টিউলিপ দাবি করেছেন, ২০০২ সালে তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে উপহার হিসেবে ফ্ল্যাটটি পেয়েছিলেন তিনি এবং ২০১৫ সালের মে মাসে সংসদে নির্বাচিত হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এটি ’আইনসম্মত ও বৈধভাবে’ তার বোন আজমিনাকে হস্তান্তর করেন।
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে ও ব্রিটিশ নগরমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের কাছে ‘মিথ্যাচার’ করার অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে ছয় লাখ পাউন্ড সমমূল্যের ফ্ল্যাটটি বাংলাদেশ সরকার জব্দ করেছে। দুদক তার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে।
শনিবার (৫ এপ্রিল) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশে নিজের নামে থাকা ফ্ল্যাট নিয়ে মূলত এমন কাজ করেছেন তিনি।
৪২ বছর বয়সী টিউলিপ দাবি করেছেন তিনি কোনো অন্যায় করেননি। তিনি ডেইলি মেইলকে বলেছেন, ২০০২ সালে তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে উপহার হিসেবে ফ্ল্যাটটি পেয়েছিলেন তিনি এবং ২০১৫ সালের মে মাসে সংসদে নির্বাচিত হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এটি ’আইনসম্মত ও বৈধভাবে’ তার বোন আজমিনাকে হস্তান্তর করেন।
যুক্তরাজ্যে ওয়েস্টমিনস্টারের রেজিস্টারে এমপিদের সম্পর্কে থাকা তথ্য আছে অনুযায়ী, ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত এই ফ্ল্যাটে পরিবারের সদস্যের সাথে টিউলিপের যৌথ মালিকানাধীন ছিল। এর পরের মাসে তিনি এটি হস্তান্তর করে দেন।
তবে ডেইলি মেইল গত সপ্তাহে ঢাকা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছে, টিউলিপ এখনো সেই ফ্ল্যাটটির মালিক। যেমনটা দুদক দাবি করছে। বাংলাদেশের আদালত এখন সিদ্ধান্ত নেবে ফ্ল্যাটটির মালিক কে।
গত মাসে দুদক বলেছে, টিউলিপ ২০১৫ সালে হেবা ব্যবহার করে ফ্ল্যাটের মালিকানা আজমিনার কাছে ’হস্তান্তর’ করার চেষ্টা করেছিলেন। হেবা একটি ইসলামিক দলিল। হেবার মাধ্যমে পরিবারের এক সদস্য অন্য সদস্যের কাছে ‘ভালোবাসার’ খাতিরে কোনো কিছু দান করতে পারেন।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের আইন অনুসারে, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে মালিকানা পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত সম্পত্তি হস্তান্তর বৈধ বলে বিবেচিত হয় না।
দুদক দাবি করেছে, টিউলিপের হেবা করার বিষয়টিও ‘ভুয়া’। যে ব্যারিস্টারের মাধ্যমে এটি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে তিনি এ বিষয়ে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে অভিযোগ করেছেন, তার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে।