আফ্রিকার মোজাম্বিকে সরকারবিরোধী চলমান আন্দোলনে অরাজক পরিস্থিতি ও সহিংসতায় সে দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা চরম সংকটে দিন পার করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সেখানে কয়েক দিন ধরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দোকানপাট ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলা এবং লুটপাট চালানো হচ্ছে। এমনকি শারীরিক নির্যাতনও করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মোজাম্বিকে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা।
সরকারবিরোধী চলমান আন্দোলনে নিরীহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের ওপর হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দেশে অবস্থানরত আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের মাঝে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
এদিকে আফ্রিকার মোজাম্বিকে অধিকাংশ ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের বাঁশখালী এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রবাসীদের বলে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন প্রবাসী।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও প্রবাসী বাংলাদেশি সূত্রে জানা যায়, আফ্রিকার মোজাম্বিকে সরকারবিরোধী চলমান আন্দোলন ও সহিংসতায় সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা চরম আতঙ্কে ও বিপদের মধ্যে রয়েছে। প্রতিনিয়ত হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতিষ্ঠানে। প্রায় তিন মাস ধরে এমন ভয়াবহ অবস্থার কারণে প্রবাসীদের অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ।
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, দেশটির সাংবিধানিক কাউন্সিল ৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল ফ্রেলিমোকে জয়ী ঘোষণার পর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে ফ্রেলিমোর বিরুদ্ধে বিরোধী দলসহ বেশ কিছু নির্বাচনী পর্যবেক্ষক ভোট কারচুপির অভিযোগ করেছেন। ফ্রেমিলোর প্রার্থী ড্যানিয়েল চাপোকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ঘোষণার পরপরই বিরোধীদলীয় প্রার্থী ভেনান্সিও মন্দলেন আন্দোলন শুরু করেন।
আন্দোলনে মোজাম্বিকের রাজধানী মাপুতু ছাড়াও নামপুলা, সিমুই, বেরাই, মকুবা ও আলতামুলুক শহর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটাতে চলমান আন্দোলনে বিভিন্ন দল-উপদল দেশজুড়ে লুটপাট চালাচ্ছে।
মোজাম্বিকের বেরাই শহরে অবস্থানরত বাঁশখালীর প্রবাসী বিএনপি নেতা ওমর কাজী জানান, গত কয়েক দিনে বাংলাদেশি ৫ শতাধিক দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট হয়েছে। তা ছাড়া অগ্নিসংযোগ ও হামলার শিকার হয়েছে বহু প্রতিষ্ঠান।
প্রবাসী বাঙালি কমিউনিটির সদস্য নাছির উদ্দীন জানান, মোজাম্বিকে বাংলাদেশিদের তিলে তিলে গড়ে তোলা দোকান ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের মালামাল লুট করছে সে দেশের বাসিন্দারা।
মোজাম্বিক প্রবাসী বাঙালি কমিউনিটির সভাপতি আলহাজ আনিসুর রহমান জানান, আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকে বাংলাদেশি দূতাবাস না থাকায় তারা কোনো আইনি সহায়তা পায় না। বাংলাদেশের সাথে মোজাম্বিকের কোনো ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও সেখানে হাজার হাজার বাংলাদেশি যুগ যুগ ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে আসছেন।
বাংলাদেশিদের চলমান এই সংকট থেকে উত্তরণে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসীরা।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জামশেদুল আলম জানান, আফ্রিকার মোজাম্বিকে বাংলাদেশি বিশেষ করে বাঁশখালীর প্রবাসীরা খুব অসহায় অবস্থায় রয়েছে বলে শুনেছি। প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যদের উদ্বেগের বিষয়টিও জেনেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। সূত্র : খবরের কাগজ