পার্সটুডে- দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমসের একটি নিবন্ধের শিরোনাম- "একটি যুগের সমাপ্তি: বিশ্ব বাণিজ্যের কী হবে?" এই নিবন্ধে বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলো পর্যালোচনা এবং এই ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির ভূমিকা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
পার্সটুডে'র মতে, ট্রাম্প প্রশাসন, অন্যান্য দেশের জন্য আমেরিকান বাজারের আকর্ষণের উপর জোর দিয়ে দাবি করেছেন বিশ্বের এখনও আমেরিকাকে প্রয়োজন এবং স্বচ্ছ এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ বাণিজ্য নীতি ছাড়াই দেশটি শীর্ষস্থানীয় অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে থাকবে। এই প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছে, ট্রাম্পের সাথে কথা বলতে এবং আমেরিকান বাজারে প্রবেশাধিকার পেতে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা ওয়াশিংটনে আসছেন।
যদিও গত নভেম্বরের নির্বাচনের পর থেকে এশিয়া থেকে ইউরোপ এবং দক্ষিণ আমেরিকার ব্যবসায়ী নেতারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরতা থেকে দূরে থাকতে তাদের অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করার চেষ্টা করছেন, যা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য ব্যবস্থায় পরিবর্তনের ইঙ্গিত বলে মনে হচ্ছে। ২রা এপ্রিল ট্রাম্প তার ট্যারিফ প্যাকেজ ঘোষণা করার পর থেকে এই প্রবণতা আরও তীব্র হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রীরা গত বৃহস্পতিবার জরুরি আলোচনা করেছেন এবং তারা বিভিন্ন অঞ্চলের দেশগুলোর বাণিজ্যিক অংশীদারদের সাথে আলোচনা জোরদার করেছেন।
ব্যবসা বিষয়ক বিশ্লেষক ও অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অদূর ভবিষ্যতেই বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি বড় কাঠামোগত পরিবর্তন দেখা যাবে। বিশ্বের অনেক দেশ বিশ্বায়নকে শক্তিশালী করতে এবং বাণিজ্য সম্পর্ককে বৈচিত্র্যময় করতে চাইছে, অন্যদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্রমেই তা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে।
তবে বাণিজ্য পদ্ধতি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা অব্যাহত রয়েছে। সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, চীন থেকে আমদানির উপর ট্রাম্পের উচ্চ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত অন্যান্য বাজারে সস্তা চীনা পণ্যের ব্যাপক প্রবেশ ঘটতে পারে এবং তা বাণিজ্য প্রতিযোগিতা জটিল করে তুলতে পারে।
বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে। বিশ্বের অন্য যেকোনো স্থানের তুলনায় বাণিজ্য চুক্তির বিস্তৃত নেটওয়ার্কের অধিকারী এই জোট আমেরিকার বাজারের উপর নির্ভরতা কমাতে বিভিন্ন দেশের সাথে আলোচনা শুরু করেছে।