মুহাম্মদ এমদাদ বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের আড়াই মাস পর এসে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি। এমন মন্তব্য করে তিনি নৈতিকভাবে রাষ্ট্রপতির পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। এমন মন্তব্যের একমাত্র সমাধান হচ্ছে তাঁর পদত্যাগ। তিনি পদত্যাগ করলেই রাজপথ থেকে তাঁরা সরে যাবেন। না হলে রাজপথ ছাড়বেন না।

‘ছাত্রজনতার ঐক্যমঞ্চ’ ব্যানারে অবস্থানকারী ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে আরিফুল ইসলাম নামের একজন প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন শেখ হাসিনার ‘দোসর’। শেখ হাসিনাকে প্রত্যাবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি। এমন পরিস্থিতিতে যতক্ষণ পর্যন্ত সাহাবুদ্দিন পদত্যাগ না করবেন, ততক্ষণ তাঁরা রাজপথ ছাড়বেন না। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়