শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৯ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:১১ দুপুর
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৭:০০ সকাল

প্রতিবেদক : এল আর বাদল

ভয়েস অফ আমেরিকাকে রিজভী: সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করা যাবে না

এল আর বাদল: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের হাল ধরে অন্তর্বর্তী সরকার। যার প্রধান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনূস। তার শাসনামলে কেমন আছে বাংলাদেশ? কী ভাবছেন দেশের নাগরিকরা? এ নিয়ে গত পনের দিন ধরে ভয়েস অফ আমেরিকা দেশব্যাপী একটি জরিপ করে। সেই জরিপের অংশ হিসাবে তারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সাক্ষাতকার নেয়। এই সাক্ষাতকারটি আমাদের সময় ডটকমের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ বাংলাদেশের ৫৭ শতাংশ মানুষ রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে আর ৩৫.৫ শতাংশ চান আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হোক। সম্প্রতি ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা'র এক জরিপে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ না করার পক্ষে অধিকাংশ মানুষ মত দিয়েছেন, এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করবেন?

রুহুল কবির রিজভীঃ যখন জরিপ করা হয়েছে, তখন বিপুল সংখ্যক মানুষ আওয়ামী লীগ নেতাদের রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে মতামত দিয়েছে। কিন্তু সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হোক, সেটার পক্ষে মতামত দিয়েছে মানুষ। সুতরাং সেই ক্ষেত্রে আমার মনে হয় সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষেধজ্ঞা দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ মানুষ যেহেতু চেয়েছে, এটা যৌক্তিকও হবে না। তবে, এখানে একটা কথা আছে।

যে সংখ্যাটা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে মতামত দিয়েছে, সেটাও ফেলার দেওয়ার মত নয়। তাহলে কী করতে হবে? এই সংগঠনের আমূল পরিবর্তন করতে হবে। তারা ক্ষমতায় আসলেই 'ফ্যাসিবাদ' কায়েম করে, নিপীড়ন করেছে নিজ জনগণের ওপর। আবার নিজ দেশকে 'কোন-কোন দেশের অধীনে নতজানু' করে রেখেছে। এটা সম্পূর্ণরূপে জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে। আমি মনে করি, তারা কঠিনভাবে 'রাষ্ট্রদ্রোহী' কাজ করছে। সেইক্ষেত্রে যারা এই ‘বাকশালী প্রক্রিয়া’কে সমর্থন দিয়েছে, যারা এটাকে প্ররোচিত করেছে তাদের নিষিদ্ধ হওয়া উচিত।

যারা ক্ষমতাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, বিরোধীদের ওপর নানাভাবে জুলুম করিয়েছে, গুম, খুন করিয়েছে এদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

টাকা পাচারসহ সব ধরণের অনাচারের সঙ্গে যে সরকার জড়িত তাদের বিচার হতে হবে। এর বাইরে আওয়ামী লীগের অনেক নিরীহ সাধারণ নেতাকর্মী যারা রয়েছেন, তারা গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং যে সংস্কার হবে তার প্রতি অঙ্গীকার বদ্ধ হয়ে রাজনীতি করবে। কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করা যাবে না। যারা অপকর্ম করেছে তাদেরকে শাস্তি দিতে হবে।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতাদের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করার পক্ষে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৪৬.৮ শতাংশ। এদের মধ্যে ৫৪.৫ শতাংশ চান আওয়ামী লীগের এই নেতাদের আজীবনের জন্য রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করা হোক। দল হিসেবে অধিকাংশ মানুষ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করার পক্ষে হলেও আওয়ামী লীগ নেতাদের রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করা দেখতে চায় ৪৬.৮ শতাংশ মানুষ যাদের অর্ধেকের বেশি আওয়ামী লীগ নেতাদের আজীবন নিষিদ্ধের পক্ষে। এ বিষয়টি নিয়ে আপনার বিশ্লেষণ জানতে চাই।

রুহুল কবির রিজভীঃ এটার সঙ্গে আমি একমত। কারণ এই নেতৃত্বটাই 'ফ্যাসিবাদ' কায়েম করেছে। দেশের অর্থনীতি লুটপাট করেছে। তারা সব ধরণের অনাচারের সঙ্গে যুক্ত। সুতরাং এদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। যারা নিরীহ আওয়ামী লীগার, সর্তিকার অর্থে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যারা কখনও গণতন্ত্রের স্পিরিটের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না, তাদের (আওয়ামী লীগের) নেতৃত্বে আসা উচিত। সেটা রাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের একটা অঙ্গীকার থাকতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়