শিরোনাম
◈ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ: এবারও ডাক পায়নি জাপা ◈ নেতানিয়াহুর বাসভবনে ড্রোন হামলা, বেঁচে গেলেন অল্পের জন্য ◈ সিনওয়ারের মরদেহ নিয়ে ‘দর কষাকষি’ করতে চায় ইসরায়েল ◈ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন : সাড়ে চারশ কোটি টাকার ময়লা-বাণিজ্য হাত বদল ◈ এবার ভয়ংকর সেই আয়নাঘর নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন ◈ নির্বাচনের সময় নিয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন আসিফ নজরুল ◈ পরীক্ষা দিতে এসে আটক রাবি ছাত্রলীগের ২ নেতা ◈ বিশ্বের ১১০ কোটি তীব্র দরিদ্র মানুষের মধ্যে প্রায় ২৫ কোটি থাকেন ভারতেই!  ◈ দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাওয়ার পথে বরের ওপর সাবেক স্ত্রীর হামলা ◈ এবার শাহবাগে বিক্ষোভ করছে আউটসোর্সিং কর্মচারীরা : চাকরি জাতীয়করণের দাবি

প্রকাশিত : ০৮ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:১৯ রাত
আপডেট : ১৯ অক্টোবর, ২০২৪, ০৮:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডিবি হারুন কি দেশে না বিদেশে, যা জানা গেল

ডেস্ক রিপোর্ট : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। সরকার পতনের একে একে গ্রেফতার হতে থাকেন সরকারের এমপি-মন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা।

তবে তাদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদকে নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল। সরকার পতনের প্রথমদিকে তিনি আহত অবস্থায় গ্রেফতার হয়েছিলেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছিলো। এরপর গুঞ্জন ওঠে আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তবে এই ঘটনার পরপরই গণমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি দেশেই আছেন।

সম্প্রতি তাকে যুক্তরাষ্ট্রে দেখা গেছে বলে দাবি করেছে বিজনেস স্ট্যন্ডার্ড নামের একটি নিউজ পোর্টাল।  সুত্রটি আরো জানিয়েছে, নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটির কয়েকজনের সহায়তায় তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন  এবং সেখানকার একটি ভবনের সম্মেলনকক্ষে হারুন অর রশিদ বসে রয়েছেন- এমন একটি ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

এদিকে গত দুদিন আগেই সংবাদ সম্মেলনে ডিবি হারুনের বিষয়ে কথা বলেছিলেন র‌্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস। ওবায়দুল কাদেরসহ  আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট ব্যাক্তিদের গ্রেফতার  , সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা হারুন-অর-রশীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, র‌্যাব এরই মধ্যে অনেক হেভিওয়েটকে গ্রেপ্তার করেছে। তথ্য পেলে বাকিদেরও গ্রেফতার করা হবে।

তবে সর্বশেষ সূত্রটি বলছে, তিনি সেপ্টেম্বরের শেষের দিকেই প্রশাসনকে ম্যানেজ  করে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। ২০০৬ সালে ডিভি লটারি পেয়ে তার স্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পান। সে সূত্রে তারা নিয়মিত যুক্তরাষ্ট্রে যাতায়াত করতেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা থাকায় গণঅভ্যুত্থানের পর হারুন অর রশিদ নিউইয়র্ক স্টেটের লং আইল্যান্ডে অবস্থান করছেন।

এর আগে ৫ আগস্টের পর একটি সূত্র দাবি করেছিল, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পালানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু মার্কিন দূতাবাস তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। পুলিশ বিশেষ অস্ত্র ও কৌশল বাহিনীর (সোয়াট) গাড়িতে তাকে একটি মিরপুরের জায়গায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে জনতা তাকে চিনে ফেলে এবং মারধর করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তবে ওই তারিখের পর থেকে তার অবস্থানের বিষয়ে আর কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।

২০১১ সালে জাতীয় সংসদের সামনে এক মিছিলে তৎকালীন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুককে মারধরের ঘটনায় প্রথম আলোচনায় আসেন হারুন। এরপর সবসয়ই তিনি আলোচনায় ছিলেন।

সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে রাখা এবং তাদের খাবার খাওয়ানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার মুখে পড়েন হারুন। তাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ানো হয় বলেও অধিযোগ আছে।

৫ আগষ্টের পরিনতি ছিলো হারুনের কল্পনার বাইরে :

৫ আগস্ট সোমবার ছাত্র-জনতার ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণার দিন অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান। আগের দিন রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, 'আর এক বিন্দু ছাড় দেওয়া হবে না। পুলিশ হত্যাকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।'

সেদিন সকাল থেকেই সচিবালয়ের বিপরীতের সেন্ট্রাল কমান্ড ও কন্ট্রোল ইউনিটে চলে যান। সেখানে বসেই রাজধানীর কয়েকশ পয়েন্টের সিসিটিভি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল। তিনি বারবার মাঠের পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন এবং বলছিলেন, সেদিনই হবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শেষ দিন, পরিস্থিতি এরপর শান্ত হয়ে যাবে।

তবে এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ক্লোজসার্কিট ক্যামেরায় জনতাকে গণভবনে ঢুকতে দেখে হারুন অর রশিদ ধপাস করে চেয়ারে বসে পড়েন। এরপর দীর্ঘক্ষণ তিনি আর কোনো কথা বলেননি।

উত্তেজিত জনতা ভবনটির উদ্দেশ্যে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি বেগতিক অনেক পুলিশ কর্মকর্তা তাদের ইউনিফর্ম খুলে ফেলেন এবং সাধারণ পোশাক পরে ১৩ ফুট উঁচু দেওয়াল টপকাতে শুরু করেন।

ডিআইজি হারুন অর রশিদও একই কায়দায় দেওয়াল টপকাতে গিয়ে গুরুতর আঘাত পান। পায়ে ও শরীরের নিচের অংশে ব্যাপক আঘাত নিয়ে তিনি আইজিপির সঙ্গে পুলিশ সদর দপ্তরে চলে যান। বিকালে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দেওয়াল টপকে প্রাণে বাঁচেন।

ওই রাতে তিনি কোথায় ছিলেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে একটি সূত্র জানায়, তিনি কূটনৈতিক এলাকায় একটি দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অবস্থা এমন বেগতিক হবে জানলে তিনি হয়তো আগেই দেশ ছেড়ে চলে যেতেন। তবে ৫ আগষ্টের আকস্মিকতায় সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় পাননি বলেই মনে করছে সবাই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়