এম.এ. লতিফ: [২] বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) পুলিশ সদস্য গিয়াস উদ্দিন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১৭ বছরের কিশোর হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
[৩] এর আগে ফাইয়াজের পক্ষে জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। শুনানি শেষে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক রোকসানা বেগম হ্যাপীর আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
[৪] ফাইয়াজের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম ‘আমাদের নতুন সময়’কে জানান, জন্ম নিবন্ধন অনুসারে হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজের জন্ম ১৯ এপ্রিল, ২০০৭। সে ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ঢাকার শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে। সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মাতুয়াইল আই.সি.এম.এইচ. হাসপাতালের বিপরীত পাশে এক পুলিশ সদস্যকে মেরে ঝুলিয়ে রাখার মামলায় ১৭ জন আসামির মধ্যে ১৬ নম্বর আসামি এ শিক্ষার্থী।
[৫] পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে লাশ গুম ও এই কাজে সহায়তাসহ তার মোটরসাইকেল চুরির মামলায় আসামি হিসেবে ফাইয়াজের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শান্তা আক্তারের আদালত।
[৬] পরবর্তীতে ২৮ জুলাই শিশু আইন ২০১৩ এর ২১ ধারা অনুযায়ী ফাইয়াজকে শিশু ঘোষণাপূর্বক শিশু আইনের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হকের আদালত তাকে শিশু হিসেবে ঘোষণা করেন এবং গাজীপুরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এছাড়া এ মামলায় তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশও বাতিল করেন।
[৭] মামলার এজাহারে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের নায়েক গিয়াস উদ্দিন (৫৮) পরিবারসহ মাতুয়াইল মাতৃসদন হাসপাতালের বিপরীত পাশে ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করতেন। গত ১৯ জুলাই রাত্রী আনুমানিক ৯টার সময় গণভবনে সরকারি ডিউটি পালনের উদ্দেশ্যে তার ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল যোগে বাসা থেকে বের হন। যাত্রাবাড়ী থানাধীন রায়েরবাগ ফুটওভার ব্রীজের উত্তর পাশে আসা মাত্রই সাড়ে ৯টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতারা বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়ে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে বিএনপি ও জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে উল্লিখিত আসামিরা সহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেকে প্ররোচনা ও নির্দেশনায় পরস্পর যোগসাজসে পুলিশ পরিচয় নিশ্চিত হয়ে দেশের নাশকতা সৃষ্টির অংশ হিসেবে তাকে আটক করে। এরপর তাকে ধারালো অস্ত্রের মাধ্যমে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় গুরুতর আঘাত, জখম করে।
[৮] ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রাস্তায় পড়ে গেলে আসামিসহ অন্যান্য আসামিরা লোহার রড, লাঠি দিয়ে পুলিশ সদস্য গিয়াস উদ্দিনের এর নাক-কান, মুখ-মন্ডল, গলা ও হাত, বুক, পেট, পিঠ, ডান পায়ের হাটুর নিচে, গোড়ালির নিচে সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি ভাবে আঘাত করে ঘটনাস্থলেই নির্মম ভাবে হত্যা করে।
[৯] এরপর তাকে রশি দিয়ে ফুটওভার ব্রীজের সাথে বুলিয়ে রাখে। মৃত্যুর পর মৃতদেহ নিয়ে উল্লেখিত আসামিরা ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা পৈশাচিক আনন্দে মেতে উঠে এবং মৃতদেহ গুম করার লক্ষ্যে উলঙ্গ করে মৃতদেহে আগুন লাগিয়ে পোড়ানোর চেষ্টা করে।
[১০] ওই ঘটনায় রাজধানী যাত্রাবাড়ী থানায় গত ২৪ জুলাই নিহতের ভগ্নিপতি ফজল প্রধান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
একে
আপনার মতামত লিখুন :