বৈধভাবে বিদেশে কাজ করতে যাওয়ার জন্য জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে (বিএমইটি) নিবন্ধিত হতে হয়। এই নিবন্ধন জেলা অফিস কিংবা অনলাইনে ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমে করা যায়। নিবন্ধিত হওয়ার পর কর্মীর কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ক্লিয়ারেন্স হিসেবে তাকে ‘স্মার্ট কার্ড’ দেওয়া হয়। এই কার্ড সংগ্রহ করে বিদেশে যেতে হয় কর্মীদের। তবে মাঝে মধ্যেই বিদেশগামীদের সরলতাকে কাজে লাগিয়ে প্রতারক চক্র ‘বিএমইটি স্মার্ট কার্ড’ জালিয়াতি করে। এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাংলাদেশি কর্মীরা।
মূলত কাজের অনুমতিপত্র, বৈধ এজেন্সি এবং পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে বিএমইটি স্মার্ট কার্ডের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে আবেদন করতে হয়। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে বিএমইটি থেকে স্মার্ট কার্ড প্রদান করা হয়। বিদেশে কাজের জন্য যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে এই স্মার্ট কার্ডটি দিয়ে তথ্য যাচাই-বাছাই করে থাকেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সেখানে অনেক সময় বিএমইটি স্মার্ট কার্ডটি নকল বলে শনাক্ত করেন তারা। তখন বিদেশগামীদের বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠানো হয়।
তবে আপনার বিএমইটি স্মার্ট কার্ডটি নকল বা জালিয়াতি করে তৈরি কিনা তা আগে থেকেই জানা যাবে। এর জন্য ‘আমি প্রবাসী’ মোবাইল অ্যাপ যেতে হবে। গুগল ক্রম মাধ্যমেও সেই অ্যাপে প্রবেশ করা যায়। সেই অ্যাপে প্রবেশ করার পর পাসপোর্ট নাম্বার দিলেই আপনার বিএমইটি কার্ডটি সঠিক কিনা তা দেখা যায়। যদি তথ্য ভুল থাকে বা জালিয়াতি করা হয় সেটিও বোঝা যাবে। তবে গ্রামাঞ্চল থেকে আসা বিদেশগামীরা অনেক সময় এই কার্ড জালিয়াতির শিকার হয়। পরে তাদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
মূলত জালিয়াতি চক্র অনেক সময় একজন ব্যক্তির ছবি ও তথ্য ব্যবহার করে একাধিক স্মার্ট কার্ড নকলভাবে তৈরি করে। সেই কার্ডগুলো দিয়েই বিদেশগামীদের বিমানবন্দরে পাঠানো হয়। সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা কার্ডটির তথ্য যাচাই করে ভুয়া বলে শনাক্ত করে। তাই বিদেশ যাওয়ার আগে বিএমইটি স্মার্ট কার্ডটি সঠিক কিনা সেটি জানাটা জরুরি।
বিএমইটি স্মার্ট কার্ড পাওয়া যাবে বিনামূল্যে: কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশে যেতে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ক্লিয়ারেন্স বাধ্যতামূলক। এই ক্লিয়ারেন্সের জন্য বিদেশগামী কর্মীরা পান একটি ইমিগ্রেশন স্মার্ট কার্ড। এই কার্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে সর্বমোট ৫০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা ছিল। এই ফি বাতিল করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
গত ১ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ের কর্মসংস্থান অনুবিভাগের উপসচিব মো. হেদায়েতুল ইসলাম মণ্ডলের সই করা এক চিঠিতে একথা জানানো হয়।
মন্ত্রণালয় থেকে বিএমইটির কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থানে অভিবাসন ব্যয় হ্রাসের লক্ষ্যে নির্ধারিত ইমিগ্রেশন কার্ড (স্মার্ট কার্ড) ফি বাবদ ২৫০ টাকা এবং স্মার্ট কার্ড সংশোধন ফি বাবদ ২৫০ টাকাসহ সর্বমোট ৫০০ টাকা আদায় বাতিল করা হলো। কোনও ফি ছাড়াই কিউআর কোড সম্বলিত বহির্গমন ছাড়পত্র ইস্যু অব্যাহত থাকবে এবং অনলাইনে নিশ্চিত তথ্যাদি থাকবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’ উৎস: দেশ রুপান্তর।