শিরোনাম
◈ উপাচার্যসহ অনেকের পদত্যাগ: ইউআইইউ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ◈ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপি-জামায়াত রসায়ন ও অন্যদের ভাবনা ◈ সমা‌লোচনার মধ্যে বিসিবির জরুরি ভার্চুয়াল সভা সিদ্ধান্ত ছাড়াই মুলতবি ◈ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলার আহ্বানে যা বলেছিলেন মোদি: আল জাজিরাকে ড. ইউনূস (ভিডিও) ◈ নতুন অধ্যায়ের সূচনা: সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইট চালু ◈ রিজার্ভ আরও বাড়লো ◈ নতুন সিটি করপোরেশন হতে যাচ্ছে বগুড়া ◈ খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া ভারত-পাকিস্তান ভ্রমণ না করার পরামর্শ সরকারের ◈ চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বৈঠক: আরাকানে স্বাধীন মুসলিম রাজ্য চায় জামায়াত ◈ ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রকাশিত : ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০১:৪৬ দুপুর
আপডেট : ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কক্সবাজারে সরকারী জমিতে মিলেমিশে মার্কেট নির্মানের হিড়িক!

হাবিবুর রহমান সোহেল,কক্সবাজার : পর্যটন রাজধানী কক্সবাজার শহরের সুগন্ধা পয়েন্টের প্রবেশপথের বাম পাশে টিনের ঘেরা দেওয়া সরকারি জায়গায় জোরেশোরে চলছে স্থাপনা নির্মাণের কাজ। বাইরে থেকে বুঝার উপায় নেই ভিতরে কি হচ্ছে। এসব জমি দখলের সেন্ডিকেটে রয়েছে সরকারী কর্মকর্তা, সাংবাদিক, আওয়ামীলীগ নেতা, বিএনপির প্রভাবশালীসহ জামাতের লোকজন।
 
স্থানীয় সাধারণ লোকজন ও ব্যবসায়ীরা জানান, ইতোমধ্যে সেখানে ৮০-১০০ টি পাকা দোকান ঘর নির্মাণের কাজ শেষের দিকে। প্রতি দোকান থেকে অগ্রিম ১০ লক্ষ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। প্রথম ধাপে ৫ লক্ষ টাকা এবং অবশিষ্ট ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে দোকানে প্রবেশ করার চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি দোকান থেকে ভাড়া বাবদ নেওয়া হচ্ছে মাসিক ২০ হাজার টাকা।
 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সুগন্ধা পয়েন্টের প্রবেশের দক্ষিণ পাশে বিশাল এলাকা টিন দিয়ে ঘেরা। পশ্চিম পাশে কোন প্রাচীর নেই। সুবজ রংয়ের গেইট। যেখানে লেখা আছে 'এই প্রতিষ্ঠান সি সি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। নিচে লেখা মহামান্য হাইকোর্ট এর আদেশ দ্বারা নিষেধাজ্ঞা আছে। সংরক্ষিত এলাকা, উন্নয়ন কাজ চলিতেছে। বিনা অনুমতিতে প্রবেশ নিষেধ।' এর পাশেই জেলা প্রশাসনের সাইনবোর্ড। লেখা আছে, সতর্কীকরন বিজ্ঞপ্তি। জমির তফসিল মৌজা- ঝিলংজা, বি.এস খতিয়ান নং-১, বি এস দাগ নং- ২০০০৩, জমির পরিমাণ, ২ দশমিক ৩ একর। তার পাশেই আরেকটি সাইনবোর্ডে লেখা আছে নিষেধাজ্ঞার আদেশ, হাইকোর্টের রিট পিটিশন নং- ১০৬৫৭/২৪। রীটকারী সচ্চিদানন্দ সেন গুপ্ত। 
 
দেখা যায়, দোকানের ৫টি লাইন করা হয়েছে। দুই মুখী দোকানের তিনটি লাইন এবং একমূখী দোকানের দু্টি লাইন। একটি দোকানের আয়তন ৮০ স্কয়ার ফুট। মোট ৮০-১০০ টি দোকানের কাজ চলমান। উত্তরে একটি লাইনের দোকানের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। শুধু টিন লাগানোর কাজ বাকি আছে। ভিতরে ৭-৮ জন লোক কাজ করছেন। টেবিল চেয়ার বসিয়ে একটি অফিসের মত করা হয়েছে। কথা বলার জন্য বাহির থেকে কয়েকবার ডাক দিলেও কারোই সাড়া পাওয়া যায়নি। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ২০১৮ সালে এসব জায়গা খাস হয়ে যায়। ২০০০৩ দাগের ২ দশমিক ৩ একর জায়গা ১ নং সরকারি খাস খতিয়ানের জায়গা। রীটকারী সচ্চিদানন্দ সেন গুপ্তের করা মামলা ( ১০৬৫৭/২৪) তারিখ ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এর বিরুদ্ধে সরকার পক্ষ সুপ্রীম কোর্টে আপীল (যার আপিল নং- ৩৭২৯/২৪)  দায়ের করলে সরকারের পক্ষের আবেদনে সন্তুষ্ট হয়ে স্থগিতাদেশ দেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চিহ্নিত কিছু দাগী সন্ত্রাসী ও রাজনৈতিক দলের কিছু কথিত নেতা ওই জায়গা দেখভালের দায়িত্বে আছেন। দোকান নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, যিনি রিটকারী তাঁকে কেউ কখনো দেখেননি। যাঁরা তার পক্ষ নিয়ে আদালত পর্যন্ত গেছে তারাও না-কি তাঁকে চোখে দেখেননি। আসলে মানুষটা কি মৃত না জীবিত তার সঠিক তথ্য কেউ দিতে পারেনি। 

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, যে যায়গার কথা তিনি বলছেন, সেই জায়গায় বর্তমান বাজারদর কয়েকশো কোটি টাকা। এত সম্পদের মালিককে কেউ চোখে দেখেনি। মুলত কিছু দখলবাজ নানা ফন্দি করে ওই জায়গায় দখল নিতে চাচ্ছে। ওই লোকটার নামে কোনো খতিয়ান নেই। জানা যায়, ৫ আগস্টের পর প্রথমে একটি পক্ষ ওই জায়গা দখল করেছিলেন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে তাঁদের তাড়িয়ে দেন। পরে সচ্চিদানন্দ সেন গুপ্তের পক্ষে হাইকোর্টের নোটিশ ওঠে ওই জায়গায়। তারা টিনের ঘেরার দিয়ে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করে। ২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকার পক্ষ আপিল করলে আদালত স্থগিতাদেশ দেন। এরপর জেলা প্রশাসন নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড তুলে দেন। বর্ণিত তফসিলভুক্ত জমি বন ও মন্ত্রণালয়ের ইসিএ (প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা) হিসেবে চিহ্নিত। ফলে উক্ত জমিতে অবৈধ অনুপ্রবেশসহ যেকোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, 'বিষয়টি আমার নজরে নেই। আমি খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।'জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, 'ও-ই জায়গায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে। এই আদেশ থাকা সত্বেও কিভাবে স্থাপনা নির্মাণ হবে। আমি খবর নিয়ে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে বলবো।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়