শিরোনাম
◈ পরামর্শ ইতিবাচকভাবে নিয়েছে সরকার: বৈঠক শেষে গণফোরাম ◈ আওয়ামী লীগ সমর্থকদের প্রেসক্লাবের সামনে মারধর ◈ পলাতক পুলিশ সদস্যরা এখন ‘সন্ত্রাসী’ বিবেচিত হবে, দেখামাত্রই গ্রেফতার : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ দুই মাসে দেড় বিলিয়ন ডলার দেনা পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক (ভিডিও) ◈ প্রয়োজনে সিস্টেম ভেঙে নতুন লোক বসাবো : উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ (ভিডিও) ◈ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ: এবারও ডাক পায়নি জাপা ◈ নেতানিয়াহুর বাসভবনে ড্রোন হামলা, বেঁচে গেলেন অল্পের জন্য ◈ সিনওয়ারের মরদেহ নিয়ে ‘দর কষাকষি’ করতে চায় ইসরায়েল ◈ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন : সাড়ে চারশ কোটি টাকার ময়লা-বাণিজ্য হাত বদল ◈ এবার ভয়ংকর সেই আয়নাঘর নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন

প্রকাশিত : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১২:১৮ দুপুর
আপডেট : ১৮ অক্টোবর, ২০২৪, ০৬:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যে কারনে হঠাৎ এত লোডশেডিং

হঠাৎ করে বিদ্যুতের লোডশেডিং বাড়ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের অবস্থা ভয়াবহ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় লোডশেডিং বেড়েছে। গ্যাস সংকট ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য সক্ষমতা থাকলেও প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে। ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) ও ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)।  বিতরণ কোম্পানিগুলো বলছে, চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎও মিলছে না। তাই লোডশেডিং বেড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতি হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রম। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। 

বিশেষজ্ঞরা বলেন, জ্বালানি নিশ্চিত না করেই একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। চাহিদাকেও বিবেচনায় নেয়া হয়নি। ফলে প্রতি বছর বড় সময় অলস বসিয়ে রাখতে হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্র। দিতে হয়েছে অলস কেন্দ্রের ভাড়া। খরচের চাপ সামলাতে ভোক্তা পর্যায়ে দাম বেড়েছে। সরকারের দায় বেড়েছে। অথচ তিন বছর ধরে গরম বাড়লেই লোডশেডিংয়ে ভুগতে হচ্ছে মানুষকে। নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েও পড়েছে একই সমস্যায়। বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি নেই। ফলে বেড়েছে লোডশেডিং। সোমবার গড়ে ২ হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং করতে হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিতরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দৈনিক প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি) ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, সোমবার বেলা ৩টায় ১ হাজার ৮৭৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। গত রোববারও দেশে গড়ে ১ হাজার ২৯১ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৩ হাজার ৫৯৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ আছে। জ্বালানি সংকটে দেশে ৬ হাজার ২৮৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে। বিদ্যুতে প্রতিদিন গড়ে ৮৮ কোটি ঘনফুট গ্যাস দেয়া হচ্ছে, যা এপ্রিলে ছিল ১৩৫ কোটি ঘনফুট। 

বিগত সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বড় সুবিধাভোগী ছিল সামিট গ্রুপ। এ গ্রুপটির এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ থাকায় গ্যাসের সরবরাহ কমেছে। এতে বড় সংকট তৈরি হয়েছে।  

জ্বালানি সংকটের পাশাপাশি ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি কমেছে। ত্রিপুরা থেকে ঘণ্টায় ১৬০ মেগাওয়াটের স্থানে ৬০ থেকে ৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। ভারতের সরকারি-বেসরকারি খাত থেকে ভেড়ামারা দিয়ে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসার কথা থাকলেও মিলছে ৮৮০ মেগাওয়াট। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও ৫০০ মেগাওয়াট কম আসছে। পিজিসিবি’র তথ্যমতে, গতকাল দুপুর ৩টায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৭৫০ মেগাওয়াট। আর বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় ১২ হাজার ৭৮৮ মেগাওয়াট। দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৭ হাজার মেগাওয়াটের বেশি।

ঢাকার দুই বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ডিপিডিসি ও ডেসকোর তথ্য বলছে, ঢাকায় বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল ৪০০ মেগাওয়াট। পরিস্থিতি সামলাতে ডেসকোকে অঞ্চলভেদে ৩ থেকে ৪ বার লোডশেডিং করতে হয়। ডিপিডিসি’র এলাকায় দুই থেকে তিনবার লোডশেডিং হয়। বিদ্যুৎ বিক্রয় বাবদ বকেয়া অর্থ আদায়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে তাগাদা দিচ্ছে ভারতের গৌতম আদানির প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপ। গ্রুপের কর্মকর্তাদের দাবি, বাংলাদেশের কাছে তাদের পাওনা বর্তমানে প্রায় ৫০ কোটি ডলার।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র বলছে, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের একটি টার্মিনাল (সামিটের মালিকানাধীন) তিন মাস ধরে বন্ধ। এতে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ছে না। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এক হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন কমেছে। বিল বকেয়া থাকায় আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহ কমেছে ৫০০ মেগাওয়াট। বেসরকারি খাতের তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও সর্বোচ্চ চাহিদায় উৎপাদন করা যাচ্ছে না। কারণ, তারাও অনেক টাকা পাবে। তাই ঘাটতি পূরণে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনালের মাধ্যমে এলএনজি থেকে আসে ১১০ কোটি ঘনফুট। সামিটের এলএনজি টার্মিনাল গত ২৭শে মে থেকে বন্ধ। এতে এলএনজি সরবরাহ দাঁড়িয়েছে দৈনিক ৬০ কোটি ঘনফুট। পিডিবি’র কর্মকর্তারা বলেন, গ্যাসের সরবরাহ কম, বকেয়া বিলের চাপ থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে। বকেয়া পরিশোধে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। শিগগিরই পরিস্থিতির উন্নতি হবে। সূত্র : মানবজমিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়