অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মো. নাহিদ ইসলাম। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।
যদিও বেশ কিছুদিন ধরে নাহিদ ইসলামের নতুন রাজনৈতিক দল গঠন এবং পদত্যাগের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। তার পদত্যাগের পর নাহিদকে নিয়ে ভারতের সাংবাদিক অর্ক দেব তার মূল্যায়ন তুলে ধরেছেন।
মঙ্গলবার অর্ক দেব তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে লিখেছেন, "নাহিদ ইসলামের সঙ্গে যখন এই ছবিটি তোলা হয়, তখন বাংলাদেশ সময় রাত ১টা ১০ মিনিট। এর আগে দেড় ঘণ্টা ধরে নানা বিষয়ে কথা হয়েছে। নাহিদ ইসলামের মুখাবয়বে ছিল ধীরস্থিরতা, নিরুত্তাপ মনোভাব এবং অবিচল বক্তব্যের ছাপ।" তিনি আরও লিখেছেন, "তবে আমার চোখে ভেসে ওঠে নাহিদ ইসলামের রক্তাক্ত হাত-পায়ের ছবি, যা ২০২২ সালের ২২ জুলাইয়ের প্রতিবেদনে উঠে এসেছিল। ওইদিন নাহিদ ইসলামকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে অত্যাচার করা হয়েছিল, তারপর চোখ, হাত ও পা বেঁধে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনা হয়তো অনেকেই ভুলে যেতে চাইবে, কিন্তু যারা ভুলে যেতে চাইবে তাদের নিয়ে আমি সন্দেহ করি।"
অর্ক দেব তার পোস্টে উল্লেখ করেন, "নাহিদ ইসলামের সেই দিনটি ছিল মৃত্যুর নয়, বরং জীবন ফিরে পাওয়ার দিন। ভাগ্যের জোরে তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন, যদিও তার অনেক বন্ধু এবং পরিচিত মুখ মারা গিয়েছিল। তবে নাহিদ ইসলাম জীবিত থেকে উঠে দাঁড়িয়েছেন। সেই সময়, যাদের মারের পরিকল্পনা ছিল, তারা পালিয়ে গিয়েছিল। নাহিদ ইসলাম এবং তার সহযোদ্ধারা নিজেদের সরকার গড়েছে, সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভুলও করেছে, তবে সবসময় চেষ্টা করেছে।"
অর্ক দেব আরও লিখেছেন, "এটা পরিষ্কার, নাহিদ ইসলাম এবং মাহফুজরা জানে তারা কী ধরনের রাজনীতি করতে চায়। তাদের মধ্যে আত্মপ্রশ্ন এবং নিজেকে জানার এক গভীর চেতনা রয়েছে। তাদের রাজনীতি কিংবা দর্শন পুরনো চিন্তাধারা অনুসরণ করে না। বরং তাদের আজকের রাজনৈতিক অবস্থান, চিন্তাভাবনা, একটি নতুন অবয়বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এজন্যই নাহিদ ইসলাম বেইলি রোডের বাংলো ছেড়ে, কনভয় ছাড়িয়ে, আবার রাস্তায় ফিরে এসেছে। সেই রাস্তাতেই, যেখানে র্যাব তাকে চোখ বেঁধে ফেলে রেখেছিল।"
অর্ক দেব আরো বলেন, "নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধবাদীদের চোখ বেঁধে ফেলার ঘটনাটি, আসলে একটি নতুন পথে হাঁটার সূচনা। তার স্মৃতিতে আজও জ্বলজ্বল করে সেই দিনগুলো। মনে পড়ে, ব্যাডমিন্টন কোর্টে দাঁড়িয়ে তার মন্তব্য ছিল, 'ভাই, নতুন একটি বাসা খুঁজতে হবে।' আসলে, আমরা সবাই নতুন বাসা খুঁজছি, যেটি সবার জন্য, পক্ষ-বিপক্ষের, প্রান্তিকের—বিশ্বজুড়ে যাদের উপর কালশিটে লেগে আছে, তাদের সবার জন্য।"