পাকিস্তানের আইএসআই কর্মীরা বাংলাদেশের আসাম সীমান্তের কাছে উলফা ক্যাম্প আবার চালু করার জন্য কাজ করছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে যে খবর প্রকাশ করা হয়েছে তা ভুয়া ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
আজ শনিবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে খবরটিকে সম্পূর্ণ কাল্পনিক, মিথ্যা ও বানানো বলে দাবি করা হয়।
এতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার দুর্নীতিগ্রস্ত ও স্বৈরাচার শাসনব্যবস্থা উৎখাতের পর থেকে এই জাতীয় যেসব খবর প্রকাশ করা হয়েছে সেসব খবরের মতো এই খবরেও কোনো প্রমাণ সরবরাহ করা হয়নি এবং কোনো সূত্রের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
তবে একমাত্র আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। যিনি দাবি করেছেন, উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়া আগের মতো জঙ্গি কার্যকলাপ শুরু করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন না।
ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সন্দেহ করছে, বড়ুয়া শিগগিরই মুক্তি পেতে পারেন। যদিও বাস্তবে তিনি পলাতক এবং চীনে বসবাস করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এই সংবাদকে সম্পূর্ণ কাল্পনিক বলে উল্লেখ করেছে। বলা হয়েছে, ট্রিবিউনের কাছে এটি ‘এক্সক্লুসিভ’ থাকবে কারণ এটি কেবল এর কর্মীদের কল্পনাতেই রয়েছে। বাস্তবে নেই।
দ্য ট্রিবিউনের খবরটিতে বলা হয়, পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) বাংলাদেশের কর্মীদের সঙ্গে মিলে সীমান্তবর্তী এলাকায় ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা) এর প্রশিক্ষণ শিবির আবার চালু করার কাজ শুরু করছে। যা ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার ইঙ্গিত দেয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চপদস্থ সূত্রগুলো এই ইঙ্গিত দেয় যে, আইএসআই এমনকি উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়ার সঙ্গে দেখা করেছে। যিনি সম্প্রতি বাংলাদেশ ভ্রমণ করেছিলেন বলে জানা গেছে।
এছাড়া আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, এই হুমকির মধ্যে, আসামের মুখ্যমন্ত্রী শর্মা গত মাসে আশা প্রকাশ করেছিলেন যে, নির্বাসিত বড়ুয়া তার নিজ রাজ্যকে আবার অস্থিতিশীল করবেন না।
কোকরাঝাড়ে এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায়, শর্মা বলেছিলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত মতামত হল তিনি শান্তি চান। আমি তার সাথে কথা বলেছি। আমার মনে হয়নি তিনি আসামকে অস্থিতিশীল করতে চান। তিনি আলোচনার টেবিলে নাও আসতে পারেন, তবে আমি বিশ্বাস করি তিনি আসামে শান্তি বিঘ্নিত করতে চান না।’
তবে গোয়েন্দা সূত্রগুলো প্রকাশ করেছে, গত কয়েক মাস ধরে আসাম এবং অন্যান্য উত্তর-পূর্ব রাজ্যের কাছাকাছি বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি উলফা প্রশিক্ষণ শিবির পুনরায় চালু করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার শাসনামলে এই শিবিরগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল বলেও জানানো হয় ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণেই এই শিবিরগুলো আবার চালু করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। যে অস্থিরতার কারণে ৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে।