মুযনিবীন নাইম: [২] সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সহিংসতায় রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর ও কাজীপাড়ায় মেট্রোরেল স্টেশনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছাত্রদলের নেতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার ক্রাইম দক্ষিণ।
[৩] ডিবি জানায়, পরিকল্পিতভাবে মিরপুরে মেট্রোরেলে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এই হামলায় এক থেকে দেড় হাজার মানুষ অংশ নেয়। হামলার সমন্বয় করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আবু হান্নান তালুকদার। এছাড়া দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনায় হামলার নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম আল নাসের (মিশুক)।
[৪] একই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক বজলুল রহমান (বিজয়) ও ছাত্রদলের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সহ-সভাপতি মো. ফেরদৌস (রুবেল)।
[৫] রোববার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
[৬] মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। বিশেষ করে আমাদের স্বপ্নের মেট্রোরেলে আগুন লাগিয়েছে, সেতু ভবনে আগুন লাগিয়েছে। পুলিশ সদস্যদের ওপর যারা হামলা করেছে ও হত্যা করেছে আমরা তাদের কে যেখানেই থাকে না কেন একে একে সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে। যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ হত্যার ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের স্বপ্নের মেট্রোরেল বন্ধ। আপনারা জানেন গত ১৯ জুলাই কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা মিরপুরের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনে অগ্নিসংযোগ করেছে। সেই ঘটনায় জড়িত থাকার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি।
[৬] তিনি বলেন, মেট্রো স্টেশনে হামলার মাস্টার মাইন্ড ও নেতৃত্বদাতা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা আবু হান্নান। হান্নান তার সহযোগীদের নিয়ে বিএনপি নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাইফুল ইসলাম নীরবের নির্দেশনায় তারা মেট্রো স্টেশনে আগুন দেয়। এই ঘটনায় আরও দুজন নেতার নাম প্রকাশ করেছে। যাদের মধ্যে বিএনপি নেতা শ্রাবণ আগেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিএনপির নেতারা চার-পাঁচজনকে দায়িত্ব দেয়। মেট্রো স্টেশনে আগুন দিয়ে ধ্বংস করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। সাধারণ মানুষ যেনো মেট্রোতে আর চলাচল করতে না পারে।
[৭] ডিবি প্রধান আরও বলেন, মেট্রোরেল স্টেশনে আগুন ও দায়িত্বরত পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় অনেকের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে এই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান চালছে।
[৮] অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আপনারা জানেন গাজীপুরের সাবেক মেয়রের সহকারীকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। একজন পথচারীকে পুলিশ ভেবে মেরে দেড় কিলোমিটার টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এমন বর্বরোচিত হামলা ও হত্যাকাণ্ড ঘটনো হয়েছে। জড়িতরা বাংলাদেশের উন্নয়নের পক্ষের কোনো লোক না। তারা দেশকে অকার্যকর করতে অপচেষ্টা চালিয়েছে। অনেকে মনে করছে ঢাকা ছেড়ে পালিয়ে বেঁচে যাবেন। সেটা হবে না। মামলা হয়েছে। ডিবি তদন্ত করছে। আমরা জড়িত কাউকে ছাড় দেব না।
[৯] এক প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দলোনকে ঘিরে নাশকতার পরিকল্পনা ছিল। এই আন্দোলনকে ঘিরে রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করা হয়। সবকিছুই পরিকল্পিত। এই ঘটনায় ইন্ধনদাতা, অস্ত্রদাতাদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
এমএন/কে/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :