ড. কামরুল হাসান মামুন: দেশে দুর্নীতি যেভাবে সারা দেশের ঘরে ঘরে পারকোলেট করেছে তা রীতিমতো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সরকারও সেটা জানে। দেশের মানুষও জানে। সরকার জানে বলেই দুদিন পর পর কিছু ধরপাকড় করে মানুষের রাগকে ডিসচার্জ করার একটা সুযোগ দেয়। একবার ক্যাসিনো হোতাদের ধরপাকড় বলেন আর দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের ধরপাকড় বলেন। এগুলো নাটকের একটা অংশ। এগুলো আমাদের ওইসবের লেলিয়ে দিয়ে আরও বড় দুর্নীতি করার সুযোগ সৃষ্টি করে। আর তাদের লেলিয়ে দেওয়া পথে আমাদের ছুটে চলা নিশ্চই তাদের অনেক বিনোদন দেয়। নিশ্চয়ই বিলাসবহুল হোটেলে ডিনার খেতে খেতে আনন্দে হাসিতে ফেটে পরে।
সরকারতো ইচ্ছে করেই কারো দুর্নীতির কিছুটা তুলে ধরে তাদের অর্থবিত্তসহ পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিয়ে তারপর বিচারের ইন্তেজাম করে। সরকার তো ইচ্ছে করেই দেশের সকল প্রতিষ্ঠানের এক নম্বর পদে দলান্ধ অযোগ্যদের নিয়োগ দেয়। অযোগ্যরা সেই সব পদে গিয়ে যোগ্যদের বিতাড়িত করে বা তাদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে আর অযোগ্যতা আস্কারা দিয়ে তাদের একটা সিন্ডিকেট তৈরি করে। বাংলাদেশ ব্যাংক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের একটি সেখানে কাকে নিয়োগ দিয়েছে। একজন ডি-গ্রেড পাওয়া। সেই গভর্নর কাকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদে নিয়োগ দিয়েছে। মহা-দুর্নীতিবাজ মতিউরকে। একটি দেশের পুলিশ প্রধানের দুর্নীতিতো গণমাধ্যমে সবাই দেখেছেন। সরকার কি জানতো না? সব জেনেশুনেই নিয়োগ দিয়েছেন। সরকারের খোদ একজন এমপি এত বছর যাবৎ স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে যুক্ত ছিলেন। সেটা কি সরকার জানতো না? জেনেশুনেই তাকে এমপি বানিয়েছেন। এভাবে লোম বাছতে গেলে কম্বল বলে আর কিছু থাকবে না।
সোনার বাংলা বানাতে গিয়ে দুর্নীতির বাংলা হয়ে গেছে। দুই বড় দল দিয়ে এই দেশ রক্ষা হবে না। আমাদের নতুনের সন্ধান করতে হবে। দেশে এখনো যে কজন ভালো মানুষ আছেন তাদের এগিয়ে আসতে হবে। পরিবর্তনের সকল রাস্তা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বন্ধ করার চেষ্টা হয়েছে। তবুও দেশকে রক্ষাতো করতে হবে। এইভাবে চলতে পারে না। লেখক: অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আপনার মতামত লিখুন :