জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগাম হিল স্টেশনে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৬ জন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে বাইসারান ভ্যালিতে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। হামলার পর গোটা ভারত স্তব্ধ হয়ে যায়।
এদিকে পেহেলগামের বৈসারান তৃণভূমি- যেখানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সেখানে কোনো সাংবাদিককে যেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সাংবাদিক যোগিতা লিমায়ে।
বুধবার তিনি বৈসারান তৃণভূমিতে যাওয়ার জন্য রওনা দেন। কিন্তু পথের মাঝে তাদের আটকে দেওয়া হয়। তিনি বলেছেন, তারা এ মুহূর্তে ঘটনাস্থল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছেন।
এই সাংবাদিক জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলের কাছে যেতে না দেওয়ায় আহতদের যে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে সেখানেও তারা যেতে পারেননি।
সেখানে নিরাপত্তারক্ষীরা নিরাপত্তা বেষ্টনি পার হয়ে কোনো সাংবাদিককে পেহেলগামে যেতে দিচ্ছেন না। যদিও বেসামরিক মানুষের চলাচলে কোনো বাধা সৃষ্টি করা হয়নি।
তবে সাংবাদিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে কিছু সাংবাদিক গতকাল রাতে সেখানে চলে যেতে সমর্থ হন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিবিসি জানিয়েছে, কাশ্মীর সংঘাতপ্রবণ এলাকা হওয়ায় সেখানে সাংবাদিকতা করা আগে থেকেই কঠিন ছিল। এরপর পাঁচ বছর আগে যখন ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্বশাসন বাতিল করে কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয় তখন সাংবাদিকতা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। এ মুহূর্তে সেখান থেকে স্বাধীন সাংবাদিকতা করা বেশ কঠিন।
মঙ্গলবার কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর যে হামলা হয়েছে তার দায় এখন পর্যন্ত কেউ স্বীকার করেনি।
তবে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর উদ্ধৃতি দিয়ে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ বা টিআরএফ নামক একটি সশস্ত্র সংগঠন এর পেছনে থাকতে পারে। টিআরএফ পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইবা’র ছায়া সংগঠন হিসেবে পরিচিত।
ভারতের সংবিধানে কাশ্মীরকে বিশেষ স্বায়ত্বশাসিত এলাকার মর্যাদা দিয়েছিলো ৩৭০ ধারা। কিন্তু ২০১৯ সালে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার তা প্রত্যাহার করে।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, ওই ধারা বাতিলের পর থেকেই টিআরএফ অনলাইনে প্রোপাগান্ডা চালাতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে সক্রিয় ‘জঙ্গি’ সংগঠনে রূপ নেয়। ভারত সরকার ২০২৩ সালে এই সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।
ভারত সরকারের টিআরএফের বিরুদ্ধে অভিযোগ— টিআরএফ কাশ্মীরের তরুণদের জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করে, অনলাইনে উসকানিমূলক কনটেন্ট ছড়ায় এবং অস্ত্র চোরাচালানের সাথে জড়িত। সূত্র: বিবিসি