শিরোনাম
◈ ‘বঙ্গবন্ধু রেল সেতু’র নাম পরিবর্তন ◈ হাসান আরিফের মৃত্যুতে উপদেষ্টা পরিষদের শোক ◈ গত ১৫ বছর বাংলাদেশের গণমাধ্যম অনেক ক্ষেত্রে তাঁবেদারি করেছে : প্রেস সচিব  ◈ উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ ভাতা বৃদ্ধির দাবীতে শাহবাগে সড়ক অবরোধ করেছেন চিকিৎসকরা ◈ রাজধানীর যেসব সড়ক কাল বন্ধ থাকবে, বিকল্প পথে চলার পরামর্শ ◈ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রোহিঙ্গাদের ফেরাতে যে কৌশলের কথা জানালেন ◈ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি নিয়ে যা বললেন চিফ প্রসিকিউটর (ভিডিও) ◈ রাখাইন রাজ্যের মিলিটারি সদরদপ্তর আরাকান আর্মির দখলে, সতর্ক উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত ◈ লন্ডন-যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ কোটি টাকা পাচার : হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

প্রকাশিত : ২৮ অক্টোবর, ২০২৪, ০৮:১৩ রাত
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৬:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সেরা পাঁচ দেশ শিশুদের লালন-পালনের জন্য 

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন।। যেসব পরিবার নিজ দেশ ছেড়ে অন্য কোনও দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের চিন্তা করছেন তাদের মনে একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খায়- কোন দেশটি তার সন্তানকে লালন পালনের জন্য সবচেয়ে উপযোগী হবে?

এক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ও বসবাসযোগ্য দেশগুলোর র‍্যাঙ্কিং আপনার জন্য সহায়ক হতে পারে।

তবে এই র‍্যাঙ্কিং দেশগুলোর গড় আয় বা আর্থিক স্থিতিশীলতা ভিত্তিতে করা হয়নি, বরং গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শিশুদের স্বাস্থ্য, মানসিক প্রশান্তি, শিক্ষার গুণগত মান, পারিবারিক ছুটির নীতির ওপর।

এমনকি কোন দেশগুলোয় সবুজের সমারোহ এবং শিশুদের জন্য যথেষ্ট খেলার মাঠ রয়েছে, সেই প্রশ্নও আপনার থাকতেই পারে।

ইউনিসেফ এই বিষয়গুলো দেখে শিশুর সুস্থতার একটি 'রিপোর্ট কার্ড' তৈরি করে।

এটা মনে রাখা জরুরি যে, এই তালিকার প্রতিটি দেশই ধনী। এ কারণে প্রবাসী সব পরিবার এই নিবন্ধের ব্যাপারে সমানভাবে আগ্রহী নাও হতে পারে।

তবে এখানে দেওয়া তথ্যের মাধ্যমে এটি স্পষ্ট হবে যে বিশ্বের কোন দেশগুলো শিশুদের লালন-পালনের জন্য সেরা৷


জাপান : শিশুদের সুস্থতার বিষয়ে ইউনিসেফের ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী শারীরিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে জাপান প্রথম স্থানে রয়েছে।

দেশটি মূলত শিশু মৃত্যু ঠেকানো এবং জীবনের প্রথম দিকে স্থূলতা প্রতিরোধ করার দিকে নজর দেয়।

ইউনিসেফের ২০২২ সালের রিপোর্ট কার্ডে পরিবেশের দিক থেকে জাপান দ্বিতীয় স্থানে ছিল। এর মধ্যে শহরগুলোয় বনায়ন এবং ট্রাফিক নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল।

জাপানে শৈশবে স্থূলতার হার সবচেয়ে কম। এর পাশাপাশি, শিশুমৃত্যুর হার কম, বায়ু ও পানি দূষণের মাত্রাও (যা শিশুদের প্রভাবিত করে) কম।

এটি যেকোনও পরিবারের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ দেশগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়।

এখানে ট্র্যাফিক দুর্ঘটনা যেমন কম ঘটে, তেমনি যেকোনও দেশের তুলনায় জাপানে খুনের হার সবচেয়ে কম, প্রতি লাখে মাত্র দশমিক দুই জন মানুষ।

যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে এই হার পাঁচ দশমিক তিন শতাংশ, কানাডায় এক দশমিক আট শতাংশ এবং অস্ট্রেলিয়ায় দশমিক আট শতাংশ।

টোকিওর বাসিন্দা মামি মাকিগ, যিনি এখন লন্ডনে থাকেন, তিনি বিবিসিকে জানিয়েছেন যে নিরাপত্তা মানে হচ্ছে পরিবারগুলিকে আর উদ্বিগ্ন হতে হবে না, সেইসাথে শিশুরা অবাধে তাদের স্বাধীনতা উপভোগ করতে পারবে।

"ছয় বছর বয়স থেকে বাচ্চারা নিজেরাই স্কুলে যেতে পারে," মামি মাকিগ বলেন৷ স্কুল হাঁটার দূরত্বের মধ্যে না থাকলে তারা একা একাই বাস বা ট্রেনে যেতে পারে।

শিশুরা টোকিওর চারপাশে হাঁটতে পারে এবং নিজে নিজে স্কুলে যেতে পারে। এটি ওই দেশে স্বাভাবিক কারণ সেখানকার পরিবেশ খুবই নিরাপদ। বাচ্চাদের নিয়ে কেউ তেমন দুশ্চিন্তা করে না, কারণ এর প্রয়োজন নেই।

স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা ছাড়াও, জাপানে বিশ্বের অন্যতম সেরা শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। ইউনিসেফের উন্নয়ন সহযোগী ওইসিডি’র তথ্য অনুসারে, এর শিক্ষা ব্যবস্থা ৭৬টি দেশ এবং অঞ্চলগুলির মধ্যে ১২তম স্থানে রয়েছে।

যেসব বাবা মায়েরা কাজ করেন, কোম্পানিগুলো তাদের পেইড প্যারেন্টাল লিভ বা বেতনভুক্ত ছুটি দিয়ে থাকে।

কর্মজীবী পিতামাতা ১২ মাসের মধ্যে যে কোনও সময় এই ছুটি নিতে পারেন এবং এই ছুটি কাটানোর জন্য তাদের কোনও বেতন কাটা হয় না। দেশটিতে পুরুষদের ছুটির বিষয়ে আরও ছাড় দেয়ার কাজ চলছে।

মাকিগের মতে, মজার বিষয় হচ্ছে, জাপানে পরিবারগুলোর জন্য এত সুবিধা থাকা সত্ত্বেও, স্থানীয় মানুষরা এতে খুশি নয় এবং তারা কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করে।

"আপনি অনেক হতাশার কথা শুনতে পারেন, কারণ আমরা অন্যান্য দেশের ইতিবাচক দিকগুলি দেখি এবং জাপানের সাথে তুলনা করি," তিনি বলেন।

"এটি একটি সাংস্কৃতিক বিষয়ও। আপনি নম্রতার খাতিরে অতিরঞ্জিত কিছু বলতে চাইবেন না, কিন্তু আমি মনে করি জাপান শিশুদের লালন-পালনের জন্য খুব চমৎকার একটি জায়গা।"

এস্তোনিয়া: ইউনিসেফের সার্বিক র‍্যাঙ্কিংয়ে এস্তোনিয়ার অবস্থান খুব একটা ওপরে নয়, তবে দেশটি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিকে বেশ ভালো পারফর্ম করছে।

অন্যান্য ধনী দেশের তুলনায় এখানকার শিশুরা কম বায়ু ও শব্দ দূষণ এবং কীটনাশকের সংস্পর্শে আসে।

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, গ্রেট ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে এস্তোনিয়ায় বেশি সবুজ স্থান রয়েছে।

শিশুরাও বাড়ির কাছাকাছি খেলার মাঠ এবং অন্যান্য বিনোদনমূলক সুবিধা উপভোগ করতে পারে।

এস্তোনিয়ায় কম ওজন নিয়ে শিশু জন্ম নেয়ার হার বিশ্বের দ্বিতীয়-সর্বনিম্ন এবং প্রসূতি মায়ের প্রসবপূর্ব যত্নের গুণমানেও দেশটি বেশ এগিয়ে।

সম্ভবত এস্তোনিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক এখানকার শিশুদের গণিত, বিজ্ঞান এবং ভাষাগত দক্ষতা এশিয়ার বাইরের অন্য যেকোনও দেশের তুলনায় বেশি। এখানে ডিজিটাল দক্ষতার ওপরও জোর দেয়া হয়।

"কিন্ডারগার্টেনগুলোতে, রোবোটিক্স, স্মার্ট ট্যাবলেটসহ আরও অনেক কিছু রয়েছে, যার মাধ্যমে তাদেরকে গেম-ভিত্তিক শিক্ষা দেয়া হয়," বলেছেন অ্যান-মাই মিসাক। তিনি এস্তোনিয়ার শিক্ষা ও যুব বোর্ডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক, তিনি মূলত তার দেশের প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে গবেষণা করেন৷

এই পদ্ধতিতে শেখা রোবোটিক্স পড়ার চাইতেও উপকারী।


সাম্প্রতিক ওইসিডি রিপোর্টে দেখা গেছে যে, এস্তোনিয়ায় গড়ে পাঁচ বছর বয়সী শিশু যুক্তরাষ্ট্র ও ইংল্যান্ডের তুলনায় সামাজিক-মানসিক দক্ষতায় ভালো পারফরম্যান্স করেছে।

তারা যেমন অন্যান্য শিশুদের সাথে মিলেমিশে কাজ করতে পারে, পাশাপাশি আবেগ অনুভূতিও বুঝতে পারে।

এই শিশুদের নিজেদের উপর ফোকাস করার ক্ষমতা, নানাভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা, স্মৃতিশক্তি এবং আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা, ওইসিডি গড় স্কোরের চেয়ে বেশি।

যেসব দেশে 'পারিবারিক ছুটি' দেয়া হয়, তাদের মধ্যে সবচেয়ে উদার নীতির দেশগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে এস্তোনিয়া।

নারীরা ১০০ দিনের মাতৃত্বকালীন ছুটি পেতে পারেন এবং পুরুষরা ৩০ দিনের পিতৃত্বকালীন ছুটি পেতে পারেন।

পরে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তারা বেতনসহ আরও ৪৭৫ দিনের ছুটি পেতে পারেন। এই ছুটি বাবা মায়েদের নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়া বা নিজের সুবিধা বুঝে খণ্ডকালীন ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। শিশুর বয়স তিন বছর না হওয়া পর্যন্ত এই ছুটি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

৬০ দিন পর্যন্ত বাবা-মা দুজনই বাড়িতে থাকতে পারেন এবং কোম্পানির কাছ থেকে টাকা পেতে পারেন।

সন্তান ১৪ বছর না হওয়া পর্যন্ত বাবা-মা দুজনই ১০টি অতিরিক্ত ছুটি পান। (এই ছুটিগুলি বিদেশিসহ এস্তোনিয়ার অস্থায়ী এবং স্থায়ী দুই ধরনের বাসিন্দারাই পাবেন)।

চারপাশের পরিবেশের জন্য স্পেনকে ইউনিসেফের  র‍্যাঙ্কিংয়ে সর্বোচ্চ রেট দেওয়া হয়েছে।ছবির উৎস,Getty Images
ছবির ক্যাপশান,চারপাশের পরিবেশের জন্য স্পেনকে ইউনিসেফের র‍্যাঙ্কিংয়ে সর্বোচ্চ রেট দেওয়া হয়েছে।

স্পেন: বিশেষ করে কম শিশুমৃত্যুর হার এবং কম বায়ু ও পানি দূষণের কারণে শিশুদের অসুস্থতার হার অনেক কম হওয়ায় চারপাশের পরিবেশের জন্য স্পেনকে ইউনিসেফের র‍্যাঙ্কিংয়ে সর্বোচ্চ রেট দেওয়া হয়েছে।

ইউনিসেফের মতে, সামাজিক, শিক্ষাগত এবং স্বাস্থ্য পরিষেবায় সামগ্রিকভাবে কম পারফরম্যান্স সত্ত্বেও, স্পেনের শিশুদের সুস্থতার হার অনেক বেশি।

শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিক থেকে দেশটি তৃতীয় এবং মৌলিক সাক্ষরতা ও সামাজিক দক্ষতায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে।

এখানকার শিশুদের কাছে যখন জানতে চাওয়া হয় যে তাদের পক্ষে বন্ধুত্ব করা সহজ কি না, ৮১ শতাংশ উত্তর দেয়- হ্যাঁ। এই স্কোর নেদারল্যান্ডসের সমান।

অন্যান্য ধনী দেশের তুলনায় স্পেনে প্রাপ্তবয়স্কদের আত্মহত্যার হার কম। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের তুলনায় দেশটিতে আত্মহত্যার হার এক-তৃতীয়াংশ কম।

স্প্যানিশ সমাজে শিশুদের রেস্তোরাঁ বা পানশালায় নিয়ে যাওয়াকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করা হয়। গভীর রাতে শিশুকে নিয়ে একটি পরিবার দেখাও সেখানে সাধারণ দৃশ্য।

লরি জাইনো, যিনি ১৫ বছর আগে শিকাগো থেকে মাদ্রিদে চলে এসেছেন, তিনি এই পরিসংখ্যান দেখে অবাক হননি। তিনি জানান, স্প্যানিশ সংস্কৃতিতে শিশুদের স্বাগত জানানো হয়।

"এই সমাজে, আপনি বাচ্চাদেরকে যেকোনও জায়গায় নিয়ে যেতে পারেন, যেমন রেস্তোরাঁ বা পানশালা। মাঝরাতে একটি ছোট শিশুকে নিয়ে পরিবারের ঘুরে বেড়ানো এখানে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক বিষয়।"

তিনি বলেন, "শিশুকে শান্ত ও ভদ্র রাখা নিয়ে বাবা মায়েরা বেশ চাপের মধ্যে থাকেন যেন তারা অন্য মানুষদের বিরক্ত না করে। কিন্তু এখানে সেই চাপ নেই। স্পেনে কেউ এটা নিয়ে চিন্তা করে না। এখানে সবাই বেশ হাসি-খুশি এবং উচ্চস্বরে কথা বলে, সবাই পরিবার নিয়ে বেরিয়ে পড়ে এবং তাদের সময় উপভোগ করে।"

প্যারেন্টাল লিভ বা ছুটির জন্য, মা ও বাবা দু'জন এমনকি তারা ফ্রিল্যান্সার হলেও শতভাগ বেতনসহ ১৬ সপ্তাহ ছুটি পান।

প্রত্যেক মা তিন বছরের আনপেইড লিভ বা অবৈতনিক ছুটি নিতে পারেন বা তারা তাদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনতে পারেন।

স্পেনের যেসব বাসিন্দাদের সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার (সোশ্যাল সিকিউরিটি) নিবন্ধন আছেন তারা সবাই এই সুবিধা পেতে পারেন, তবে শর্ত থাকে যে তারা গত সাত বছরে কমপক্ষে ১৮০ দিনের বকেয়া পরিশোধ করেছেন।

তবে অন্যান্য দেশের মতো এখানেও কিছু অপূর্ণতা রয়েছে। যেমন, দেশটিতে পর্যাপ্ত ডে কেয়ার সেন্টার বা শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র নেই। এখানকার ৩৩ শতাংশ বাবা মা জানিয়েছেন যে এখানে পর্যাপ্ত হারে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র থাকলে ভালো হতো।

বাবা-মায়ের এমন ভাবনার হার অন্যান্য ধনী দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি হলেও এটা স্পষ্ট যে স্পেন শিশুদের লালন পালনের জন্য সেরা দেশগুলির মধ্যে একটি।


ফিনল্যান্ড : ইউনিসেফের র‍্যাঙ্কিংয়ে ফিনল্যান্ডের অবস্থান পঞ্চম। দেশটি তিনটি বিভাগের মধ্যে দু'টিতে বেশ ভালো স্কোর করেছে।

শিশু সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পরিবেশের জন্য প্রথম স্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড (যেমন- বায়ুর গুণমান)।

শিশুদের চারপাশের পরিবেশের ক্ষেত্রে (যেমন - স্কুল, ট্রাফিক পরিস্থিতি এবং সবুজ স্থান) দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।

শিশুদের একাডেমিক এবং গণিতের দক্ষতার ক্ষেত্রে ফিনল্যান্ড শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর একটি। যেখানে বাবা মায়েরা সন্তানের স্কুলের কাজ নিয়ে অনেক খোঁজখবর রাখেন।

পাঁচ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম, যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অর্ধেক।

মাতৃত্বকালীন ছুটির ক্ষেত্রেও ফিনল্যান্ড বেশ উদারনীতি মেনে চলে। মায়েরা আট সপ্তাহের মাতৃত্বকালীন ছুটি পান।

এছাড়া মা ও বাবা একসাথে ১৪ মাসের বেতনভুক্ত ছুটি পান। অর্থাৎ এই ছুটি বাবা-মা ভাগ করে কাটাতে পারবেন।

শিশুর বয়স তিন বছর না হওয়া পর্যন্ত অতিরিক্ত ছুটির কাটানোর ব্যাপারে আবেদন করা যেতে পারে।

এই সুবিধাটি শুধুমাত্র ফিনল্যান্ডের বৈধ বাসিন্দারা পাবেন যারা ফিনল্যান্ড বা যেকোনও নর্ডিক, ইইউ বা ইইএভুক্ত দেশে সন্তান জন্ম দিয়েছেন এবং শিশুর জন্মের কমপক্ষে ১৮০ দিন আগে যারা স্বাস্থ্য বীমা করেছেন।

ফিনল্যান্ডে ভীষণ ঠান্ডা পরলেও সেই অনুযায়ী পোশাক নির্বাচন করলে চলাফেরা সহজ হয়ে যায়।ছবির উৎস,Getty Images
ছবির ক্যাপশান,ফিনল্যান্ডে ভীষণ ঠান্ডা পরলেও সেই অনুযায়ী পোশাক নির্বাচন করলে চলাফেরা সহজ হয়ে যায়।
হ্যাডলি ডিন একজন ব্রিটিশ নাগরিক, তার পাঁচটি সন্তান রয়েছে এবং তিনি তার পরিবারের সাথে পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র ও ফিনল্যান্ডে বসবাস করেছেন।

তিনি বলেছেন যে তিনি দ্বিতীয়বার তার পরিবারের সাথে ফিনল্যান্ডে বসবাস করছেন এবং এখানে তার অভিজ্ঞতা দুর্দান্ত।

তার মতে, এখানে সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, দেশটিতে সবুজ স্থানের পরিমাণ অনেক, এমনকি এর রাজধানী হেলসিঙ্কিও অনেক সবুজ (অন্যান্য ধনী দেশের তুলনায় ফিনিশ শহরগুলোয় সবুজ স্থানের সংখ্যা সর্বাধিক)।

এখানে সবুজ এলাকা শুধু পার্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। "ফিনল্যান্ডের মধ্যে যা আলাদা, তা হচ্ছে বাগানগুলো একদম বুনো এবং একদম প্রাকৃতিক," বলেছেন হ্যাডলি ডিন৷ এগুলি অনেকটা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত প্রাকৃতিক বনের মত, যোগ করেন তিনি।

"প্রাকৃতিক পরিবেশে বসবাস করা না করার সাথে মানসিক উদ্বেগ এবং হতাশা কমবেশি হওয়ার দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে, তাই এটি ফিনল্যান্ডের বেশ ইতিবাচক দিক।"

কিন্তু ফিনল্যান্ডের ঠান্ডা ও অন্ধকার রাতের কী হবে? হ্যাডলি ডিনের মতে, এই মূল্য দিতে তার কোনও সমস্যা নেই।

"আপনি এখানে থাকতে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন। আপনি সেই অনুযায়ী পোশাক নির্বাচন করুন। আপনি যখন বাইরে যান, তখন যদি জুতাগুলোয় স্পাইক থাকে তাহলে এখানে চলাফেরা সহজ।"

এখানকার গ্রীষ্মকাল দুর্দান্ত কারণ এখানে ২২ ঘণ্টা সূর্যালোক থাকে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়