শিরোনাম

প্রকাশিত : ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:০৮ দুপুর
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি তরুণী খুন

হত্যার পর মিরাজ হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড দিয়ে আরনিমার দেহ গলিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন

স্বামী মিরাজ জাফরের সঙ্গে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণী আরনিমা হায়াত। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি আদালত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণী আরনিমা হায়াতকে হত্যার দায়ে তাঁর স্বামী মিরাজ জাফরকে ২১ বছর ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। তবে ন্যূনতম ১৬ বছর কারাভোগের পর তিনি প্যারোলে মুক্তির আবেদন করতে পারবেন।

২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী হওয়া আরনিমা (২০) তাঁর পরিবারের সম্মতি ছাড়াই মিরাজের (২৩) সঙ্গে ইসলামিক রীতিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আরনিমা হায়াত মেডিকেল সায়েন্সে পড়াশোনা করছিলেন এবং ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন।

বিয়ের পরে থেকেই আরনিমা তাঁর স্বামীর সহিংস আচরণের শিকার হন। আদালত জানিয়েছেন, হত্যার কয়েক ঘণ্টা আগে আরনিমা তাঁর বন্ধুকে মেসেজে লেখেন, ‘আমি ওকে ঘৃণা করি।’

আরনিমা তাঁর বন্ধুকে জানিয়েছিলেন, তিনি স্বামীর নির্যাতনের কারণে ভয় পেতেন এবং তাঁকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। তবে, মিরাজ এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে উত্তেজিত হয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।

হত্যার পর মিরাজ একটি হার্ডওয়্যার স্টোর থেকে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড কিনে আরনিমার দেহ গলিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন। পুলিশের কাছে মিরাজের মা ট্রিপল-জিরো (জরুরি) নম্বরে ফোন করলে আরনিমার দেহ উদ্ধার করা হয়।

নিউ সাউথ ওয়েলস সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ডেবোরা সুইনি রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বলেন, ‘মিরাজ জাফর আরনিমাকে নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং তাঁর প্রতি সহিংস আচরণ করতেন।’ হত্যার আগে মিরাজের পাঠানো মেসেজে দেখা যায়, আরনিমা তাঁকে বাড়ি ছাড়ার অনুরোধ করেছিলেন।

আদালতে আরনিমার মা মাহফুজা আক্তার কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমি জানতাম ও ভালো মানুষ নয়। আমরা ভেবেছিলাম, ও (আরনিমা) একদিন বুঝবে আর আমাদের কাছে ফিরে আসবে। কিন্তু ও বুঝতে পেরেছিল, তবে ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছিল।’

আরনিমার বাবা আবু হায়াত বলেন, ‘সে আমার মেয়েকে মেরে ফেলে এমনভাবে পুড়িয়েছে যে, আমি আর তাঁর মুখে চুমু খেতে পারব না।’

আদালত মিরাজকে ২১ বছর ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। ২০৩৮ সালে তিনি প্যারোলের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

এই মর্মান্তিক ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এটি পারিবারিক সহিংসতার বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। সূত্র : আজকের পত্রিকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়