অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন। গতকাল শনিবার (১৯ এপ্রিল) এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। সেই প্রতিবেদনের কিছু সুপারিশমালা নিয়ে হচ্ছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। সেই প্রতিবেদনের কিছু সুপারিশ দেখে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।
আজ রোববার (২০ এপ্রিল) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে বিশাল এক বার্তা দেন তিনি।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এমন কিছু প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে, যা এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক তো বটেই, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস ও নৈতিকতার সঙ্গেও বৈসাদৃশ্যপূর্ণ। প্রস্তাবনায় এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীদের বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনা ও আকাঙ্ক্ষা সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষিত হয়েছে। প্রতিবেদনের পরতে পরতে আঁকা হয়েছে পরিবার ব্যবস্থা ভেঙে ফেলার এক গভীর নীলনকশা।
তিনি আরও বলেন, অন্যান্য সরকার এবং এই সরকারের মাঝে একটি মৌলিক তফাত হলো—অন্যান্য সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয় আর এই সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে হাজারো শহীদের রক্তদানের ফলে। যাদের প্রাণোৎসর্গের ফলে এ সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, কমিশন তাদের বিশ্বাস ও মূল্যবোধকে থোড়াই কেয়ার করেছে। বরং প্রতিবেদনে তাদের চিন্তা ও বিশ্বাসকে অপমানের চেষ্টা লক্ষণীয়।
তিনি আরও বলেন, মূলত নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে পশ্চিমাদের অন্ধ অনুসারী একটি বিশেষ শ্রেণির নারীদের নিয়ে—যারা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস, সামাজিক মূল্যবোধ ও পরিবার ব্যবস্থা ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এই কমিশন এদেশে পশ্চিমা ধ্যান-ধারণা চাপিয়ে দিতে সচেষ্ট। তাদের সাথে দেশের সাধারণ মানুষের কোনো সম্পর্ক নেই।
অবিলম্বে আমরা ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ বিবর্জিত এই প্রতিবেদন বাতিল এবং বিতর্কিত কমিশন বিলুপ্ত করে এদেশের মানুষের চিন্তা-চেতনা এবং সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানুষদের নিয়ে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি করছি, যোগ করেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান।
পরে ওই পোস্টের কমেন্টস বক্সে শায়ক আহমাদুল্লাহ আরও বলেন, কমিশনের প্রস্তাবনা দেখলে মনে হয়, তারা পরিবার ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে। একদিকে পতিতাবৃত্তিকে প্রতিষ্ঠার কথা বলেছে, অপর দিকে বৈবাহিক ধর্ষণের নামে পরিবার ভাঙার ছক এঁকেছে। পশ্চিমারা যদি জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞান, তথ্য-প্রযুক্তি কিংবা অবকাঠামোতে আমাদের চেয়ে এক শত বছর এগিয়ে থাকে, পরিবার ব্যবস্থাপনা ও সুখী দাম্পত্যে আমরা তাদের চেয়ে দুই শত বছর এগিয়ে আছি।
সুতরাং তাদের থেকে আর যা হোক বস্তাপঁচা আদর্শ আর অপসংস্কৃতি আমদানি করার কোন মানে হয় না। যা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারও সাহস করেনি, তা শহীদদের রক্তের বিনিময়ে গঠিত সরকারকে দিয়ে করানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত তথাকথিত ভ্রষ্ট নারীবাদীরা।