শিরোনাম
◈ যে যাই বলুক জুনের পরে নির্বাচন যাবে না: আইন উপদেষ্টা (ভিডিও) ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় আমরা সন্তুষ্ট নই, ডিসেম্বর কাট অফ টাইম: মির্জা ফখরুল (ভিডিও) ◈ আবারও চীনের ওপর শুল্ক বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ◈ দেশের ৩৫ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযান চলছে ◈ ২ হাজার কোটি টাকা খরচ বেড়েছে ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে: বাণিজ্য উপদেষ্টা ◈ থাইল্যান্ড ভ্রমণে বাধ্যতামূলক হচ্ছে ডিজিটাল অ্যারাইভাল কার্ড ◈ বিচার বিভাগের জন্য দ্রুতই পৃথক সচিবালয়: প্রধান বিচারপতি ◈ জিত‌লো অ্যাস্টন ভিলা, সেমিফাইনালে গে‌লে্া পিএসজি ◈ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২৫ জেলায় আম পৌঁছে দেবে ডাক বিভাগের ‘স্পিডপোস্ট’ ◈ কারিগরি শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবিতে সাতরাস্তা মোড় অবরোধ

প্রকাশিত : ১৫ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:১৩ দুপুর
আপডেট : ১৬ এপ্রিল, ২০২৫, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বিলিয়ন ডলার অনুদান স্থগিত করেছেন ট্রাম্প

ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ দমনে হোয়াইট হাউসের শর্ত পূরণে অস্বীকৃতি জানানোয় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ ২ দশমিক ২ বিলিয়ন (২২০ কোটি) ডলারের ফেডারেল তহবিল স্থগিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইসরায়েল তথা ইহুদি সম্প্রদায়ের বিরোধিতা মোকাবিলায় করণীয় কী হবে তা উল্লেখ করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে একটি নথি পাঠানো হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা ব্যবস্থা, নিয়োগনীতি এবং ভর্তি প্রক্রিয়ায় পরিবর্তনের দাবি জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়কে এমন নোটিশ দেওয়ার পক্ষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাফাই—মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে ইহুদিবিদ্বেষের হাওয়া বইছে, তা থেকে ইহুদি শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

হোয়াইট হাউস তাদের দাবিপত্রে অভিযোগ করেছে, হার্ভার্ড সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বুদ্ধিবৃত্তিক ও নাগরিক অধিকার সমুন্নত রাখতে ব্যর্থ হয়েছে, যা ফেডারেল অর্থায়নের যৌক্তিকতাকে সংকুচিত করে। এমন পরিস্থিতিতে ফেডারেল তহবিল ধরে রাখতে হার্ভার্ডকে ১০ ধরনের শর্ত মেনে নিতে হবে বলে দাবিপত্রটিতে উল্লেখ করা হয়। প্রস্তাবিত শর্তগুলো হলো—মার্কিন মূল্যবোধের বিরুদ্ধে শত্রুতাপূর্ণ মনোভাব পোষণ করে এমন শিক্ষার্থীদের ফেডারেল সরকারের কাছে রিপোর্ট করতে হবে, প্রতিটি বিভাগে মতবৈচিত্র্য নিশ্চিত করতে হবে। এমনকি ‘ইহুদিবিরোধী হয়রানি’র জন্য দায়ী বিভাগগুলোর নিরীক্ষার জন্য সরকার অনুমোদিত বাহ্যিক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের শর্ত দেওয়া হয়েছে!

এ ছাড়া, গত দুই বছরে ক্যাম্পাসটিতে চলমান বিক্ষোভে যারা নিয়ম ভেঙেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই দাবিপত্রে। পাশাপাশি ডাইভার্সিটি, ইকুইটি ও ইনক্লুশনের (ডিইআই) সব নীতি ও কর্মসূচি বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।

তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের দেওয়া সব শর্ত স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ট্রাম্প প্রশাসন সীমা অতিক্রম করছে উল্লেখ করছে বলে অভিযোগ তোলে তারা। তাদের আরও অভিযোগ, স্বতন্ত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা নিয়ন্ত্রণ করে তাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে ট্রাম্প প্রশাসন। প্রশাসনের চাপের বিরুদ্ধে এবারই প্রথম এমন সাহসী প্রতিবাদ জানাল দেশটির কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার এক চিঠিতে জানান, গত শুক্রবার হোয়াইট হাউস বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি হালনাগাদ ও সম্প্রসারিত দাবিপত্র পাঠিয়েছে এবং সতর্ক করেছে, প্রশাসনের তহবিল পেতে হলে দাবিপত্রে উল্লেখিত সব দাবি ও শর্ত মানতে হবে। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় আইনি পরামর্শকের মাধ্যমে প্রশাসনকে জানিয়েছে, হার্ভার্ড তাদের শর্তগুলো মেনে নেবে না। বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকার ধরে রাখবে। ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা বিশ্ববিদ্যালয় হালকাভাবে নেয় না। তবে, এ নিয়ে সরকার যেসব দাবি করেছে, তা সীমা ছাড়িয়ে গেছে।’

গতকাল সোমবার গারবারের এই চিঠি প্রকাশের কিছুক্ষণ পরই বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য বরাদ্দকৃত ২২০ কোটি ডলারের অনুদান বন্ধের ঘোষণা দেয় মার্কিন শিক্ষা বিভাগ। একই সঙ্গে স্থগিত করা হয় ৬০ মিলিয়ন (৬ কোটি) ডলারের আরও একটি চুক্তিও।

এ ঘটনার পর ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ। তাদের অভিযোগ—বাক্‌স্বাধীনতা ও শিক্ষার স্বাধীনতার ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের এমন আক্রমণ বেআইনি।

গাজা যুদ্ধ নিয়ে এর আগেও ফেডারেল প্রশাসনের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ায় হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মার্কিন কংগ্রেসে এ-সংক্রান্ত এক শুনানিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ক্লডিন গে বলেন, ‘ইহুদিদের হত্যার আহ্বান জানানো নিঃসন্দেহে জঘন্য, তবে সেটি কোড অব কনডাক্ট ভঙ্গ করেছে কি না, তা নির্ভর করবে প্রেক্ষাপটের ওপর।’ ওই সময় এ নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। পরে, ব্যাপক সমালোচনার মুখে এক মাস পর পদত্যাগ করেন তিনি।

এর আগে গত মাসে হার্ভার্ডের ২৫৬ মিলিয়ন (২৫ দশমিক ৬ কোটি) ডলারের ফেডারেল চুক্তি ও অনুদান পর্যালোচনা করছে বলে জানায় ট্রাম্পের প্রশাসন। এর সঙ্গে রয়েছে আরও ৮ দশমিক ৭ বিলিয়ন (৮৭০ কোটি) ডলারের দীর্ঘমেয়াদি অনুদান চুক্তিও।

এর আগে একই ধরনের অভিযোগ এনে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০০ মিলিয়ন (৪০ লাখ) ডলারের অনুদান বন্ধ করে দেয় মার্কিন প্রশাসন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়