হ্যাপী আক্তার: হঠাৎ করে জ্বর হওয়ার অভিজ্ঞতা কম-বেশি সবারই রয়েছে। বর্ষার জ্বলীয় আবহাওয়ায় বাড়ছে জ্বরের প্রবণতা। সেই সঙ্গে বর্ষায় মশার উৎপাতের ফলে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়াসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাবও বাড়ছে। বিবিসি বাংলা
মানুষের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শরীরের তাপমাত্রা এর বেশি হলেই তখন জ্বর বলা হয়ে থাকে। জ্বর হলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেয়ে ঘরেই চিকিৎসা নেয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন কোনো কোনো সময় জ্বর মারাত্মক প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, জ্বরের অনেক প্রকারভেদ রয়েছে। কিছু কিছু জ্বর আপনা আপনি সেরে যায়। আবার কিছু কিছু জ্বরের ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
জ্বরের প্রকার ভেদ: চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় জ্বরকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়।
কন্টিনিউড: কেউ জ্বরে আক্রান্ত হলে ২৪ ঘণ্টায় যখন শরীরের তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বা ১.৫ ফারেনহাইট তারতম্য হয়, কিন্তু জ্বর পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় আসে না, সেটাকে বলা হয় কন্টিনিউড জ্বর।
রেমিটেন্ট: যখন ২৪ ঘণ্টায় জ্বরের মাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৩ ফারেনহাইটের মধ্যে তারতম্য হয়, সেটাকে বলে রেমিট্যান্ট জ্বর।
ইন্টারমিটেন্ট: যখন জ্বর দৈনিক কয়েক ঘণ্টা করে শরীরে থাকে, আসে এবং যায়, তখন তাকে বলে ইন্টারমিটেন্ট জ্বর।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. তৌফিক আহমেদ বলছেন, অনেকগুলো কারণে জ্বর হতে পারে। সবচেয়ে কমন হলো ঠাণ্ডা লেগে জ্বর হওয়া বা সর্দি-কাশির কারণে জ্বর। এর বাইরে শরীরের ভেতরে কোনো কারণে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের আক্রমণ হলে, অর্থাৎ ইনফেকশন হলে জ্বর হতে পারে। প্রোটোজোয়া বা ফাঙ্গাস ইনফেকশনের কারণেও জ্বর হতে পারে।
জ্বর এলে দেহের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। শরীরে যন্ত্রণাও হয়। জ্বর এলে শরীরে দুর্বলতা দেখা দেয়। এই সময় হালকা গরম পানিতে গোসল করা উচিত। গোসল করলে আপনার জ্বর কমে যাবে এবং পেশী শিথিল হবে। হালকা গরম পানিতে গোসল করলে শরীরের ব্যথাও চলে যায়। জ্বর খুব বেশি হলে খুব ঠান্ডা পানিতে গোসল করা উচিত নয়। এটা করা ক্ষতিকর হতে পারে।
চিকিৎসকরা বলছেন, শুধু মাথায় পানি দিলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আসবে না। ডা. তৌফিক আহমেদ বলেছেন, ''আমরা যেটা বলি, জ্বর হলে সারা শরীর সাধারণ ভেজা কাপড় দিয়ে মুছিয়ে দিতে। কারণ সারা শরীরের মধ্যে মাথা খুব ছোট একটি অংশ। ফলে শুধু মাথায় পানি দিলে উপকার পাওয়া যাবে না। সবচেয়ে ভালো হবে, শরীরের সব জায়গা স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে ভেজা কাপড় দিয়ে মুছিয়ে দেয়া''।
সংক্রমণের ঝুঁকি না থাকলে গোছল করলে কোন ক্ষতি হয় না বলে তিনি বলছেন। বরং অনেক সময় উচ্চ তাপমাত্রা থাকলে রোগীদের গোছল করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
এইচএ