শিরোনাম
◈ পরিবর্তনের প্রত্যাশা নিয়ে গত পাঁচ মাসে ১২টি দলের আত্মপ্রকাশ ◈ লোকজনের রঙ বেরঙের ঠাট্টা মস্করা আমার কিন্তু একদম ভালো লাগছে না : গোলাম মাওলা রনি ◈ ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচি ঘোষণা তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের ◈ দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু মেডিক্যাল কিলিং কি না জানাতে হবে: মিজানুর রহমান আজহারি ◈ সারজিসের স্ত্রী কুরআনে হাফেজা, শ্বশুর পেশায় একজন ব্যারিস্টার ◈ ফের বাড়লো জ্বালানি তেলের দাম ◈ সমন্বয়ক আখ্যা দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, আহত ৮ ◈ ট্রাম্পের সহায়তা প্রত্যাহারে চীনের দিকে ঝুঁকতে পারে বাংলাদেশ ◈ দুই দেশ থেকে এলো সাড়ে ৩০ হাজার টন চাল ◈ রাজনৈতিক নেতৃত্বই জুলাই বিপ্লবে পুলিশকে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল: এইচআরডব্লিউ

প্রকাশিত : ২৪ জুলাই, ২০২৪, ০৬:২১ বিকাল
আপডেট : ২৪ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : আরমান হোসেন

ধারণা ছিলো এ ধরনের আঘাত আসবে

জনগণকেই এ জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে প্রধানমন্ত্রী

সালেহ্ বিপ্লব: [২] কোটাবিরোধী আন্দোলনের সুযোগে দুর্বৃত্তদের তাণ্ডব প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানতাম, ইলেকশন করতে দেবে না। তারপরও আমরা ইলেকশন করে ফেলেছি। তারা বলেছে, ইলেকশন করার পর ইলেকশন গ্রহণযোগ্য হবে না, সেটাও গ্রহণযোগ্য আমরা করতে পেরেছি। সরকার গঠন করতে পেরেছি। আমার ধারণা ছিল, এ ধরনের একটা আঘাত আবার আসবে। বাসস

[৩] বুধবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এডিটরস গিল্ডসের উদ্যোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, বার্তা প্রধান এবং জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান। স্বাগত বক্তব্য দেন এডিটরস গিল্ডসের প্রেসিডেন্ট মোজাম্মেল বাবু।

[৪] শেখ হাসিনা বলেন, কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনে অনেক বড় ষড়যন্ত্র ছিলো। এটা যে একটা বিরাট চক্রান্ত, সেটা বোঝাই যাচ্ছিলো। এই যে বাইরের লোক চলে আসা, এবার আমরা কিন্তু আগে থেকে খবর পেয়েছি লোক ঢুকবে। গোয়েন্দা দিয়ে সব হোটেল, কোথায় থাকতে পারে, সেগুলো কিন্তু নজরদারিতে আনা হয়েছে। কিন্তু ওরা সেখানে ছিল না; এরা চলে এসেছে ঢাকার ঠিক বাইরের পেরিফেরিতে। 

[৫] প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বাংলাদেশ থেকে শিবির-জামায়াত এরা কিন্তু এসেছে। সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু ছাত্রদলের ক্যাডাররাও কিন্তু সক্রিয় ছিলো। যতগুলো ঘটনা ঘটেছে এরাও (বিএনপি) কিন্তু সক্রিয় ছিল। 

[৬] আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আরেকটা জিনিস খেয়াল করবেন, তখনও কিন্তু লাশ পড়েনি। কিন্তু মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের বক্তব্যে এসে গেল, লাশ পড়েছে। লাশের খবর তাদের কে দিলো? তাহলে লাশ ফেলার নির্দেশটা কে দিয়েছে, এটাও খবর নেওয়া দরকার। তারপর কিন্তু লাশ পড়তে শুরু করলো। 

[৭] কোটা আন্দোলন ঘিরে সাম্প্রতিক সহিংসতায় মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বাংলাদেশ টেলিভিশন, দুর্যোগ ভবন, সেতু ভবন, বিআরটিএ, ডাটা সেন্টারে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মতো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

[৮] শেখ হাসিনা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এভাবে কেন সুযোগটা সৃষ্টি করে দিলো? আমরা তো বারবার তাদের সঙ্গে বসলাম। প্রজ্ঞাপনও করা হলো। তাদের কোনো দাবি তো পূরণ করা ছাড়া রাখিনি। যে দাবি তারা করেছিলো কোটা সংস্কারের, যতটুকু চেয়েছিলো; তার থেকে অনেক বেশি দিয়েছি। যখন তাদের দাবি মেনে নেওয়া হলো, তারপরও তারা এ জঙ্গিদের সুযোগ করে দিল কেন? কোটা আন্দোলনকারীদের কিন্তু জাতির কাছে একদিন এ জবাব দিতে হবে। কেন মানুষের এত বড় সর্বনাশ করার সুযোগ করে দিলো?

[৯] কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সবসময় তাদের সহানুভূতি দেখিয়েছি। তাদের সবসময় নিরাপদ রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু যেসব ঘটনা ঘটেছে, তাতে কখনো ক্ষমা করা যায় না। 

[১০] দেশবাসীকে সব ধরনের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হলো, পোশাক তৈরি করা হলো কালো প্যান্ট, সাদা শার্ট; ফলস (ভুয়া) আইডি কার্ড, পেছনে ব্যাগের মধ্যে কী আছে, পাথর আর ধারালো অস্ত্র। মসজিদে অস্ত্র নিয়ে ইমামকে মাইকিং করতে বাধ্য করা, এই যে জঙ্গিবাদের বীভৎস চেহারা আজ সবার সামনে চলে এলো, এর বিরুদ্ধে জাতিকে, সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। 

[১১] তিনি বলেন, যারা এ ধরনের দেশের সর্বনাশটা করল, যারা আজ গণমানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতির জন্য, তাদের আয় বৃদ্ধি, তাদের চলাচলের সুবিধার জন্য, তাদের জীবনমান উন্নত করার জন্য যতগুলো স্থাপনা তৈরি করেছি, সবগুলোতেই তারা আঘাত করেছে, সবগুলো তারা ভেঙে দিয়েছে। ক্ষতিটা কার? নিশ্চয়ই জনগণের। এখানে তো জনগণকেই রুখে দাঁড়াতে হবে, এ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, জনগণকেই সোচ্চার হতে হবে। কারণ এরা তো কোনদিনই কোনো দেশে ভালো কিছু করতে পারেনি। 

[১২] বিগত বছরগুলোতে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত এবং স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জঙ্গিবাদ দমন করে দীর্ঘসময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করেছি। সেই জায়গায় আজ চরম একটা আঘাত দিলো।

[১৩] সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে কারফিউ দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তো চাইনি আমাদের গণতান্ত্রিক ধারায় এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটুক, আমাদের কারফিউ দিতে হোক।  একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশে এটা আমাদের কাম্য ছিল না। কিন্তু আজ না দিয়ে কোন উপায় ছিল না। না দিলে আরও যে কত লাশ পড়ত, তার হিসাব নেই। 

[১৪] তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে কি, দীর্ঘ সংগ্রামের পর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত ছিল, দেশে উন্নতিও করতে পেরেছিলাম। মাত্র ১৫ বছরের মধ্যে যে উন্নয়ন করেছি আর কে পেরেছে এর আগে। 

[১৫] গণমাধ্যমগুলোকে সঠিক সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, এটা ঠিক অনেকে গুজবে কান দেয়। কান নিয়ে গেছে চিলে, ওটার পেছনে ছোটে, কানে হাত দিয়ে দেখে না কান আছে কি না। মিথ্যাচারের হাত দেখে মানুষকে রক্ষা করুন, মানুষ যাতে সঠিক তথ্য জানতে পারে, সেভাবে সংবাদ পরিবেশন করুন। 

[১৬] শেখ হাসিনা আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি এর সুফলও মানুষ পেল, কুফলও মানুষ পেল। আপনাদের কাছে যা তথ্য আছে, আপনারা তা ব্যাপকভাবে প্রচার করে জনমত সৃষ্টি করুন। 

[১৭] সভায় বক্তব্য দেন সিনিয়র সাংবাদিক আবেদ খান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, ডিবিসি টেলিভিশনের এডিটর ইন চিফ মঞ্জুরুল ইসলাম, ভোরের কাগজ সম্পাদক এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা জার্নালের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, নাগরিক টেলিভিশনের হেড অব নিউজ ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দীপ আজাদ, আমাদের সময়ের সম্পাদক মাইনুল আলম, বাংলাদেশ জার্নালের সম্পাদক শাজাহান সর্দার, ডিবিসি টেলিভিশনের নিউজ এডিটর জায়েদুল আহসান পিন্টু, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের হেড অব নিউজ আশিষ সৈকত, বাংলা ট্রিবিউনের সম্পাদক জুলফিকার রাসেল, একাত্তর টিভির হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ, এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ, কিংস নিউজের হেড অব নিউজ নাজমুল হক সৈকত এবং আরটিভির হেড অব নিউজ মামুনুর রহমান খান।

এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়