শিরোনাম
◈ গৃহযুদ্ধের শঙ্কা, অচল হয়ে যেতে পারে ইসরায়েলের অর্থনীতির চাকা! ◈ গাজার একমাত্র ক্যান্সার হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দিল ইসরায়েল ◈ হাসিনাকে বাদ দিয়ে বিকল্প নেতৃত্ব, যেভাবে দেখছে আওয়ামী লীগ ◈ আজ বিশ্ব পানি দিবস, বাংলাদেশের ৪১ শতাংশ মানুষ নিরাপদ পানি পায় না ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে চবিতে বিক্ষোভ ◈ বিশ্বকাপ বাছাই, অনেক কষ্টে উরুগুয়েকে হারালো আর্জেন্টিনা ◈ ইউনূসের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নেবে না আ.লীগ: মোহাম্মদ এ আরাফাত ◈ ৫ লাখ ৩০ হাজার লাতিন আমেরিকান অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার নির্দেশ ◈ হামজা চৌধুরী আমাদের জন্য হুমকি: ভারতীয় কোচ ◈ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে সব রাজনৈতিক দল: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জোড়ালো হচ্ছে

প্রকাশিত : ২২ মার্চ, ২০২৫, ১২:৪০ রাত
আপডেট : ২২ মার্চ, ২০২৫, ১১:৫২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কত টাকা থাকলে জাকাত দেবেন?

জাকাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি বিষয়ের ওপর। এই কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ ছাড়া কোনও উপাস্য নেই এবং মোহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল, নামাজ প্রতিষ্ঠা করা, জাকাত আদায় করা, হজ করা ও রমজান মাসে রোজা রাখা।’ 

জাকাত আদায়কে পবিত্র কোরআনে ‘মুমিন বান্দার সাফল্য’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ-তায়ালা বলেন, ‘অবশ্যই মুমিনরা সফল, যারা নামাজে বিনম্র থাকে, অনর্থক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকে, যারা জাকাত আদায় করে এবং নিজেদের লজ্জাস্থান সংযত রাখে।’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ১-৫) 

পবিত্র কোরআনে জাকাত আদায়ের নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সালাত আদায় করো এবং জাকাত প্রদান করো। তোমরা যে উত্তম কাজ নিজেদের জন্য অগ্রে প্রেরণ করবে তা আল্লাহর কাছে পাবে। নিশ্চয়ই তোমরা যা করো, আল্লাহ তা দেখছেন। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১১০) এছাড়াও জাকাতের ফজিলত ও গুরুত্ব বিষয়ক অসংখ্য আয়াত ও হাদিস রয়েছে। তাই আমাদের মধ্যে যাদের ওপর জাকাত ফরজ, তাদের যথাসময়ে তা আদায় করা অবশ্য কর্তব্য। 

জাকাত ফরজ হয় স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক এমন মুসলিম নর-নারীর ওপর, যার কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ এক বছর অতিবাহিত হবে। নিসাব হলো- নিত্যদিনের প্রয়োজন পূরণ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বাদ দেওয়ার পর সাড়ে ৫২ তোলা পরিমাণ (৬১২ দশমিক ৩৬ গ্রাম) রুপা অথবা সাড়ে সাত তোলা (৮৭ দশমিক ৪৮ গ্রাম) পরিমাণ স্বর্ণ থাকা অথবা এর সমমূল্যের ব্যবসার মালের মালিক হওয়া।

জাকাত প্রযোজ্য হয়- এমন প্রধান প্রধান সম্পদগুলো হলো- স্বর্ণ ও রুপা, গবাদিপশু ও সবধরনের বাণিজ্যিক পণ্য। দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও ব্যবসায়িক পণ্যের নিসাব নির্ধারণে সোনা-রুপা হলো পরিমাপক। এ ক্ষেত্রে ফকির-মিসকিন ও দরিদ্রদের জন্য যেটি বেশি লাভজনক হবে, সেটিকে পরিমাপক হিসেবে গ্রহণ করাই শরিয়তের নির্দেশ।

তাই মুদ্রা ও পণ্যের বেলায় বর্তমানে রুপার (২২ ক্যারেট বারের মূল্য) নিসাবই পরিমাপক হিসেবে গণ্য হবে। তাই যার কাছে ৫২ দশমিক ৫ তোলা (৬১২ দশমিক ১৫ গ্রাম) রুপা বা সমমূল্যের নগদ অর্থ, নগদ অর্থের সঙ্গে স্বর্ণ, বন্ড, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, ব্যাংকে জমা করা যে কোনও ধরনের টাকা ফিক্সড ডিপোজিট হলে মূল জমা টাকা অথবা সমমূল্যের ব্যবসার পণ্য থাকলে জাকাত আদায় করতে হবে।

এ পরিস্থিতিতে চলতি বছর জাকাতের পরিমাণ কত হবে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে ‘শারীয়াহ এ্যাডভাইজারি অ্যান্ড রিসার্চ কাউন্সিল’ (এসএআরসি)। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান বরেণ্য ইসলামি অর্থনীতিবিদ মুফতি মাসুম বিল্লাহ জানিয়েছেন, ‘আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের রুপার পাইকারি বিক্রয় মূল্য যাচাই করে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭৫০ টাকা দর পেয়েছি। এই দরগুলোর গড় মধ্যম মূল্য ১ হাজার ৬৮০ টাকা ধরে ৫২ দশমিক ৫ তোলা বা ভরি রুপার পাইকারি বিক্রয় মূল্য ৮৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লেখিত দর হিসেবে মোট মূল্য ৮৮ হাজার ২০০ টাকা হয়, কিন্তু হিসাবের সুবিধার্থে ২০০ টাকা বাদ দিয়ে ৮৮ হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছে।’ 

আর মনে রাখতে হবে যে, জাকাতের হিসাবের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক পাইকারি বাজার মূল্য ধর্তব্য।

সুতরাং এক বছর অতিবাহিত হলে এই পরিমাণ সম্পদের ওপর তার ৪০ ভাগের এক ভাগ (২ দশমিক ৫০ শতাংশ) জাকাত দিতে হবে। শতকরা আড়াই টাকা বা হাজারে ২৫ টাকা হারে নগদ অর্থ কিংবা ওই পরিমাণ টাকার কাপড়চোপড় বা অন্য কোনও প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে দিলেও জাকাত আদায় হবে।

জাকাত মূলত হিজরি বা চান্দ্রবছরের হিসাব করে দিতে হয়; আর হিজরি বা চান্দ্র বছর ৩৫৪ দিনে হয়। এই ৩৫৪ দিনের হিসাবে দিলে ২ দশমিক ৫ শতাংশ আর যদি সৌরবছর ৩৬৫ দিনের হিসাবে ২ দশমিক ৬ শতাংশ জাকাত দিতে হবে।

কেউ যদি হিজরি বা চান্দ্র বছর হিসাব করতে না পারে বা ইংরেজি বা সৌরবছর হিসাবে দিতে চায়, তাহলে ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ কিংবা সতর্কতামূলক ২ দশমিক ৬ শতাংশ দিতে হবে। কারণ সেক্ষেত্রে ১০ থেকে ১২ দিন বেশি হয়ে যায়। আর ওই বেশি দিনগুলোর জাকাতের পরিমাণ হয় ০ দশমিক ০৭ শতাংশ থেকে ০ দশমিক ০৭৫ শতাংশ, সতর্কতামূলক ০ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি করা ভালো।

তথসূত্র : আবু দাউদ, হাদিস : ১৫৭২; সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৬২৩; সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়