মুর্শিদাবাদে গত ১১ এবং ১২ এপ্রিল ওয়াকফ হিংসার জেরে যে কয়েকশ মানুষ মালদায় আশ্রয় নিয়েছিলেন তাদের সকলকেই নিজভূমে ফিরিয়ে আনা হয়েছে প্রশাসন ও শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ও বিধায়কদের সহযোগিতায়। তবে ঘরছাড়ারা ঘরে ফিরে এলেও তারা এখনও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
যদিও পরিস্থিতি ক্রমেই স্বাভাবিক হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা পুলিশ কর্মকর্তারা। আশ্রয় শিবিরে থাকাকালীন পালিয়ে আসাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন জাতীয় মহিলা কমিশন এবং রাজ্যপাল।
মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার এসপি আনন্দ রায় জানান, এখন পরিস্থিতি শান্ত। সবাই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। তিনি বলেন, ওয়াকফ নিয়ে বিক্ষোভের নামে যে হিংসা ও তাণ্ডবলীলা চলেছিল, তাতে ১৫৩টি মামলা দায়ের হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৯২ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় বিক্ষোভের জেরে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল ১১ এপ্রিল থেকে। এই হিংসার জেরে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কিশোর রয়েছে ।
এদিকে ১২ এপ্রিল সামশেরগঞ্জে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন স্থানীয়রা। এই আবহে ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী শান্তি ফেরানোর আর্জি জানিয়ে সম্প্রতি খোলা চিঠিতে শান্তি ও সম্প্রীতির আবেদন জানিয়েছেন। একই সঙ্গে এই অশান্তির ঘটনা নিয়ে বিজেপি এবং আরএসএস-কে একযোগে আক্রমণও করেছেন তিনি। মমতা লিখেছেন, রাজ্যে যে মিথ্যার প্রচার চলছে তার মূলে রয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ তথা আরএসএস। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, প্ররোচনার কারণে ঘটে যাওয়া দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাকে ব্যবহার করে বিভেদের রাজনীতির খেলা খেলতে চাইছে বিজেপি এবং আরএসএস।
মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, ‘‘দয়া করে ধীর এবং শান্ত থাকুন।’’ তিনি আরও জানান, সাম্প্রদায়িক অশান্তি রোখা হবেই। এই অশান্তির নেপথ্যে যারা রয়েছে, তাদের কড়া হাতে দমন করা হবে বলেও জানান মমতা। একই সঙ্গে রাজ্যের সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে একে অপরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করার আহ্বানও জানান মুখ্যমন্ত্রী।