পবিত্র কোরআনে বিশেষ ১৪টি আয়াত রয়েছে। যেগুলো তিলাওয়াত করলে পাঠকারীর ওপর সিজদা ওয়াজিব হয়। ইসলামি ফিকহের পরিভাষায় এমন সেজদাকে ‘সেজদায়ে তিলাওয়াত’ বা তিলাওয়াতের সেজদা বলা হয়। হানাফি মাজহাব মতে— সেজদার আয়াত তিলাওয়াত করলে বা তা শুনলে ব্যক্তির ওপর সেজদা করা ওয়াজিব।
এ প্রসঙ্গে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) কোরআন তিলাওয়াত করছিলেন। তিনি এমন একটি সুরা তিলাওয়াত করলেন, যাতে সেজদা (সেজদার আয়াত) ছিল। তিনি সেজদা দিলেন এবং আমরাও তার সঙ্গে সেজদা দিলাম। এমনকি আমাদের ভেতর কেউ কেউ কপাল রাখার জায়গা পেল না।’ (মুসলিম শরিফ, হাদিস: ৫৭৫)
পবিত্র কোরআনের প্রতিটি সেজদার আয়াতের জন্য একটি করে সেজদা করা ওয়াজিব। এজন্য যদি কোনও ব্যক্তি সম্পূর্ণ কোরআন খতম করে (নামাজে বাইরে) এবং তার তিলাওয়াতের মধ্যে সেজদার আয়াত আসে, তার জন্য উত্তম হলো— তাৎক্ষণাতই সেজদা আদায় করে নেবে। কোনও অজুর ও প্রতিবন্ধকতা ছাড়া তিলাওয়াতের সেজদা আদায়ে দেরি করা অনুত্তম। তবে যদি কোনও কারণ বশত আয়াত তিলাওয়াতের সময় সেজদা আদায় করা সম্ভব না হয় এবং এভাবেই পবিত্র কোরআন খতম হয়ে যায়, তাহলে সবগুলো সেজদা একত্রে আদায় করাও সহিহ হবে।
আর নামাজের মধ্যে সেজদায়ে তিলাওয়াত আদায়ের নিয়ম হলো— আয়াত তিলাওয়াতের পর তাকবির বলে সেজদা আদায় করা এবং উঠে আরও কয়েক আয়াত তিলাওয়াত করে নামাজের রুকুতে যাওয়া। তবে কেউ যদি সেজদার আয়াত তিলাওয়াত করে সরাসরি রুকুতে চলে যায় এবং নামাজের সেজদার সঙ্গে তিলাওয়াতে সিজদারও নিয়ত করে ফেলে, তাহলে তা আদায় হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে শর্ত হলো— সেজদার আয়াত তিলাওয়াতের পর দুই আয়াতের বেশি তিলাওয়াত না করা।
তিলাওয়াতে সেজদার জন্যও পবিত্রতা জরুরি। নামাজের জন্য যেভাবে পবিত্রতা অর্জন করা হয়, সেজদায়ে তিলাওয়াতের জন্য সেভাবে পবিত্রতা অর্জন করতে হবে। পবিত্র অবস্থায় দাঁড়িয়ে একটি তাকবির দিয়ে সেজদা করলে তা আদায় হয়ে যাবে। পুরুষের জন্য তাকবির জোরে পাঠ করা উত্তম। নামাজের সেজদা যেভাবে করা হয়, তিলাওয়াতের সেজদাও সেভাবে করতে হবে।
তথ্যসূত্র: জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া করাচির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ১৪৪৬০৩১০২২৩৭ নম্বর ফতোয়া অবলম্বনে।
আপনার মতামত লিখুন :