শিরোনাম
◈ মাসে অতিরিক্ত ২৫০ মিলিয়ন ডলার গুনতে হবে মার্কিন শুল্ক থাকলে  ◈ ভারতের সঙ্গে কাশ্মীর নিয়ে দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ বাংলাদেশের কাছে তুলল পাকিস্তান ◈ মেরে না ফেলা পর্যন্ত ভারত, ‘র’ আর আ.লীগের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত থাকবে: হাসনাত আবদুল্লাহ ◈ ‘চীন সরকারের হাসপাতাল নীলফামারীতে হবে’ ◈ বাংলাদেশ ভ্রমণে মার্কিন নাগরিকদের জন্য সতর্কতা ◈ বাসাবাড়িতে নতুন গ্যাস সংযোগ নিয়ে তিতাসের সতর্কবার্তা ◈ দেশের বাজারে আবার বাড়লো স্বর্ণের দাম, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ◈ প্রশাসন কার পক্ষে,পাল্টাপাল্টি অভিযোগে এনসিপি - বিএনপি ◈ প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের বেতনস্কেলের প্রস্তাব বাস্তবায়নে কাজ চলছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা ◈ জাতীয় সংসদের আসন ৬০০ করার সুপারিশ নারী সংস্কার কমিশনের

প্রকাশিত : ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:২৮ দুপুর
আপডেট : ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মৃতদের তালিকায় জীবিত অভিবাসীদের নাম ঢুকিয়ে বিতাড়নে বাধ্য করছে ট্রাম্প প্রশাসন: নিউইয়র্ক টাইমস প্রতিবেদন

যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভিবাসীদের বিতাড়নে বেশ তৎপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। আর এই কারণে অভিবাসীদের “স্বেচ্ছা নির্বাসনে” বাধ্য করতে সামাজিক সুরক্ষা নম্বর বা এসএসএন বাতিলের পথে হাঁটছে ট্রাম্প প্রশাসন।

এর ফলে এই ধরনের ব্যক্তিরা আর এসএসএন ব্যবহার করতে পারবেন না। মূলত মৃতদের তালিকায় জীবিত অভিবাসীদের নাম ঢুকিয়ে এই কৌশল বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে ট্রাম্প প্রশাসন।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত হাজার হাজার অভিবাসীর অস্থায়ী বৈধ অবস্থান বাতিল করতে আগ্রাসী পদক্ষেপ নিয়েছে তার প্রশাসন। মূলত এই পদক্ষেপের ফলে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন যারা পূর্বে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনামলে দেশটিতে আইনি বৈধতা পেয়েছিলেন।

নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, অভিবাসীদের বিতাড়েনর এখন ট্রাম্প প্রশাসন আরও কঠোর এক কৌশল নিয়েছে। আর তা হচ্ছে: অভিবাসীদের “স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফিরে যেতে” চাপ দেওয়ার জন্য তাদের বৈধভাবে প্রাপ্ত সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর (এসএসএন) কার্যত বাতিল করা হচ্ছে। দ্য নিউইয়র্ক টাইমস এর হাতে আসা নথি ও সংশ্লিষ্ট ছয়জন কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে এই তথ্য।

এই পদক্ষেপের লক্ষ্য বেশ স্পষ্ট। আর তা হলো: ওই অভিবাসীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক পরিষেবা ও সরকারি সুবিধাগুলো পাওয়া থেকে বাইরে ঠেলে দেওয়া।

তবে সবচেয়ে অবাক করার মতো বিষয় হলো— এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হচ্ছে “ডেথ মাস্টার ফাইল” নামের একটি ডেটাবেস, যেটি সাধারণত মৃতদের তালিকা সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়, যেন তারা যেন আর কোনও সরকারি সুবিধা না পান। এখন সেই তালিকায় জীবিত অভিবাসীদের নাম যুক্ত করা হচ্ছে— মূলত সরকার যাদের “আইনি দিক থেকে মৃত হিসেবে বিবেচনা” করতে চায়।

এর ফলে এই ব্যক্তিরা আর এসএসএন ব্যবহার করতে পারবেন না। যুক্তরাষ্ট্রে পরিচয় নিশ্চিতকরণ, চাকরি, ব্যাংক লেনদেন, ট্যাক্স রিটার্ন এমনকি চিকিৎসা সেবা গ্রহণের জন্য এসএসএন হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আইডি।

নথি অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহেই ৬ হাজার ৩০০ অভিবাসীর নাম “মৃতদের” এই ডেটাবেসে যোগ করা হয়েছে। আর এর ফলে এরা সবাই সম্প্রতি তাদের বৈধ অবস্থান হারিয়েছেন।

প্রথম ধাপে এই তালিকায় যাদের নাম রয়েছে, তারা “অপরাধে দোষী সাব্যস্ত” এবং “সন্ত্রাসের সন্দেহভাজন”—এমনটাই বলছে প্রশাসন। তবে কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভবিষ্যতে এই তালিকা আরও বিস্তৃত হতে পারে এবং যেকোনও “অননুমোদিত অভিবাসী” এতে যুক্ত হতে পারেন।

এই পদক্ষেপ ইতোমধ্যে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। সমালোচকেরা বলছেন, এইভাবে জীবিত মানুষকে “মৃত” ঘোষণা করা এবং তাদের পরিচয় বাতিল করে দেওয়া শুধুই আইনি নয়, নৈতিক দিক থেকেও অগ্রহণযোগ্য। এতে তারা সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে একেবারে প্রান্তিক হয়ে পড়বেন এবং দেশে থাকার বাস্তবতা আর সম্ভব হবে না—ফলে বাধ্য হয়ে নিজ দেশেই ফিরে যেতে হবে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি যে এই “ডেথ মাস্টার ফাইল”-এ নাম অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে কোনও আইনি প্রতিকার থাকছে কি না।

নিউইয়র্ক টাইমস কলছে, এই নীতি ট্রাম্পের “কঠোর অভিবাসন” দর্শনেরই সম্প্রসারণ, যেখানে সীমান্ত নিরাপত্তা, “অবৈধ অভিবাসন” হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্রে “শুদ্ধ নাগরিকত্ব” রক্ষা করা মূল উদ্দেশ্য হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

তবে সমালোচকেরা বলছেন, এই পদক্ষেপ বাস্তবে কেবল মানবিক সংকটকেই গভীর করবে— বিশেষত তাদের জন্য যারা দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন সমাজে অবদান রেখে এসেছেন, কর প্রদান করেছেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিলেন। সূত্র: ঢাকাপোস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়