কুয়েত সরকারের জনশক্তি বিষয়ক কর্তৃপক্ষ একটি স্বয়ংক্রিয় যাচাই ব্যবস্থা চালু করেছে, যার মাধ্যমে অভিবাসী, উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) দেশগুলোর নাগরিক এবং বিডোন (রাষ্ট্রহীন) কর্মীদের ওয়ার্ক পারমিট বা কর্মসংস্থানের অনুমতির জন্য আবেদনের সময় তাদের একাডেমিক সনদ যাচাই করা হবে।
নতুন এই পদ্ধতির মূল লক্ষ্য হচ্ছে জাল সনদ ব্যবহার বন্ধ করা এবং দেশটির শ্রমবাজারকে আরও সুশৃঙ্খল ও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলা। কুয়েতের জনশক্তি কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মারজুক আল ওতাইবি এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এই স্বয়ংক্রিয় যাচাই ব্যবস্থায় তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হবে—প্রথমত, আবেদনকারীর ডিগ্রির ধরন; দ্বিতীয়ত, তার পাঠ্যবিষয় বা বিশেষায়িত ক্ষেত্র; এবং তৃতীয়ত, সংশ্লিষ্ট ডিগ্রিটি কুয়েতের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মান অনুযায়ী স্বীকৃত কি না। যাচাই ছাড়া এখন থেকে কোনো কর্মসংস্থানের অনুমতি দেওয়া হবে না।
গত কয়েক মাসে একাধিক অভিবাসীর কাছ থেকে ভুয়া একাডেমিক সনদ জমা পড়ার ঘটনা সামনে আসায় কুয়েত সরকার এ ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এ ধরনের জালিয়াতি শুধু শ্রমবাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করে না, বরং জনসুরক্ষা এবং রাষ্ট্রের মর্যাদাকেও ক্ষুণ্ণ করে।
ওয়ার্ক পারমিটের জন্য এই যাচাই প্রক্রিয়া ‘আশাল’ পোর্টাল এবং ‘সাহেল বিজনেস’ নামক একটি ডিজিটাল অ্যাপের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যাবে। এর ফলে আবেদন প্রক্রিয়া যেমন আরও স্বচ্ছ হবে, তেমনি সময় ও শ্রমও সাশ্রয় হবে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে কুয়েত সরকার তার শ্রমবাজারে উচ্চমান ও যোগ্যতার নিশ্চয়তা বিধান করতে চায়, বিশেষ করে বিদেশি কর্মীদের ক্ষেত্রে। নতুন এই ব্যবস্থা কেবল জাল সনদ রোধেই নয়, বরং বিদেশি কর্মীদের মধ্যেও সততা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, এর আগে কুয়েত সরকার জিসিসি দেশগুলোর প্রবাসীদের জন্য একটি নতুন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সহজে ভিসা আবেদন করার সুযোগ চালু করে। এতে করে কুয়েত সফর ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে জিসিসিভুক্ত দেশের নাগরিকদের জন্য প্রক্রিয়াটি আরও সহজ হয়েছে।
সব মিলিয়ে, কুয়েত সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপ দেশটির প্রশাসনিক সংস্কার, অভিবাসন নীতি এবং শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।