পুলিশ সংস্কার কমিশন প্রাথমিকভাবে দেড়শ বছরের পুরোনো পুলিশ আইন ও বিধিমালা সংশোধনের ওপর জোর দেবে যেন এগুলোকে সময়োপযোগী ও বাহিনীকে জনমুখী ও সেবামুখী করে তোলা যায়।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কমিশনের চেয়ারম্যান সফররাজ হোসেন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, 'পুলিশ বাহিনী দেড়শ বছরের পুরোনো আইন, বিশেষ করে ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন এবং ১৯৪৩ সালের পুলিশ প্রবিধানের ওপর কাজ করে। এই আইনগুলো সেকেলে, কোনো বড় পরিবর্তন করা হয়নি।'
তিনি বলেন, 'এসব আইনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে পুলিশ অফিসার, বিশেষজ্ঞ, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ যারা এই আইনগুলো নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের সবাইকে রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।'
সফররাজ হোসেন বলেন, 'অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে পুলিশ কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে আমাদের ধারণা আছে এবং আমরা তাদের চর্চাগুলো আমাদের সংস্কার প্রস্তাবে সুপারিশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে আইনের কোন ধারাগুলো সংশোধন করা দরকার, সেগুলো তুলে ধরব।'
কমিশনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, 'পুলিশ সংস্কারের জন্য পরামর্শ নিতে আমরা সুশীল সমাজ, বিশেষজ্ঞ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক এবং সাধারণ নাগরিকদের মতামত নেব। আমাদের তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রশ্নগুলো ওয়েবসাইটে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে, সেখানে অংশীজনরা তাদের মতামত দিতে পারবেন।'
তিনি বলেন, 'আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করতে চাই। সবার মতামত নিয়ে আলোচনা করার পর, পুলিশ আইন আধুনিক করতে কোন কোন ধারায় কী পরিবর্তন করা দরকার সেগুলো নিয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ করব।'
'আমাদের একটি ভালো পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে হবে যাদের প্রধান কাজ হবে জনগণের সেবা করা,' বলেন তিনি।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, 'সংস্কার কমিশনকে তাদের কাজ করতে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা আমরা করব।'
সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব সফররাজ হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ সংস্কার কমিশন গত ৩ অক্টোবর গঠিত হয়। কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা হলেন-সদস্য হিসেবে রয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইকবাল, সাবেক বিভাগীয় কমিশনার ও যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ সাজ্জাদ আলী, পুলিশের উপমহাপরিদর্শক মো. গোলাম রসুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, মানবাধিকারকর্মী এ এস এম নাসিরউদ্দিন এলান ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
সংস্কার প্রস্তাবের জন্য কমিশনকে ৯০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। উৎস: ডেইলিস্টার বাংলা।
আপনার মতামত লিখুন :