নামাজের প্রথম রাকাতে সানা ও দোয়া পাঠ করার পর সুরা ফাতিহা পাঠের শুরুতে আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম ও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পাঠ করা সুন্নত। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘অতএব যখন আপনি কোরআন পাঠ করবেন, তখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহতায়ালার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করুন।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৯৮)
আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.), আবু বকর, উমর ও উসমান (রা.)-এর পেছনে নামাজ আদায় করেছি। তারা কেউ সশব্দে বিসমিল্লাহ পাঠ করতেন না।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ১২৮৪৫)
নামাজে রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ না পড়ার বর্ণনাও রয়েছে। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকবিরের মাধ্যমে নামাজ শুরু করতেন এবং কিরাত পড়া শুরু করতেন আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন দ্বারা।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৭৮৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২৪০৭৬)
আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ শুধু ওইসব মুসল্লির জন্য সুন্নত, যারা সুরা ফাতিহা পাঠ করেন। যেমন: ইমাম ও মুনফারিদ (একাকী নামাজ আদায়কারী)। ইমামের পেছনে নামাজ পড়ার কারণে যেহেতু মুক্তাদিকে সুরা ফাতিহা পড়তে হয় না, তাই সে আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহও পড়বে না।
সুরা ফাতিহার আগে ইচ্ছাকৃতভাবে অথবা ভুলক্রমে বিসমিল্লাহ না পড়লেও কোনো অসুবিধা নেই। সাহু সিজদা দিতে হবে না। কারণ সাহু সিজদা দিতে হয় কেউ ভুলক্রমে নামাজের কোনো কথা বা কাজ ছেড়ে দিলে। (মুসলিম, হাদিস: ৫৭২)
হানাফি মাজহাবের সারকথা হলো, প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতিহার শুরুতে চুপে চুপে বিসমিল্লাহ পড়া ইমাম ও মুক্তাদি উভয়ের জন্য সুন্নত। সুরা ফাতিহা ও অন্য সুরার মাঝখানে বিসমিল্লাহ পড়া আবু হানিফা ও আবু ইউসুফের কাছে সুন্নত নয়। যেহেতু বিসমিল্লাহ সুরা ফাতিহার অংশ নয়; বরং বরকতের জন্য সুরা ফাতিহার শুরুতে উল্লেখ করা হয়েছে...। (আল-মাউসুআ আল-ফিকহিইয়া, খণ্ড: ৮, পৃষ্ঠা: ৮৭)
আপনার মতামত লিখুন :