ফজিলতপূর্ণ বিশেষ জিকিরের মধ্যে অন্যতম একটি হলো, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’ এই জিকির শয়তানকে প্রতিহত করে। এটা পরীক্ষিত।
জিকির একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এর মাধ্যমে মুমিনের হৃদয় প্রশান্ত হয় এবং আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করে। ফজিলতপূর্ণ বিশেষ জিকিরের মধ্যে অন্যতম একটি হলো, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’ এই জিকির শয়তানকে প্রতিহত করে। এটা পরীক্ষিত। দুনিয়া ও আখিরাতের সামগ্রিক কল্যাণের পথে চলতে দৈনন্দিন আমলের তালিকায় এটাও যুক্ত করা উচিত। এ সংক্রান্ত কয়েকটি হাদিস-
১. জান্নাতের গুপ্তধন : ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’- এই বাক্যটি জান্নাতের ধনভাণ্ডারের অন্তর্ভুক্ত। আবু মুসা আশআরি (রা.) বলেন, একবার আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে কোনো এক সফরে ছিলাম। তখন লোকেরা জোরে জোরে তাকবির পাঠ করছিল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, হে লোক সকল! তোমরা তোমাদের প্রাণের প্রতি সদয় হও। কেননা তোমরা তো কোনো বধির কিংবা কোনো অনুপস্থিত সত্তাকে ডাকছ না। নিশ্চয়ই তোমরা ডাকছ এমন এক সত্তাকে, যিনি সর্বশ্রোতা, নিকটবর্তী এবং তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন।
আবু মুসা (রা.) বলেন, আমি তার পেছনে ছিলাম। তখন আমি বললাম, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’। তখন তিনি বললেন, হে আবদুল্লাহ ইবনে কায়স! আমি কি তোমাকে জান্নাতের ভাণ্ডারসমূহের কোনো একটি ভাণ্ডারের সন্ধান দেব না? তখন আমি বললাম, নিশ্চয়ই হে আল্লাহর রাসুল! তখন তিনি বলেন, তুমি বলো- ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’। (মুসলিম, হাদিস : ৬৬১৬, ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৮২৪)
২. দারিদ্র্য দূর করে : মোবারক এই বাক্যের জিকির দারিদ্র্য দূর করে। সাফল্যের রাজপথে নিয়ে যায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছেন, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ দোয়াটি বেশি করে পাঠ করবে, এ হলো জান্নাতের সঞ্চয়ভাণ্ডার। মাকহুল (রহ.) বলেন, এই দোয়া যে ব্যক্তি পাঠ করবে, তার জন্য ৭০টি অনিষ্টের দ্বার রুদ্ধ করে দেওয়া হবে। সর্বনিম্ন দরজাটি হলো দারিদ্র্য।
(তিরমিজি, হাদিস : ৩৬০১)
৩. গুনাহ মাফ করে : গুনাহ মাফের বড় একটি সুযোগ তৈরি করে এই বাক্য। এর মাধ্যমে সমুদ্র পরিমাণ পাপ মার্জনা করে দেওয়া হয়। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, পৃথিবীর বুকে যে ব্যক্তি বলে, ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’, তার অপরাধগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হয়, যদিও তা সাগরের ফেনারাশির মতো (বেশি পরিমাণ) হয়। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৬০)
৪. সার্বিক নিরাপত্তা : রাস্তাঘাটের নিরাপত্তা, জীবনে বরকত এবং শয়তানের বহুমুখী চক্রান্ত থেকে বাঁচার জন্য এই দোয়াটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এই দোয়া পাঠ করে তাকে (ফেরেশতাদের পক্ষ থেকে) বলা হয়, তুমি যথেষ্ট করে নিলে, বেঁচে গেলে, তোমার থেকে শয়তান দূর হয়ে গেল। দোয়াটি হলো- ‘বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪২৬)। উৎস: ডেইলি সান।
আপনার মতামত লিখুন :