ইউক্রেনে রাশিয়ার হয়ে দেড় শতাধিক চীনা নাগরিক যুদ্ধ করছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে তার দাবি, ইউক্রেনে লড়াইরত চীনা নাগরিকদের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর হয়ে ১৫৫ জন চীনা নাগরিকের লড়াইয়ের তথ্য রয়েছে এবং প্রকৃত সংখ্যাটি আরও অনেক বেশি হতে পারে।
জেলেনস্কি বুধবার কিয়েভে সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়া সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে চীনা নাগরিকদের নিয়োগ করছে এবং চীনা কর্মকর্তারা এই প্রচেষ্টা সম্পর্কে অবগত। তিনি আরও বলেন, নিয়োগপ্রাপ্তরা বেইজিং থেকে নির্দেশনা পাচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে ইউক্রেন।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, “‘চীনা’ ইস্যুটি গুরুতর। ইউক্রেনের ভূখণ্ডে ইউক্রেনীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ১৫৫ জন ব্যক্তি, যাদের নাম এবং পাসপোর্টের তথ্য রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি যে— তাদের মধ্যে আরও অনেক লোক রয়েছেন।”
এর আগে জেলেনস্কি গত মঙ্গলবার বলেন, ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর হয়ে লড়াইরত দুই চীনা নাগরিককে আটক করেছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। যুদ্ধে চীনা যোদ্ধাদের সম্পর্কে ইউক্রেন এই প্রথম এমন কোনও দাবি করেছে।
এরপর বুধবার জেলেনস্কি বলেন, তিনি রাশিয়ায় বন্দি ইউক্রেনীয় সৈন্যদের জন্য ওই দুই যুদ্ধবন্দি বিনিময় করতে ইচ্ছুক।
এ বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অনেক চীনা নাগরিক ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে এমন ইঙ্গিত “একেবারে ভিত্তিহীন”।
বেইজিং কিয়েভের সাথে প্রাসঙ্গিক তথ্য যাচাই করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “চীনা সরকার সর্বদা তার নাগরিকদের সশস্ত্র সংঘাতের এলাকা থেকে দূরে থাকতে এবং যেকোনও ধরণের সশস্ত্র সংঘাতে জড়িত হওয়া এড়াতে বলেছে।”
রাশিয়া এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। শুরু থেকেই চীন এখন পর্যন্ত রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে নিজেকে নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করে এসেছে এবং পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে সেটির নিন্দাও জানায়নি বেইজিং।
এমনকি রাশিয়ার আগ্রাসনকে ‘আক্রমণ’ বলা থেকেও বিরত রয়েছে চীন। বেইজিং বলছে, তারা যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোর মতো কোনও পক্ষকেই প্রাণঘাতী সহায়তা পাঠাচ্ছে না।
কিন্তু ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কো তার প্রতিবেশীর ওপর পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে বেইজিং রাশিয়ার প্রতি জোরালো কূটনৈতিক সমর্থন প্রদান করেছে এবং জ্বালানি ও ভোগ্যপণ্যের বাণিজ্যের মাধ্যমে মস্কোকে অর্থনৈতিক ভাবে সচল থাকতে সহায়তা করেছে। সূত্র: ঢাকাপোস্ট