ইস্টারের দিনে, ৮৮ বছর বয়সে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান পোপ ফ্রান্সিস। শনিবার অনুষ্ঠিত হয় তাঁর শেষকৃত্যানুষ্ঠান, যেখানে ৫৪টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও ১২টি রাজপরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষের চোখের জল, ভক্তি আর শ্রদ্ধা নিয়ে শেষ বিদায় জানানো হলো পোপ ফ্রান্সিসকে। ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার’স চত্বরে জড়ো হয়েছিলেন লাখো লাখো শোকার্ত মানুষ। শনিবার (২৬ এপ্রিল) স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় শুরু হয় শেষ প্রার্থনাসভা। ব্যাসিলিকার বিশাল চত্বর ও মূল সড়কে বহু মানুষ এই আয়োজনে অংশ নেন বলে জানিয়েছে ভ্যাটিকান।
প্রায় ১,৩০০ বছরের মধ্যে প্রথম অ-ইউরোপীয় পোপ ফ্রান্সিসের বিদায়ে সৃষ্ট শোকের আবহ ছিল গভীর ও আবেগঘন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া, যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার স্ত্রী, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোসহ আরও অনেকে। এছাড়া ইতালি, ফিলিপিন্স, জার্মানি, আর্জেন্টিনা, পোল্যান্ড ও গ্যাবনের প্রেসিডেন্ট এবং যুক্তরাজ্য ও নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীসহ ইউরোপের বিভিন্ন রাজপরিবারের বহু সদস্য প্রার্থনায় অংশ নেন।
পোপ ফ্রান্সিসের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী, তাঁকে ভ্যাটিকানের অন্তর্গত সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার নিচে নয়, বরং রোম শহরে অবস্থিত ব্যাসিলিকা ডি সান্তা মারিয়া ম্যাগিওর-এ সমাধিস্থ করা হয়েছে। কয়েক শতাব্দীর প্রথা ভেঙে, এই সমাধি চেয়েছিলেন পোপ নিজেই। দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের পক্ষে সরব থাকা, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও অভিবাসী সুরক্ষায় সোচ্চার থাকা এই পোপ বিশ্বজুড়ে পেয়েছিলেন অকুন্ঠ সম্মান। জীবনের শেষ বার্তায় তিনি শান্তি, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার আহ্বান জানান। মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা আগে তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'এক্স'-এ পোস্ট করা শেষ বার্তায় পোপ লিখেছিলেন :"খ্রিষ্ট ফিরছেন! এই ঘোষণার মধ্যে আমাদের অস্তিত্বের সমস্ত অর্থ নিহিত রয়েছে - আমাদের জীবন মৃত্যুর জন্য নয়, জীবনের জন্যই।" পোপ ফ্রান্সিসকে সমাধিস্থ করার মধ্য দিয়ে শুরু হলো ৯ দিনের শোকপর্ব।
সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া