প্রচণ্ড গরমে এসি ছাড়া কি আর চলে? না, চলেই না-এমনটা ভাবেন অনেকেই। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক কিছু পদক্ষেপ মেনে চললেই এসি ছাড়াও ঘরকে অনেকটা ঠান্ডা রাখা সম্ভব। এতে যেমন বিদ্যুৎ বাঁচবে, তেমনি পরিবেশেরও উপকার হবে। খবর বিবিসি বাংলা
চলুন জেনে নেওয়া যাক, গরমে এসি ছাড়াই ঘর ঠান্ডা রাখার ১৫টি কার্যকর টিপস-
১.জানালা কখন খুলবেন, কখন বন্ধ রাখবেন: গরমকালে দিনের বেলায় জানালা বন্ধ রাখুন, বিশেষ করে পশ্চিম ও উত্তর দিকের জানালা। মোটা, হালকা রঙের সুতির পর্দা ব্যবহার করুন। পর্দার বাইরে সাদা কাপড় লাগানো থাকলে তা সূর্যরশ্মি প্রতিফলিত করবে। সন্ধ্যার পর জানালা খুলে দিন, যেন ঠান্ডা বাতাস ঢুকতে পারে।
২. জানালায় ও দেয়ালে প্রলেপ দিন: হিট রেসিস্টেন্ট উইন্ডো ফিল্ম ঘরের ভেতরে সূর্যতাপ ঢুকতে দেয় না। না পেলে জানালার কাঁচে সাদা কাগজ লাগালেও উপকার মিলবে। দেয়ালে ও ছাদে ইনসুলেশন করালে গরমেও ঘর ঠান্ডা থাকে।
৩. ছাউনি দিন জানালায়: পূর্ব ও পশ্চিমমুখী জানালায় হালকা রঙের ছাউনি দিলে সূর্যের তাপ ৭৭ শতাংশ পর্যন্ত আটকানো যায়।
৪. দেয়াল-মেঝে ও আসবাব হালকা রঙের করুন: গাঢ় রঙের দেয়াল ও আসবাব আলো শোষণ করে, ঘর গরম হয়। হালকা রঙ তাপ প্রতিফলিত করে। মেঝেতে সাদা টাইলস বা পোরসেলিন ব্যবহার করলে তাপ কম অনুভূত হয়।
৫. ছাদ ঠান্ডা রাখুন: সাদা রঙের ছাদ সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে, গাঢ় রঙ তা শোষণ করে। ছাদে ঘাস বা ছাদবাগান করলে তাপমাত্রা অনেকটা কমে আসে।
৬. সিলিং ফ্যান ঘড়ির উল্টো দিকে ঘোরান: ফ্যানের ব্লেড যদি ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ঘোরে, তাহলে তা গরম বাতাস বাইরে ঠেলে দেয় এবং ঘর ঠান্ডা করে
৭. ঠান্ডা বাতাসের কায়দা: একটি পাত্রে বরফ রেখে তার পাশে ফ্যান চালালে ঠান্ডা বাতাস ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। একইভাবে ঠান্ডা পানির বালতি রেখেও ফল পাওয়া যায়।
৮. এক্সস্ট ফ্যান ব্যবহার করুন: এক্সস্ট ফ্যান ঘরের গরম বাতাস বাইরে পাঠিয়ে দেয়, বাইরের ঠান্ডা বাতাস ভিতরে আনে। রান্নাঘর ও টয়লেটে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
৯. সুতির বিছানা-বালিশ ব্যবহার করুন: পলেস্টার বা সিল্ক তাপ ধরে রাখে। ১০০ শতাংশ সুতির চাদর ও বালিশ ব্যবহার করলে আরামদায়ক ঘুম হবে। চাইলে মাদুর বা চাটাইয়েও ঘুমানো যেতে পারে।
১০. এলইডি বাতি ব্যবহার করুন: হ্যালোজেন বা ইনসানডেসেন্ট বাতি প্রচুর তাপ ছড়ায়। এলইডি বাতি ব্যবহার করলে তাপমাত্রা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
১১. রান্নার সময় জেনে বুঝে রান্না করুন: রান্না ঘরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। অল্প সময়ে রান্না হয় এমন খাবার বেছে নিন, যাতে চুলার ব্যবহার কম হয়।
১২. বৈদ্যুতিক যন্ত্রের ব্যবহার কমান: ফ্রিজ, কম্পিউটার, টিভি চালু থাকলে ঘর গরম হয়। যন্ত্র বন্ধ রাখলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়, ঘরও ঠান্ডা থাকে।
১৩. গাছ লাগান, ছায়া পেতে থাকুন: বাড়ির আশপাশে ছায়াদানকারী গাছ লাগান। এতে ঘরে সরাসরি সূর্যরশ্মি পড়ে না। ঘরের ভেতরে মানিপ্ল্যান্ট, অ্যালোভেরা, অ্যারিকা পাম রাখতে পারেন।
১৪. ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন: বাংলাদেশের আর্দ্র আবহাওয়ায় ডিহিউমিডিফায়ার কাজ করে বেশ ভালো। এটি ঘরের আর্দ্রতা শোষণ করে ঠান্ডা অনুভব করায়।
১৫. নিজেকে ঠান্ডা রাখুন: দিনে অন্তত একবার ঠান্ডা পানিতে গোসল করুন। পাতলা, ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরুন। পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
এসব নিয়ম মেনে চললে, গরমের সময় এসি ছাড়াও আপনার ঘর থাকবে আরামদায়ক ও ঠান্ডা।