শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৭ জুলাই, ২০২৪, ১০:৪৬ রাত
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শুদ্ধাচার পুরস্কারের মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় শুদ্ধতা নিশ্চিত করা উচিত: বিশিষ্টজনদের অভিমত

সালেহ ইমরান: [২] ২০২২ সালে শুদ্ধাচার পুরস্কার পান পুলিশের সে সময়কার আইজি বেনজীর আহমেদ। সম্প্রতি দুর্নীতির অভিযোগে তার সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে। সপরিবারে দেশ ছেড়েছেন তিনি। 

[৩] ২০১৯ সালে জামালপুরের জেলা প্রশাসক ছিলেন আহমেদ কবির। তিনি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিভাগীয় শুদ্ধাচার পুরস্কার পান। পুরস্কার প্রাপ্তির মাস দুয়েকের মাথায় নিজ কার্যালয়ে এক নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ সময় কাটানোর জেরে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। 

[৪] এমন কিছু ঘটনার কারণে শুদ্ধাচার পুরস্কার ও তা দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন ওঠে। কোন প্রক্রিয়ায় ও কোন মানদণ্ডে এই পুরস্কার দেয়া হয় এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসনে এটা কতটা ভূমিকা রাখে তা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। 

[৫] ২০১৭ সালে এই শুদ্ধাচার পুরস্কার চালু করা হয়। পুরস্কারের আওতায় আসেন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। সিনিয়র সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায় কর্মকর্তাদেরকে ১৫ ধাপে এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। 

[৬] শুদ্ধাচার পুরস্কারের জন্য ১৮টি গুণকে মানদণ্ড হিসেবে ধরা হয়। পেশাদারিত্বের পাশপাশি আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গীর মতো বিষয় এখানে স্থান পেয়েছে। পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা, নির্ভরযোগ্যতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সহকর্মী ও সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে আচরণ, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে পারদর্শিতা এমনকি ছুটি গ্রহণের প্রবণতাকেও রাখা হয়েছে মাণদণ্ডের তালিকায়। 

[৭] পুরস্কার প্রদানের জন্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে এসব মানদণ্ড কতটা মানা হয় সে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ বলেন, চারদিকেই অশুদ্ধ মানুষের দাপট। সুতরাং সেখানে শুদ্ধ মানুষেরা অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন এটাই স্বাভাবিক। যে উদ্দেশ্যে এই শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়েছে সেটা বাস্তবায়নের জন্য তো শুদ্ধ মানুষ চাই। অর্থাৎ যদি পুরস্কারের মনোনয়নেই অশুদ্ধ মানুষেরা থাকেন তাহলে তাদের মতো মানুষেরাই পুরস্কার পাবেন এটাই স্বাভাবিক। আমি মনে করি শুধু শুদ্ধাচার পুরস্কার নয়, প্রতিটি জাতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে একটা জবাবদিহিতা থাকা উচিৎ। 

[৮] বিশিষ্ট কূটনীতিক, সাবেক রাষ্ট্রদূত এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, প্রতিটা পুরস্কারের ক্ষেত্রেই তো এমনটা হচ্ছে। পুরস্কারের জন্য যে কমিটি থাকে তাতে কারা আছেন সেটা বিবেচ্য বিষয়। আমি মনে করি, এখানে যোগ্যতা ও সততার চেয়ে অন্যান্য বিষয় বেশি প্রধান্য পায়। সে ক্ষেত্রে ‘অপাত্রে মাল্যদান’ হবে এটাই স্বাভাবিক। 

[৯] ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ঢালাওভাবে এই পুরস্কারের অপব্যবহার করা হচ্ছে। এখানে নিজেরা নিজেদের পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার ঘটনা ঘটছে। 

[১০] তিনজনেরই অভিমত, শুদ্ধাচার পুরস্কার দেওয়ার প্রক্রিয়াকে শুদ্ধ করতে হবে সবার আগে। তাহলে যোগ্য ব্যক্তিরা পুরস্কার পাবেন, সততার প্রতি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের আগ্রহ সৃষ্টি হবে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব

এসআই/এসবি/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়