শিরোনাম
◈ সিনওয়ারের মরদেহ নিয়ে ‘দর কষাকষি’ করতে চায় ইসরায়েল ◈ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন : সাড়ে চারশ কোটি টাকার ময়লা-বাণিজ্য হাত বদল ◈ এবার ভয়ংকর সেই আয়নাঘর নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন ◈ নির্বাচনের সময় নিয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন আসিফ নজরুল ◈ পরীক্ষা দিতে এসে আটক রাবি ছাত্রলীগের ২ নেতা ◈ বিশ্বের ১১০ কোটি তীব্র দরিদ্র মানুষের মধ্যে প্রায় ২৫ কোটি থাকেন ভারতেই!  ◈ দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাওয়ার পথে বরের ওপর সাবেক স্ত্রীর হামলা ◈ এবার শাহবাগে বিক্ষোভ করছে আউটসোর্সিং কর্মচারীরা : চাকরি জাতীয়করণের দাবি ◈ স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ আবার ফিরেছেন বাংলাদেশ দলে ◈ দক্ষিণখানে পুলিশের পোশাক,নকল পিস্তলসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

প্রকাশিত : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৮:০০ রাত
আপডেট : ১৮ অক্টোবর, ২০২৪, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মাজারে হামলা নিন্দনীয়, রয়েছে ভিন্ন মত

এম এইচ বাচ্চু : দেশের কয়েক জেলায় মাজারে হামলা ঘটনা ঘটেছে। দুষ্কৃতকারীরা ভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে এ হামলা চালিয়েছে।  মাজার ভাংচুরের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে অন্তর্র্বতী সরকার। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এমটাই জানানো হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, নোয়াখালী, সিলেট, শরীয়তপুরসহ আরও কয়েক জেলায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। কি উদ্দেশ্যে মাজারে হামলা চালানো হয়েছে এখনো জানা যায়নি। তবে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে মাজারে হামলার ব্যাপারে ভিন্ন মত রয়েছে। 

রাজধানীর গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারে আজ বুধবার হামলা হতে পারে, এমন আশঙ্কায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেল থেকে সেখানে কয়েক শ ভক্ত অবস্থান নেন। একই সঙ্গে তাঁরা সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন মাজারে হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদ জানান। 

মাজারে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিচার দাবি করেছেন দেশের ৪৬ নাগরিক। হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তারা বলেছেন, “গত কয়েকদিনে দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে সংগঠিত হয়ে মাজারসহ আধ্যাত্মিক স্থাপনায় হামলা হচ্ছে। মাজারে হামলার কোনো ঘটনায়ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি। তাদের এই নিষ্ক্রিয়তা সমাজের গভীরের ক্ষতকে বিস্তৃত করবে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভেতর বিভাজন আরও বাড়াবে। যা আগের মত অগণতান্ত্রিক শক্তির হাতে বাংলাদেশকে ছেড়ে দেওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করবে।

মাজার ভাঙ্গা নিয়ে যে ধরনের ক্যাম্পেইন চলছে, সেটিকে অন্যায় মনে করছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এই সংস্থার হালাল সনদ বিভাগের উপপরিচালক মো. আবু সালেহ পাটোয়ারীর সাথে এ নিয়ে বিবিসি বাংলার কথা হয়। তিনি জানান, মাজার শব্দের অর্থ জিয়ারতের স্থান।

“কিন্তু আমাদের দেশে মাজার বলতে বোঝা যায়, যেখানে পীর-বুজুর্গর কবর। সেটিকে পাকা-টাকা করে অনেকে ওভাবে রাখছে। মানুষ সেখানে জিয়ারতের জন্য যায়।”তবে ইসলামের মৌলিক বিধান অনুযায়ী কবরের পর সেটিকে পাকা করে “গম্বুজ করা বৈধ না, শরিয়তে অনুমতি নাই, কিন্তু আমাদের দেশে অনেকে করে এগুলা,” বলছিলেন তিনি। এখন, ইসলামে বৈধ না বলে কেউ ওইসব স্থাপনার ওপর আক্রমণ করতে পারে না বলেও তিনি জানান।

মাজার ও অন্যান্য ধর্মীয় স্থাপনায় হামলাকারী ব্যক্তিরা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পরাজিত ফ্যাসিস্ট সরকারের মতোই আচরণ করছেন। কোনো বিবেকবান মানুষ এমন অপরাধ ও অন্যায়কে সমর্থন করেন না। অবিলম্বে হামলাকারী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এ দাবি জানান। সারা দেশে মাজার ও ধর্মীয় স্থাপনায় হামলার প্রতিবাদে ও বাংলাদেশে বিদ্যমান ধর্মীয় বহুত্ববাদের প্রতি সংহতি জানিয়ে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে একতার বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠন।

রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়ায় অবস্থিত আল মারকাজুল ইসলামি আস সালাফি মাদ্রাসা পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “মাজার ভাঙ্গা হোক, মসজিদ ভাঙ্গা হোক, মন্দির ভাঙ্গা হোক; এগুলো গর্হিত কাজ। যেগুলো যেভাবে আছে, সেগুলো সেভাবে থাকা দরকার।

মসজিদ-মাদ্রাসা-মাজারে হামলার বিচারসহ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের ৯ দাবি জানিয়েছে। শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তরা বলেন, দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ উগ্রবাদী হামলা করা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক দোষীদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।  

দেশব্যাপী আউলিয়ায়ে কেরামের মাজার এবং দরবারে হামলা, ভাংচুর ও লুটতরাজের প্রতিবাদে তরিকতপন্থী ছাত্র সংগঠন শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন পালন করেছে। সোমবার ৯ সেপ্টেম্বর প্রেসক্লাবের সামনে দরবারে হামলা ও ভাংচুরের প্রতিবাদে ছাত্র সংগঠনের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়মানববন্ধনে সাম্প্রতিককালে সারা দেশের বিভিন্ন দরবার ও মাজারে হামলার বৃত্তান্ত তুলে ধরা হয়। পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে মানববন্ধন শুরু হয়।
দেওয়ানবাগসহ দেশের বিভিন্ন দরবার ও মাজারে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন দেওয়ানবাগের ইমাম ড. কুদরত এ খোদা।

সোমবার ৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তার পক্ষে নিন্দা জানান সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুল আজিজ খলিফা। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে আবদুল আজিজ খলিফা বলেন, দেওয়ানবাগ শরীফ কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত নয়। মানুষের প্রতি দয়া, প্রেম, ভালোবাসা প্রদর্শন এবং নিজেদের চরিত্র গঠনের মাধ্যমে আল্লাহ ও রাসুল (সা.) এর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যেই এই প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তারপরও কেন, কার স্বার্থে বার বার মানুষকে বিভ্রান্ত করে দেওয়ানবাগ শরীফে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হচ্ছে।

এম এইচ ফারুক নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, একটা মদের দোকানে হামলা করতে শুনিনা,একটা ডান্স ক্লাবে হামলা করতে শুনিনা,একটা জুয়ার আসরে হামলা করতে শুনিনা, শুনতেছি শুধু আল্লার অলির মাজারে হামলা !! ডালকা কুচ কালা হে ??

আসিফ সোহাগ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন,  হযরত শাহজালাল এবং শাহপরান এর মাজারে হামলা করা কতটা যুক্তিযুক্ত বুঝতেছি না।তবে আমার মনে হয় মাজার কমিটি মাজারের নিয়ম শৃঙ্খলা ঠিক করা উচিৎ ভন্ডদের জায়গা দেওয়া উচিৎ...

শিরিন হক নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, কে মসজিদে,কে মাজারে,কে মন্দিরে,কে গির্জায় যাবে এটা যার যার জন্মসূত্রে ধর্ম এবং বিশ্বাসের ব্যাপার। এ সব বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি বা অন্যের উপাসনালয় ভেঙ্গে দেওয়া, হামলা করা কি আদৌ ঠিক? আমার জানা মতে পৃথিবীর কোন ধর্মে অন্য ধর্মকে ব্যঙ্গ করবার অথবা আঘাত করবার কথা বলা হয়নি। 
তা হলে নিশ্চয়ই বর্তমানে দেশে যা চলছে তা অন্য কোন উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে।

মোহাম্মদ হানিফ চৌধুরী একজনফেসবুকে লিখেছেন, মিলেমিশে থাকাটাই সুন্দর। ধীরে ধীরে সুন্দরে পরিবর্তন হবে আমাদের দেশ। নেতিবাচকতা থেকে দূরে থাকতে হবে আমাদের। অতিতের এদের (সব ভন্ডদের) ভুল, ধর্ম ব্যবসা, ভন্ডামী, মাজার নিয়ে ব্যবসায়ী সবাই যেন সব ভুলে গিয়ে সুন্দর একটা মুসলিম ঐক্য গঠন করতে পারি এবং দেশের সর্বোচ্চ নেতৃত্বে সুন্নীরা থাকতে পারে।  তবে আলেম দারী ভন্ড নই। যারা ভালো তাদের কথা বলা হয় নি।

শরীফ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, অনেক জায়গা দেখতে আছি মাজার  ভাঙ্গতেছে মাজার ভেঙ্গে লাভ কি হবে যারা ইসলামের নাম দিয়ে ধর্ম ব্যবসা করে  এবং মাজারের মধ্যে যারা ভন্ডামি ও নারী-পুরুষ মিলে লাফালাফি করে তাদেরকে আগে সংশোধন করতে হবে। আজকে এক মাজার ভাঙবেন তাদেরকে সংশোধন না করলে তারা অন্য মাজারে যাইয়া আবার ভন্ডামি ও নারী পুরুষ একসাথে হয়ে লাফালাফি করবে। যদি তাদেরকে ঠিক না করেন মাজার যত ভাঙ্গবেন  কোন লাভ হবে না। সমাজের মধ্যে কিছু অন্ধভক্ত আছে যাদের নামাজ রোজা কিছু নেই যদি মসজিদের মধ্যে মোমবাতি লাগলে একটা টাকা ও দেয় না আর মাজারের মধ্যে আলো থাকা সত্ত্বেও তারা মোমবাতি জ্বালায়। আমরা কোন হক্কানী মাজার ও হক্কানী  আল্লাহ অলির বিপক্ষে না মাজারে জিয়ারত করবো সেজদা করব না । মাজারে সেজদা করা হারাম সেজদা একমাত্র পাওয়ার মালিক আল্লাহতালা । আমরা কোনদিন যারা মাজারে সেজদা দেয় ও নারী পুরুষ একসাথে লাফালাফি করে এদের সাথে  ছিলাম না এবং মরণ পর্যন্ত থাকবো না এই সকল ভন্ডদের থেকে আল্লাহ হেফাজত করুন আমীন । আল্লাহ আমাদেরকে এই সকল ভন্ডদের থেকে দূরে রাখার তৌফিক দান করো আমিন।

সিরাজগঞ্জ:  সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে মাজারে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ৩টি কবর খুঁড়ে দেহাবশেষ নিয়ে গেছে দুর্বত্তরা। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) প্রায় দিনভর ওই গ্রামের ‘হযরত বড়পীর গাউসুল আজম দরবার শরীফে’ এ হামলার ঘটে। মাজারের ৩টি কবর খুড়ে তার ভিতরে থাকা মানুষের হাঁড়, মাথার খুলি নিয়ে যায় এবং ২টি খানকা ঘর ও একটি রান্না ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। এছাড়া ওই মাজারে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে।

মাজার কমিটির সভাপতি আব্দুল ওয়াহাব কালু, সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী ও খাদেম হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘উক্ত গ্রামের খাজা সফুরা পাগলী ৫ শতক মিলে মোট ২০ শতক জায়গায় ২০০৫ সালে হযরত বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রা.) দরবার শরীফের নামে ওয়াকফ্ করে দিয়েছেন। এরপর থেকে এখানে দরবার শরীফের কার্যক্রম চলতে থাকে। সোমবার সকালে মাজার বিরোধীরা মাইকে মাজার ভাঙচুরের ঘোষণা দেয়। এরপর তারা মিছিল সহকারে মাজারে এসে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তাণ্ডব চালায়। এসময় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মাজারের বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করে তারা। ৩টি পাকা কবর ভেঙ্গে কবরের ভিতরে থাকা দেহাবশেষ নিয়ে যায়।’ দীর্ঘ ১৭ বছর এখানে মাজারের কার্যক্রম চললেও কেউ কোনদিন বাধা দেয়নি।

নোয়াখালী: নোয়াখালী পৌরসভার লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার ফকির চাড়ু মিজি শাহ্ (র.) মাজার (দরগাহ বাড়ির মাজার) ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোরে ১৮-২০ জনের একদল দুর্বৃত্ত এ ভাঙচুর চালায়। স্থানীয়রা জানায়, লক্ষ্মীনারায়ণপুর দরগাহ বাড়িতে প্রায় ২৫০ বছর আগে চাড়ু মিজি শাহ্ নামের এক সাধুকে দাফন করা হয়েছিল। পরে তাঁর দাফনস্থান ঘিরে মাজার তৈরি করেন ভক্তরা। প্রতিবছর সেখানে মাসব্যাপী ওরস ও মেলার আয়োজন করা হতো। যদিও সেখানে বছরের বাকি সময়জুড়ে বড় পরিসরে কোনো কার্যক্রম চালানো হতো না। মাজার কমিটির সভাপতি ও নোয়াখালী পৌর বিএনপির সভাপতি আবু নাছের জানান, ভোরে মাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলামের ছেলে মো. বিজয়ের নেতৃত্বে ১৮-২০ জনের একদল দুর্বৃত্ত মাজারে হামলা চালিয়ে কবরস্থান ও দেয়াল গুঁড়িয়ে দিয়েছে। 

গাজীপুর: গাজীপুরের পোড়াবাড়ি এলাকায় একটি মাজারে হামলা, ভাঙচুরের ও অগ্নিসংযোগে ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়দের কাছে এটি শাহ সূফি ফসিহ পাগলার মাজার নামে পরিচিত। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে গাজীপুর মহানগরের পোড়াবাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে মাজারটিতে হামলা চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রায় এক ঘণ্টা ধরে মাজারে ভাঙচুর চালানো হয়। ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড ও মাদকের অভিযোগ তুলে আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার মাদ্রাসাছাত্র-শিক্ষক, মসজিদের ইমামসহ একদল গিয়ে সেই হামলা চালায়। মাজার কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের সেখানে মাদক নিষিদ্ধ। মাজারে আসা দানের টাকায় অসহায় মানুষদের সহায়তা করা হয়।

শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের জাজিরায় আরশেদ পাগলার মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের সফি কাজির মোড় এলাকায় অবস্থিত মাজারটিতে হামলা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুম্মার নামাজ শেষে মাজারের সামনে অনেক মানুষ জড়ো হন। তারা লাঠি নিয়ে মাজারটিতে হামলা চালান। তারা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে মাজারের প্রশাসনিক ঘর, ভক্তদের থাকার ঘর, অতিথিদের থাকার পাকা ভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এসময় দুর্বৃত্তরা মাজারের ভেতরে অগ্নিসংযোগ করে। দুপুর ৩টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

ধামরাই: ঢাকার ধামরাই উপজেলার বাটুলিয়া এলাকায় 'বুচাই পাগলা (রহ.) এর মাজারে' হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসীর দাবি, অন্য এলাকার লোকজন এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। তারা আরও বলেন, মাজারটিতে শরিয়াহবিরোধী কাজ হতো না। মাজারে মাদক নিষিদ্ধ ছিল। মাজারে দানের টাকায় একটি মসজিদ পরিচালনা করা হতো, দানের অর্থের একটি অংশ যেত মাদ্রাসায় এবং অসহায় মানুষদের সহায়তা করা হতো। বুধবার  (সেপ্টেম্বর ১২) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাঁচ শতাধিক মানুষ উপজেলার সানোড়া ইউনিয়নের বাটুলিয়া এলাকায় কালামপুর-সাটুরিয়া আঞ্চলিক সড়কের পাশে মাজারটি ভাঙচুরে অংশ নেন।

সিলেট: সিলেটের হজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজারে হামলার ঘটনায় আহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। হামলাকারীরা মাজারে অবস্থানরত ভক্তদের মারধর ও বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করেছে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয়দের ভাষ্য, গত রবিবার থেকে শাহপরান মাজারে বার্ষিক ওরস চলছে। ওরসকে কেন্দ্র করে যাতে অসামাজিক কোনো কার্যক্রম না হয় সে জন্য স্থানীয় ছাত্র-জনতা প্রতিদিনই নজরদারি করছিল। সেই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতেও তারা মাজারে তাদের নজরদারি চালাচ্ছিল। এমন পরিস্থিতিতে ওরসে আসা মাথায় লাল কাপড় বাঁধা একদল লোক বিনা উসকানিতে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়