✖

পার্সটুডে-ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন: ইসলামী বিপ্লব বিজয়ের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া প্রতিরোধ আন্দোলন যুক্তি, বুদ্ধি ও ঈমানকে কাজে লাগিয়ে মুসলিম এমনকি অমুসলিম জাতিগুলোকেও জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। সেইসঙ্গে ইহুদিবাদী ইসরাইলকে গাজা এবং লেবাননের সামনে নতজানু করতে সক্ষম হয়েছে।

ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী, সরকারের তিন বিভাগের প্রধানসহ একদল কর্মকর্তা, ইসলামী দেশগুলোর রাষ্ট্রদূত এবং বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার জনগণের সাথে এক বৈঠকে করেন। ওই বৈঠকে তিনি ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা) এবং তাঁর নবুয়্যতি মিশনকে একটি ধারাবাহিক ও স্থায়ী প্রক্রিয়া হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি আরও বলেন: মানব সমাজের জন্য বিশেষ করে মুসলমানদের জন্য এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো: বুদ্ধিবৃত্তি ও উপলব্ধিতে পরিবর্তন আনার জন্য যুক্তি ও বিশ্বাসকে ব্যবহার করা। পার্সটুডে আরও জানায়, আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী ঈদে মাবআস তথা রাসূলের (সা) এর নবুয়্যতপ্রাপ্তি দিবস উপলক্ষে ইরানি জাতি, মুসলিম উম্মাহ এবং বিশ্বের সকল স্বাধীনতা ও মুক্তিকামী মানুষকে অভিনন্দন জানাতে গিয়ে বলেন: বিশ্বের বর্তমান ঘটনাবলীর দিকে এখন যুক্তিসঙ্গত ও বুদ্ধিবৃত্তিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তাকানো খুবই জরুরি। মানব সমাজে উপনিবেশবাদী লুণ্ঠনের ইতিহাস ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন: উপনিবেশবাদীদের লুণ্ঠনের ইতিহাসের তিনটি পর্যায় রয়েছে: প্রাকৃতিক সম্পদ লুণ্ঠন, সাংস্কৃতিক লুণ্ঠন এবং মৌলিক সংস্কৃতি ধ্বংস করা এবং বিভিন্ন দেশ ও জাতির জাতীয় ও ধর্মীয় পরিচয় দখল ও লুণ্ঠন করা। আজও বিশ্বের দুষ্ট ও শক্তিশালী অক্ষগুলো বিভিন্ন দেশ ও জাতির ওপর উপনিবেশবাদের সেই তিনটি স্তরই চাপিয়ে দিচ্ছে।

বর্তমান বিশ্বের ঘটনাবলীর প্রতি যৌক্তিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তাকানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ

মার্কিন সরকারকে বলদর্পি ও ঔপনিবেশিক শক্তির অগ্রনায়ক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশ্বের পুঁজিপতিদের প্রভাবদুষ্ট সরকার বলে অভিহিত করেন সর্বোচ্চ নেতা। তিনি বলেন: ওই পুঁজিপতিরা প্রতিদিন কোনো না কোনোভাবে বিভিন্ন জাতির পরিচয় ও স্বার্থ পরিবর্তন করার চেষ্টা চালায়।  তাদের ঔপনিবেশিক প্রভাব বিস্তারের জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে, কুরআনের ভাষায়-তোমাকে যা কিছু কষ্ট দেয় তারা তাই পছন্দ করে।

বলদর্পি এবং ঔপনিবেশিক শক্তির নেতৃত্বে মার্কিন সরকার

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন: মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা যে হাজার হাজার শিশু হত্যাকারী, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্নকারী অপরাধীর প্রশংসা করে এবং তাদের উৎসাহিত করছে, ৩০০ জন যাত্রীবাহী ইরানি বিমানকে গুলি করে ভূপাতিত করার জন্য আমেরিকার জাহাজের ক্যাপ্টেনকে পদক প্রদান করছে-এই সবই তাদের ভেতরের মন্দ সত্তার উদাহরণ। তাদের কূটনীতির হাসির আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে শত্রুতা ও ক্ষোভ। এই সত্যগুলোর মোকাবেলায় আমাদের দৃষ্টি খুলতে হবে।

মার্কিনীদের কূটনীতির হাসির আড়ালে লুকিয়ে আছে অভ্যন্তরীণ নোংরামি

বিশ্বব্যাপী সংঘাতের ব্যাপারে সতর্কতার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন: বর্তমান সময়ের প্রতিরোধ আন্দোলন নবুয়্যতি মিশন এবং ইরানের ইসলামী বিপ্লব থেকে উদ্ভূত। গাজার বিস্ময়কর বিজয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন: ছোট্ট এবং সীমিত এই অঞ্চলটি মার্কিন অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ইহুদিবাদী ইসরাইলকে পরাজিত করতে, নতজানু করে দিতে সক্ষম হয়েছে। এই বিজয় বুদ্ধিমত্তা এবং বিশ্বাসকে কাজে লাগানোর ফলাফল বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা শহীদ নাসরুল্লাহর মৃত্যু সত্ত্বেও হিজবুল্লাহর রুখে দাঁড়ানোর ঘটনাকে বর্তমান যুগে প্রতিরোধের উজ্জ্বল প্রকাশের আরেকটি উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন: লেবাননের হিজবুল্লাহ দেখিয়ে দিয়েছে, তারা শেষ হয়ে যায় নি বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রেরণা ও উদ্দীপনা নিয়ে ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে।