শিরোনাম
◈ বড় হারে অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্বপ্ন  ◈ জ্বালানির চাহিদা মেটাতে নতুন বিনিয়োগ খুঁচছে সরকার  ◈ ঢাকায় ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীরা ◈ প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দিল নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ◈ ইজিবাইকসহ অপহরণকৃত চালককে উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী ◈ হামজা চৌধুরী‌কে দেখে সামিত শোম বললেন, আমি বাংলা‌দে‌শের হ‌য়ে খেল‌তে আগ্রহী, পাসপোর্ট করছি ◈ রোববার প্রথম টে‌স্টে বাংলা‌দেশ ও জিম্বাবু‌য়ে মু‌খোমু‌খি, না‌হিদ রানা‌কে ভয় পা‌চ্ছে সফরকারীরা  ◈ ইংল্যান্ড প্রিমিয়ার লি‌গে খেল‌বেন সাব্বির রহমান, রওনা হ‌বেন ২ মে ◈ ভারতের সঙ্গে ‘যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায়’ ডুবছে তাদেরই অর্থনীতি! ঢাকাকে বার্তা দিল নয়াদিল্লি: আনন্দবাজারের প্রতিবেদন ◈ ট্রাম্প-শি জিনপিং-মোদি এসে বাংলাদেশে কিছু করে দিয়ে যাবেন না: মির্জা ফখরুল (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৭:৩৭ বিকাল
আপডেট : ০১ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

১৮ বছর পর মালয়েশিয়া প্রবাসী বাবাকে খুঁজে পেলো তিন সন্তান

ডলারের বয়স তখন মাত্র ১০ বছর। বোন ডলির বয়স ৬ আর ছোট ভাই হানিফের এক মাস। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাটের রবিউল করিম সংসারের অভাব মেটাতে কাজের খোঁজে গিয়েছিলেন মালয়েশিয়ায়। তিনি দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি যে স্বপ্নের খোঁজে, স্বাচ্ছন্দ্যের আশায় তিনি মালয়েশিয়ায় পাড়ি দিচ্ছেন, সেই স্বপ্নই তার ছোট্ট পরিবারকে ১৮ বছরের জন্য দ্বিখণ্ডিত করে দেবে।

ভিজিট ভিসায় মালয়েশিয়া পৌঁছে দেখেন, তিনি শিকার হয়েছেন দালালের প্রতারণার। এরপর ভুগেছেন ভিসা ও পাসপোর্ট নিয়ে নানা জটিলতায়। এর মধ্যে আর দেশে ফিরে আসতে পারেননি। পরে তো পাসপোর্টই হারিয়ে ফেলেন। বারবার দেশে ফেরার চেষ্টা করে ব্যর্থ রবিউল আটকে যান প্রবাসেই। আর ফিরলেন আজ বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর)।

বাবাকে না দেখে বেড়ে ওঠা তিন সন্তানের মনে সারাক্ষণ ঘুরতো একটাই প্রশ্ন— “বাবা কী সত্যিই আর ফিরে আসবে?” এরপরে পার হয়ে গেছে আঠারোটি বছর। বাবাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বড় ছেলে ডলার মাহমুদ সরকারের নানা দফতরে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু আইনি জটিলতায় বাবাকে ফিরিয়ে আনতে পারছিলেন না।

মাস তিনেক আগে ডলার খোঁজ পান ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের আটকে পড়া বাংলাদেশিদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার সেবা সম্পর্কে। তার বাবার প্রত্যাবাসনের কোনও সুযোগ আছে কিনা তা জানতে ছুটে যান আশকোনায়।

ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন অ্যান্ড ইয়ুথ প্লাটফর্ম) শরিফুল হাসান জানান, মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের কর্মীরা ডলারের কাছ থেকে বিস্তারিত সব তথ্য জানার পর শুরু হয় রবিউল করিমকে দেশে ফিরিয়ে আনার জটিল প্রক্রিয়া। এ কাজে সহযোগিতা নেওয়া হয় মালয়েশিয়া-প্রবাসী সাংবাদিক বাপ্পি কুমার দাসের। রবিউল করিমকে দেশে ফেরানোর জন্যে দূতাবাস, ইমিগ্রেশনসহ সেদেশের নানা দফতরে যোগাযোগ করেন তিনি। ব্র্যাকের পক্ষ থেকেও নিয়মিত পরামর্শ ও তথ্য দিয়ে সহায়তা করা হয়।

এভাবেই ঘটে নানা জটিলতার অবসান। দীর্ঘ ১৮ বছর পর আজ বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দেশে ফিরেছেন রবিউল করিম। জড়িয়ে ধরেছেন ছেলে-মেয়েদের। আপ্লুত হয়েছেন মেয়ে ডলির কোলে নাতি নাহিদকে জড়িয়ে ধরে।

বাবাকে ১৮ বছর পরে নিজেদের মাঝে ফিরে পেয়ে আপ্লুত ডলার মাহমুদ বলেন, “মনে পড়ে না বাবাকে শেষ কবে বা কীভাবে জড়িয়ে ধরেছি। একসময় ধরেই নিয়েছিলাম, বাবা হয়তো আর আমাদের মাঝে ফিরবেন না। কিন্তু আজ ব্র্যাক এবং বাপ্পি দাদার সহযোগিতায় সেই দিনটি এসেছে। আমরা তিন ভাই-বোন, বাবার পাশে বসে আছি, তাকে ছুঁয়ে দেখছি। এ এক অন্যরকম অনুভূতি, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।”

২০১৭ সাল থেকে এমন ১৩৮টি পরিবারকে পুনর্মিলিত করতে সহায়তা করেছে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম। ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ম্যানেজার ও মানবপাচার বিরোধী লড়াইয়ে ভূমিকা রেখে যুক্তরাষ্ট্রের টিআইপি হিরো-২০২৪ পুরস্কারে ভূষিত আল-আমিন নয়ন বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা কারণে বাংলাদেশিরা আটকে পড়েন। আমরা বিপদে থাকা এই মানুষদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছে থেকেই উদ্ধার করার কাজটা শুরু করেছি। এ কাজে নানা ব্যক্তি ও সংগঠন আমাদের পাশে থেকে সহায়তা করছে।’ উৎস: বাংলাট্রিবিউন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়