শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৫ মার্চ, ২০২৫, ০৬:১০ বিকাল
আপডেট : ২৬ মার্চ, ২০২৫, ০৩:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যে কারণে সাহাবাদের না খেয়ে রোজা রাখতে নিষেধ করেন নবীজি

সিয়াম সাধনার মাহে রমজান। এ মাসে রমজানের রোজা যেমন ফরজ করা হয়েছে, তেমনি মানুষের স্বাস্থ্যের প্রতিও খেয়াল করা হয়েছে। এমনভাবে রোজা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে, যাতে শরীর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মানুষ মৃত্যুমুখে পতিত হয়।

মহা গ্রন্থ আল কোরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন,یُرِیۡدُ اللّٰہُ بِکُمُ الۡیُسۡرَ وَلَا یُرِیۡدُ بِکُمُ الۡعُسۡرَ ۫ وَلِتُکۡمِلُوا الۡعِدَّۃَ وَلِتُکَبِّرُوا اللّٰہَ عَلٰی مَا ہَدٰىکُمۡ وَلَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজটাই চান, কঠিন করতে চান না।  যাতে তোমরা রোজার সংখ্যা পূরণ করে নাও আর আল্লাহ তোমাদেরকে যে পথ দেখিয়েছেন, সেজন্য আল্লাহর তাকবির পাঠ কর, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। (সুরা বাকারা আয়াত: ১৮৫)

রসুলুল্লাহ সা. বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ মুসাফিরের জন্য রোজা, নামাজের অর্ধেক এবং গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিণীর জন্য রোজার ক্ষেত্রে সুযোগ রেখেছেন। (তিরমিজি, হাদিস ৭১৫)

রমজান ও রোজায় যেন স্বাস্থ্যহানি না ঘটে, সে বিষয়ের প্রতি ইসলাম বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। ইসলামে লাগাতার না খেয়ে রোজা রাখা নিষিদ্ধ। এ বিষয়ে হযরত আবু হুরায়রা রা. সূত্রে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সা. আমাদের সাওমে বিসাল তথা লাগাতার না খেয়ে রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন। সাহাবারা জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রসুল, আপনি তো তা করে থাকেন? রসুলুল্লাহ সা. বলেন, তোমরা আমার মতো হতে পারবে না, আমাকে আমার রব পানাহার করান।

তার পরও কোনো কোনো সাহাবি অতি আগ্রহে রসুলুল্লাহ সা.-এর অনুসরণে লাগাতার না খেয়ে রোজা রাখতে শুরু করেন। একাধারে কয়েক দিন এভাবে যাওয়ার পর ঈদের চাঁদ উঠে যাওয়ায় সবাই রোজা সমাপ্ত করতে বাধ্য হয়, তখন রসুলুল্লাহ সা. সেই সব সাহাবিকে ধমকিস্বরূপ বলেন, ‘যদি চাঁদ না উঠত, তাহলে আমি আরো দীর্ঘ করতাম। (মুসলিম, হাদিস: ১১০৩)
 
রমজানে স্বাস্থ্যসচেতনতার জায়গা থেকে সাহির খাওয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। সাহির খাওয়াকে ইসলামে ইবাদত হিসেবে দেখা হয়েছে।

রোজা রাখার দরুন যাতে স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব না পড়ে, সে জন্য রসুলুল্লাহ সা. সাহির খেতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ اسْتَعِينُوا بِطَعَامِ السَّحَرِ عَلَى صِيَامِ النَّهَارِ وَبِالْقَيْلُولَةِ عَلَى قِيَامِ اللَّيْلِ অর্থাৎ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সা. বলেন, তোমরা সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে দিনে রোজা রাখার জন্য, দিনে বিশ্রামের মাধ্যমে রাতে নামাজে দাঁড়ানোর জন্য সাহায্য গ্রহণ করো। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৯৩)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. সূত্রে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সা. বলেন, তোমরা এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও সাহির খাও। (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস: ৩৪৭৬)

স্বাস্থ্যসচেতনতার জায়গা থেকেই রমজানে দ্রুত ইফতারের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। হযরত আমর ইবনে মাইমুন রহ. বলেন, রসুল সা. ও সাহাবিরা সবার আগে তাড়াতাড়ি ইফতার করতেন আর সবার চেয়ে দেরিতে সেহরি খেতেন। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭৫৯১)

মহিমান্বিত এ মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের রোজা, ও এ মাসে আমাদের ইবাদতগুলোকে কবুল করুন। আমিন।  উৎস: সময়নিউজটিভি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়