শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগের দোসররা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে: মধ্যরাতে সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (ভিডিও) ◈ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে বিক্ষোভ (ভিডিও) ◈ মধ্যরাতে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ 'আ. লীগের বিচার না করলে জনগণ আবার আন্দোলনে নামবে' (ভিডিও) ◈ বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি, ২০০ ভরি স্বর্ণ লুট (ভিডিও) ◈ দেশের সব মেডিকেল কলেজে সোমবার ‘একাডেমিক শাটডাউন’ ◈ এবার জামায়াতের আমীরের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে শিবির ◈ জুনে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করবে নেপাল ◈ চলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানি; ভুক্তভোগী নারীর লোমহর্ষক বর্ণনা! ভিডিও ◈ মধুর ক্যান্টিনে শিবিরের উপস্থিতি মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করে: ছাত্রদল

প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০২:২৫ রাত
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৫:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

একজন মুসলিমকে যে ১১ গুণ উত্তম চরিত্রের অধিকারী বানায়

একজন প্রকৃত মুমিনের পরিচয় তার উত্তম চরিত্রে প্রতিফলিত হয়। চরিত্র ছাড়া ঈমানে পূর্ণতা আসে না। রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘ঈমানদার সেই ব্যক্তি, যার চরিত্র সর্বোত্তম।’ (সুনানে আবু দাউদ)

ইসলামের ইবাদতগুলোর সঙ্গে চরিত্রের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। প্রতিটি ইবাদত উত্তম চরিত্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যেমন, নামাজ মানুষের জীবনকে শৃঙ্খলিত করে এবং অন্যায় ও অশ্লীলতা থেকে বিরত রাখে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আল-আনকাবুত ৪৫)

 উত্তম চরিত্র অর্জনের জন্য ইসলামে কিছু মৌলিক নির্দেশনা রয়েছে, যা একজন মুসলমানকে পরিপূর্ণ ব্যক্তিত্ব গঠনে সহায়তা করে। তার থেকে কিছু এখানে তুলে ধরা হলো।
 
বিনয় ও নম্রতা: একজন প্রকৃত মুমিন বিনয়ী হয় এবং অন্যদের প্রতি নম্র আচরণ করে। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘তুমি তোমার পার্শ্বদেশ মুমিনদের জন্য অবনত করে দাও।’
 
 সত্যবাদিতা:  সত্যবাদিতা ঈমানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকো।’ (সুরা আত-তওবা ১১৯)
 
রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘সততা অবলম্বন করো, কেননা সততা পুণ্যের পথ দেখায়, আর পুণ্য জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়।’
 
আমানতদারিতা: বিশ্বাসযোগ্যতা ও দায়িত্ব পালন উত্তম চরিত্রের একটি অংশ। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দেন যে, তোমরা আমানত তার যথাযথ হকদারকে পৌঁছে দাও।’ (সুরা আন-নিসা ৫৮)। রসুলুল্লাহ (স.) তার সততা ও আমানতের জন্য আল-আমিন উপাধি লাভ করেছিলেন।
 
বাবা-মায়ের প্রতি সদ্ব্যবহার: পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণ ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহর ইবাদত করো এবং তার সঙ্গে কাউকে শরিক করো না, আর বাবা-মায়ের প্রতি সদ্ব্যবহার করো।’ (সুরা আন-নিসা ৩৫)
 
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা: আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যদি তোমরা ক্ষমতা পাও, তাহলে কি পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করবে? যাদের প্রতি আল্লাহ অভিশাপ দিয়েছেন, তাদের দৃষ্টি অন্ধ করে দিয়েছেন।’ (সুরা মুহাম্মদ ২২-২৩)
 
রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (বুখারি ও মুসলিম)
  
প্রতিশ্রুতি পূরণ: বিশ্বাসযোগ্যতার অন্যতম দিক হলো প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘অঙ্গীকার পূরণ করো, কারণ অঙ্গীকার সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে।’ (সুরা আল-ইসরা ৩৪)। রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য।’
 
প্রতিবেশীর প্রতি সদাচরণ:  প্রতিবেশীর প্রতি ভালো আচরণ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘বাবা-মায়ের প্রতি সদ্ব্যবহার করো, নিকটাত্মীয়, এতিম, মিসকিন, নিকট প্রতিবেশী ও দূরবর্তী প্রতিবেশীর প্রতিও।’ (সুরা আন-নিসা ৩৬)
 
রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘জিবরাঈল আমাকে প্রতিবেশীর ব্যাপারে এতবার উপদেশ দিয়েছেন যে, আমি মনে করেছি, হয়তো প্রতিবেশীকেও উত্তরাধিকারী বানানো হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
 
ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা:  ধৈর্য ও সহনশীলতা উত্তম চরিত্রের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। কোরআনে এসেছে, ‘যে ধৈর্যধারণ করে ও ক্ষমা করে, তা দৃঢ় সংকল্পের পরিচয়।’ (সুরা আশ-শুরা ৪৩)
 
লজ্জাশীলতা: লজ্জা ঈমানের অংশ। রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘লজ্জা কল্যাণ ছাড়া কিছুই নিয়ে আসে না।’ (বুখারি ও মুসলিম)
 
ন্যায়পরায়ণতা:  ন্যায়পরায়ণতা সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘ইনসাফ করো, এটা তাকওয়ার কাছাকাছি।’ (সুরা আল-মায়িদা ৮)
 
 দয়া ও করুণা : একজন মুমিনের হৃদয়ে দয়া ও সহানুভূতি থাকা উচিত। রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘মুমিনদের পারস্পরিক সৌহার্দ্য, করুণা ও অনুকম্পার উপমা একটি দেহের মতো। যখন তার একটি অংশ কষ্ট পায়, তখন পুরো দেহ ব্যথা অনুভব করে।’
 
চারিত্রিক পবিত্রতা একজন মুসলমানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে না, তারা যেন চারিত্রিক পবিত্রতা অবলম্বন করে, যতক্ষণ না আল্লাহ তাদের ধনী করেন।’ (সুরা আন-নুর ৩৩)
 
রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘তোমরা আমার জন্য ছয়টি বিষয়ের দায়িত্ব নাও, আমি তোমাদের জন্য জান্নাতের দায়িত্ব নেবো: সত্য বলা, আমানতের খেয়ানত না করা, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা, দৃষ্টি অবনত রাখা, হাত সংযত রাখা এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করা।’
 
উত্তম চরিত্র শুধু ব্যক্তিগত উন্নতি নয়, বরং সামাজিক সুস্থতা ও ইসলামের সঠিক প্রতিফলন। রসুলুল্লাহ (স.)-এর জীবন আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ। তাই আমাদের উচিত, তার শেখানো উত্তম চরিত্র অর্জনের চেষ্টা করা, যা আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ বয়ে আনবে। উৎস: সময়নিউজ২৪

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়